অন্যান্য

ডিজিটাল মার্কেটিং কি? ডিজিটাল মার্কেটিং কেন করবেন?

ডিজিটাল মার্কেটিং কি, এটি যদি আপনি না জেনে থাকেন তবে আপনি ডিজিটাল এই যুগে অনেকটাই পিছিয়ে আছেন। কেননা,বর্তমান প্রজন্ম ডিজিটাল প্রজন্ম। ডিজিটাল এই প্রজন্মের স্মার্ট মানুষেরা সর্বক্ষেত্রে ডিজিটাল ডিভাইস ও টেকনোলজিকে কাজে লাগিয়ে নিজের স্বার্থ্য হাসিল করছে। প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই ডিজিটাল ডিভাইস ও টেকনোলজিকে কাজে লাগিয়ে প্রত্যেকটি কাজকে মানুষ সহজ ও সময় সাপেক্ষ করে তুলছে। আর যেটি থেমে থাকিনি ব্যবসার মার্কেটিং এর ক্ষেত্রেও। মার্কেটিং এর ক্ষেত্রেও মানুষ ডিজিটাল প্রযুক্তিকে ব্যবহার করছে। যার ফলে মার্কেটিং সেক্টরে এসেছে এক নতুন গতি পথ। একেই ডিজিটাল মার্কেটিং বলা হয়। আজকের আর্টিকেলে আমরা ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে বিস্তারিত জানব। আর কথা না বাড়িয়ে চলুন শুরু করা যাক।

ডিজিটাল মার্কেটিং কি?

মার্কেটিং কি, মার্কেটিং বলতে কি বোঝায় তা হয়ত আমরা সকলেই কমবেশী জানি। কোন পণ্য, সেবা, বা ব্যবসাকে বিভিন্ন ধরনের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে অথবা যেকোন উপায়ে মানুষের কাছে পৌছে দেওয়াকেই মার্কেটিং বলে। আর, আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইন্টারনেটের মাধ্যমে কোন পণ্য, সেবা বা ব্যবসাকে বিশ্ব ব্যাপি পৌছে দেওয়াকে ডিজিটাল মার্কেটিং বলে। অর্থাৎ, মার্কেটিং করার জন্য যখন ডিজিটাল টেকনোলজির সাহায্য নেওয়া হয় তখন তাকে ডিজিটাল মার্কেটিং বলা হয়। এক কথায়, ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় মার্কেটিং এর সম্পূর্ণ ব্যবস্থাই ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের মধ্যে পড়ে।

ডিজিটাল মার্কেটিং কেন করবেন?

ব্যবসার ক্ষেত্রে মার্কেটিং এর গুরুত্ব কতটা সেটা বলতে গেলে একটি সম্পূর্ণ আর্টিকেল লেগে যাবে তবুও বলে শেষ হবে না। এক কথায় বলা যায়, বিক্রি বৃদ্ধির জন্য পণ্য বা সার্ভিসের প্রচারণা করে নিজের ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ায় মার্কেটিংয়ের মূল লক্ষ্য। এই প্রচার-প্রচারনার কাজ নানান ভাবেই করা যায়। আমরা যদি সুদূর অতীতের কথা ভাবি তবে দেখব যে, একদল ফেরিওয়ালা পণ্য প্রচারের জন্য মানুষের বাড়ি বাড়ি যেত। এটি ছিল সেই সময়ের জন্য সম্পূর্ণ যথাযথ মার্কেটিং সিস্টেম। কিন্তু বাইশের দশকে এসে যদি আমরা এটি করার কথা ভাবি তবে কেমন হবে? এই সময় যদি আপনি ফেরিওয়ালাদের দিয়ে আপনার মার্কেটিং সিস্টেম চালাতে চান তবে কি ব্যাপারটা সেকেলে হয়ে গেল না? তাছাড়াও একবার চিন্তা করে দেখুন তো ডিজিটাল এই যুগে যদি আপনি আদিকালের সেই মার্কেটিং সিস্টেমকে আপন করে নিতে চান তাহলে আপনার ব্যবসা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে?

এবার আশা যাক ট্রেডিশনাল মার্কেটিং সিস্টেমের দিকে। যেখানে সম্পূর্ণ প্রচার-প্রচারনার কাজ চালানো হয় বোর্ডকাষ্ট, নিউজপেপার, ম্যাগাজিন ও টেলিভিশন ইত্যাদিতে বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে। যাতে আপনাকে খরচ করতে হবে লক্ষ লক্ষ টাকা। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি টেলিভিশনে একটি বিজ্ঞাপন দিতে চান তবে আপনাকে স্বরণ করে দিই বিজ্ঞাপন তৈরি করা থেকে শুরু করে টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন প্রচার করার আগ পর্যন্ত প্রায় ৫-৭ লক্ষ টাকার মতো আপনার খরচ হবে। আবার আপনি যদি কোন সেলিব্রেটিকে দিয়ে টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন দিতে চান তবে শুধু সেই মডেলকেই সর্বনিম্ন ১৫-২০ লক্ষ টাকা দিতে হবে। এর বেশীও হতে পারে, সেটা তাদের চাহিদা অনুযায়ী। এছাড়াও যে চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দেখাবেন তারা তো তাদের চাহিদা মতো নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ নেবেই।

এখন বলুন, একজন নতুন ব্যবসায়ী বা একজন নতুন উদ্যোক্তার পক্ষে কি শুধু মার্কেটিং এর জন্য এতো অর্থ ব্যয় করা সম্ভব? আপনিই যদি একটা ছোট খাটো বা নতুন ব্যবসা শুরু করেন তবে কি আপনার পক্ষে এতো বিশাল পরিমানের অর্থ শুধু একটা এ্যাডভেটাইসমেন্টের জন্য ব্যয় করা যুক্তি সংগত? আচ্ছা ধরলাম আপনি নতুন ব্যবসায়ী নন, আর আপনি কোন ছোট-খাটো ব্যবসাও করেন না। মাঝারি আকৃতির ব্যবসার জন্যও কি এত পরিমান অর্থ বিজ্ঞাপনের জন্য ব্যয় করা সম্ভব? নিশ্চয়ই না। তাহলে কেমন করে এই প্রাচার-প্রচারনার কাজটি আপনি সম্পাদন করবেন? আপনি কি আপনার ব্যবসার প্রচার করবেন না? প্রচার-প্রচারনার কাজ না করলে আপনার ব্যবসায় উন্নতিই কেমন করে আসবে আর ব্যবসায় আগ্রগতিই বা কেমন করে আসবে? এক্ষেত্রে তাহলে কি করা যায়?

এমন অবস্থাতেই আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে ডিজিটাল মার্কেটিং সিস্টেম। যা স্বল্প সময়ে স্বল্প খরচে অধিক পরিসরে ব্যবসার প্রচার কাজ করে থাকে। মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে এই ডিজিটাল মার্কেটিং ব্যাপক ভূমিকা রাখে। ডিজিটাল মার্কেটিং সিস্টেমে আপনি শুধু মাত্র ৫ ডলার থেকে শুরু করে আপনার পছন্দ মতো বাজেটে কোটি কোটি টাকা পর্যন্ত বিজ্ঞাপন বা মার্কেটিং-এ খরচ করতে পারবেন। তাছাড়াও ঘরে বসেই মার্কেটিং করা যায় বলে অনেকেই এই মার্কেটিং কে আপন করে নিয়েছে। এই মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে আরো একটি বড় সুবিধা হলো এটি নির্দিষ্ট এলাকায় নির্দিষ্ট কাস্টমারদেরকে টার্গেট করে মার্কেটিং করা যায়। যাতে করে কম খরচে টার্গেট করা কাস্টমারদের কেন্দ্র করে মার্কেটিং করা সম্ভব হয়। যা শুধু ডিজিটাল মার্কেটিং এর ক্ষেত্রেই সম্ভব। আপনি যদি এত কিছু জানার পরেও বলেন ডিজিটাল মার্কেটিং করে আর কি কি সুবিধা হবে তবে নিচের অংশ পড়ুন।

স্বল্প পরিসরে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সুবিধাসমূহ

  • ডিজিটাল মার্কেটিং করতে খরচ কম হয় বলে, ছোট-মাঝারি-বড় সর্বস্ত্রের ব্যবসায়ীরাই নিস্বন্দেহে এই মার্কেটিংকে আপন করে নিতে পারে।
  • পণ্যের বিজ্ঞাপন স্বল্প সময়ে কাস্টমারের দোড় গোড়ায় পৌছে দেওয়া যায়।
  • শুধু মাত্র একটি কম্পিউটার থাকলেই বাড়িতে বসেই মার্কেটিং করা যায়।
  • নির্দিষ্ট এলাকার নির্দিষ্ট কাস্টমারদের টার্গেট করে পন্যের বিপণন বা মার্কেটিং করা যায়।
  • কাস্টমারের চাহিদা অনুযায়ী যে যেই পন্য পছন্দ করে তাঁর কাছে সেই পন্যের বিজ্ঞাপন চলে যায়।
  • বাড়িতে বসেই যেহেতু ডিজিটাল টেকনোলজির মাধ্যমে মার্কেটিং করা যায় তাই কাস্টমারের কাছে যেতে হয় না।
  • বাড়িতে বসেই অনলাইন অর্ডার পাওয়া যায় বিধায় খুব সহজেই পণ্য বিক্রয় করা সম্ভব হয়।
  • মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে ডিজিটাল মার্কেটিং-ই হলো সবচাইতে সহজ উপায়।

ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার

পেশা হিসেবে ডিজিটাল মার্কেটিংকে পছন্দ করা বা বেছে নেওয়া একজন স্মার্ট মানুষে লক্ষন। কেননা, বর্তমান সময় উপযোগী একটি বিভাগ হলো ডিজিটাল মার্কেটিং। যেখান শুধু একটি কম্পিউটার আর ইন্টারনেট সংযোগের প্রয়োজন, ব্যাস। তারপর চাইলে বাড়িতে বসেও এই কাজ করা যাবে। এছাড়াও ডিজিটাল মার্কেটিং এর উপর দুই ভাবে ক্যারিয়ার গড়ে তোলার সুযোগ রয়েছে। যথা, চাকরি ও ফ্রিল্যান্সিং। কেউ চাইলে একাধারে দুটো এক সাথেও করতে পারবে। যদি তার যথেষ্ট পরিমান সময় ও ধৈর্য্য থাকে। যদি কেউ ডিজিটাল মার্কেটিং সেক্টরে চাকরি করতে চায় তবে জুনিয়র ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ থেকে শুরু করে কয়েকটি ধাপ পার করে মার্কেটিং ডিরেক্টরের পোস্ট পর্যন্ত পৌছাতে পারবে। যা একটি হায়ার লেভেলের সুনিশ্চিত ক্যারিয়ার তৈরি করবে। আর যদি কেউ ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে ফ্রিল্যান্সিং করতে চায় তবেও অনেক সুবিধা পাবে। সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে সময়-সুযোগ ও ইচ্ছানুযায়ি কাজ বাছাই করতে পারবে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এই প্লাটফর্মে অভিজ্ঞতা না থাকলে শুরুতে কাজ পাওয়া খুবই কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।

ডিজিটাল মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবেন?

ডিজিটাল মার্কেটিং হোক অথবা যেকোন কাজই হোক আপনার যদি সেই কাজের প্রতি ভালোবাসা না থাকে তবে আপনি কখনই সেই কাজে ভালো ফলাফল করতে পারবেন না। তাই বিস্তারিত জানার পরে নিশ্চিত হোন যে আপনার কি ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রতি আগ্রহ আছে কিনা? তারপর ডিজিটাল মার্কেটিং সেক্টর নিয়ে কাজ করার কথা ভাবুন। আর আপনি যদি নিশ্চিত হয়ে থাকেন তবে আপনার জন্য পরবর্তী অংশ। প্রত্যেকটি কাজ শুরু করার আগে যেমন ওই কাজ সম্পর্কে ব্যাসিক ধারনা নিতে হয়, ঠিক তেমনি ডিজিটাল মার্কেটিং শুরু করার আগেও আপনাকে ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে ভালোভাবে সঠিক ধারনা নিতে হবে। ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রাথমিক বিষয়গুলো না জেনে আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং সেক্টরে কাজ করতে চান তবে এটি শুরুতেই আপনার ব্যর্থ হওয়ার চান্স অনেকটাই বাড়িয়ে দেবে। তাই আপনার সুবিধার জন্য নিচে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ৮ টি বিশেষ ক্ষেত্র সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সবগুলো সেক্টরে একবারে দক্ষতা অর্জন করতে যাবেন না। আপনি প্রথমে আপনার ইচ্ছা মতো যেকোন ২-৩ টি বিষয়ে আগে দক্ষতা অর্জন করুন এর পর বাকি সেক্টর গুলোতে জ্ঞান আরহন করতে পারেন। শিখতে তো আর কোন সমস্যা নেই!

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্র সমূহ

ডিজিটাল মার্কেটিং এর অনেক গুলো ক্ষেত্র রয়েছে। আপনাকে শুধু আপনার পণ্য, সার্ভিস বা ব্যবসার সাথে সামঞ্জস্য এমন ক্ষেত্র বাছাই করতে হবে ব্যাস। তো চলুন ক্ষেত্র গুলো জেনে নিই।

১.সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন

SEO শব্দের পূর্ণরূপ হলো সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন। একটি ওয়েব সাইটে ট্রাফিক বা ভিজিটর বাড়ানোর জন্যই মূলত সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন তথা SEO করা হয়। কোন সার্চ ইঞ্জিনে যদি একটি ওয়েবসাইটের SEO ঠিকঠাক ভাবে করা হয় তবে সেই ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিন প্রথমে দেখিয়ে থাকে। বুঝতে পারলেন না, তাই তো? ধরুন আপনি যেকোন সার্চ ইঞ্জিনে (গুগল, ইয়াহু, বিং ইত্যাদি) যেকোন কিছু লিখে সার্চ করলেন। তখন আপনি দেখতে পারবেন কিছু সংখ্যক ওয়েবসাইট সার্চ ইঞ্জিন প্রথম দিকে দেখাচ্ছে। বা প্রথম পেজে দেখাচ্ছে। এক্ষেত্রে যে ওয়েব সাইট গুলো সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পেজে দেখায় বুঝতে হবে সেই সাইটের SEO খুব ভালো ভাবে করা হয়েছে। আর যে সাইট গুলো প্রথম পেজেরও প্রথম সারিতে দেখায় বুঝতে হবে সেগুলোর SEO আরো পাকা-পোক্ত ভাবে করা হয়েছে। এখন হয়তো বুঝতে পেরেছেন SEO বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন কি বা এটি কেন করা হয়। বর্তমান সময়ে ডিজিটাল মার্কেটিং সেক্টরে SEO এক্সপার্টদের ব্যাপক ডিমান্ড। কেননা, শুধু একজন SEO এক্সপার্টই পারে কোন ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের শীর্ষ স্থানে পৌছে দিতে।

২.সোসাল মিডিয়া মার্কেটিং

ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, লিংডীন, পিন্টারেস্ট, ইত্যাদিকে বলা হয় সোসাল মিডিয়া। আর এসব সোসাল মিডিয়াতে মার্কেটিং করাকে বলা হয় সোসাল মিডিয়া মার্কেটিং। ইদানিং সোসাল মিডিয়া মার্কেটিং, ডিজিটাল মার্কেটিং সেক্টরের সবচাইতে বড় মার্কেটপ্লেস রূপ নিয়েছে। কারন, 3.9 বিলিয়নেরও বেশি মানুষ এখন সোসাল মিডিয়া ব্যবহার করে। আর আমাদের দেশে শুধু ফেসবুক ব্যবহারকারির সংখ্যা প্রায় 43 মিলিয়নের কাছাকাছি। তাই আমাদের দেশে ফেসবুক মার্কেটিং অনেক জনপ্রিয় একটি মার্কেট প্লেস। যেকোন সোসাল মিডিয়া মার্কেটিং দুই ধরনের হয়ে থাকে। যথা, ফ্রি মার্কেটিং ও পেইড মার্কেটিং। ফ্রি মার্কেটীং এর ক্ষেত্র একটি পেইজ খুলে বা কোন গ্রুপে বিনা মূল্যে মার্কেটিং করা যায়। আর পেইড মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে বিভিন্ন মার্কেটারদের অর্থের বিনিময়ে হায়ার করে মার্কেটিং করানো হয়। আবার, সোসাল মিডিয়ায় ডলার পে করেও মার্কেটিং করা যায়। পেইড হোক বা ফ্রি উভয়ই অনেক জনপ্রিয়।

৩.ইউটিউব মার্কেটিং

এখন সকলেই প্রায় কমবেশী ইউটিউব ভিডিও দেখে। এজন্য মার্কেটিং এর জন্য ইউটিউব খুবই জনপ্রিয় একটি মাধ্যম হয়ে দারিয়েছে। আপনাকেই যদি প্রশ্ন করা হয়, আপনি ইউটিউবে বেশী সময় দেন নাকি টেলিভিশনে? উত্তরটা অবশ্যই ইউটিউবই হবে। কেননা, এখন ইউটিবে প্রায় সব ধরনের ভিডিওই পাওয়া। স্ট্যাডি রিলেটেড ভিডিও থেকে শুরু করে ইন্টারটেন্টমেন্ট সব কিছুর ভিডিওই বর্তমানে ইউটিউবে পাওয়া যায়। তাই ইউটিউব ভিডিওর মাধ্যমে মার্কেটিং করাটা কতটা গুরুত্বপুর্ণ তা বুঝতেই পারছেন। ইউটিউবে দুই ভাবে মার্কেটিং করা হয়ে থাকে। একটি প্রডাক্ট রিভিউ ও অন্যটি গুগল অ্যাডওয়ার্ডসের মাধ্যমে অ্যাডভেটাইসমেন্ট।

৪.গুগল অ্যাডওয়ার্ডস

আপনি হয়তো বিভিন্ন ওয়েবসাইটের ব্লগ পোস্টে অথবা, কোন ইউটিউব ভিডিওর শুরুতে মাঝে বা শেষে কোন বিজ্ঞাপন দেখেছেন। এই বিজ্ঞাপন গুলোর বেশীর ভাগই গুগল অ্যাডওয়ার্ডসের। মূলত  কোন প্রডাক্ট বা সার্ভিসের বিজ্ঞাপন প্রচার করার জন্য গুগলকে কিছু পরিমান অর্থ দিলেই গুগল নির্দিষ্ট কিওয়ার্ডস টার্গেট করে সেই প্রডাক্ট বা সার্ভিসের বিজ্ঞাপন প্রচার করে থাকে। আর এর জন্য গুগলকে বিজ্ঞাপনের ক্লিক বা ভিউের উপর নির্ভর করে টাকা পরিশোধ করতে হয়। এই ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচারের ক্ষেত্রে গুগল অ্যাডওয়ার্ডসই সবচেয়ে বেশী জনপ্রিয়।

৫.কন্টেন্ট মার্কেটিং

কন্টন্ট হলো সাধারন মানুষের বোধগম্য কোন তথ্য বা উপাত্তের লিখিত, ছবি, অডিও বা ভিডিও ইত্যাদি। এটি এমন মনকাড়া সুন্দর্য দিয়ে তৈরি করে ডিজিটাল মাধ্যমে প্রকাশ করা হয় যাতে সহজেই কোন মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। বিভিন্ন ধরনের পণ্যের বিজ্ঞাপন এখন এই কন্টেন্টের মাধ্যমে প্রচার করা হয়ে থাকে। কোন পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য ব্লগিং, ছবি, অডিও বা ভিডিও ইত্যাদি অনলাইনের মাধ্যমে প্রকাশ করাকে কন্টন্ট মার্কেটিং বলা হয়।

৬.মোবাইল অ্যাপস মার্কেটিং

টেকনোলজির যুগে স্মার্টফোন ব্যবহার করে না এমন মানুষ খুজে পাওয়া খুব কঠিন। সবার হাতে হাতে এখন স্মার্টফোন। আর এই স্মার্টফোনে যেই অ্যাপস ব্যবহার করা হয় তাতে বিজ্ঞাপন প্রচার করাকে বলা হয় মোবাইল অ্যাপস মার্কেটিং। আমরা সচরাচর স্মার্ট ফোনে অ্যাপস ইন্সটল করার জন্য গুগল প্লেস্টোর বা অ্যাপল অ্যাপস স্টোর ব্যবহার করি। এই অ্যাপসে যে কোন প্রডাক্ট বা সার্ভিস অথবা যেকোন কিছুর প্রমোট করার জন্য মাঝে মাঝে বিজ্ঞাপন দেখানো হয় তা মোবাইল অ্যাপস মার্কেটিং এর মধ্যে পরে। গুগলকে কিছু নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ পরিশোধ করে গুগল মুবের মাধ্যমেও মোবাইল অ্যাপস মার্কেটিং করা যায়।

৭.ইমেইল মার্কেটিং

ইমেইলের মাধ্যমে কোন কিছুর বিজ্ঞাপন প্রচার করাকে ইমেইল মার্কেটিং বলা হয়। ইমেইল মার্কেটিং এর জন্য যাদের কাছে বিজ্ঞাপন পৌছাতে ইচ্ছুক তাদের ইমেইল অ্যাড্রেস সংগ্রহ করতে হয়। ইমেইল মার্কেটিং এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে নির্দিষ্ট বয়সের বা নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষকে টার্গেট করে তাদের চাহিদার উপর ভিত্তি করে বিজ্ঞাপন প্রচার বা মার্কেটিং করা যায়। আবার, পণ্যের লিংক ইমেইলের সাথে সংযুক্ত করে দিলে, যদি উক্ত কাস্টমারের পছন্দ হয় তবে সেখান থেকেই সে ক্রয় করতে পারে। আর সেখানেই মার্কেটিং এর মাধ্যমে বিক্রয় করা যায়। আর যার ফলে মার্কেটিং করা সফল হয়।

৮.অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ডিজিটাল মার্কেটিং এর এমন একটি সেক্টর যেখানে অন্যের প্রডাক্টকে প্রমোট করা হয়। অর্থাৎ, নিজের প্রোডাক্টকে প্রমোট না করে অন্যের প্রডাক্ট নিজের ওয়েব সাইটে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রমোট করাই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর অন্তর্ভুক্ত। সেক্ষেত্রে উক্ত প্রডাক্ট যদি সেল হয় তবে সেখান থেকে কিছু পরিমান অর্থ কমিশন আকারে মার্কেটারকে দেওয়া হয়। এভাবেই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে একজন মার্কেটার আয় করে থাকে।

ডিজিটাল মার্কেটিং যে ব্যবসাকে কিভাবে সমৃদ্ধ করে তোলে তা হয়তো বুঝতে আর বাকি নেই। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে বৃহৎ আকৃতির ব্যবসায়ীরা পর্যন্ত সর্বস্তরের ব্যবসায়ী এখন ডিজিটাল মার্কেটিং এর দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এর প্রধান কারন হলো ডিজিটাল মার্কেটিং এর ব্যাপক সুবিধা ও সামান্য পরিমান কিছু অসুবিধা। এমন কি শুধু ব্যবসায়ীরাই না শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে কর্মজীবি সকলেই এই সেক্টরে তাদের ক্যারিয়ার গড়তে ইচ্ছাপোষন করছে। কারন সুদুর ভবিষ্যতে ডিজিটাল মার্কেটিং হবে একটি প্রতিষ্ঠিত একটি পেশা। আশা করি ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে আপনাকে কিঞ্চিত পরিমান হলেও ধরনা দিতে পেড়েছি। আজ আর কথা না বাড়ায়। আপনার যদি প্রযুক্তি বিষয়ক কোন কিছু সম্পর্কে প্রশ্ন থাকে বা কিছু জানার আগ্রহ হয় তবে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট সেকশনে জানাবেন। প্রযুক্তির ভাষা কর্তৃক আপনার প্রশ্নের যথা সম্ভব উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। ধন্যবাদ এতক্ষন আমাদের সাথে থাকার জন্য এবং আপনার মূল্যবান সময় দিয়ে মনোযোগ সহকারে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য।

Related Articles

One Comment

  1. অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর করে উপস্থাপনা করার জন্য। আপনার ব্লগটিতে এরম আর উৎকৃষ্ট মানের পোস্ট পাব এই আশা করলাম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!