কন্টেন্ট মার্কেটিং কি? কেন কন্টেন্ট মার্কেটিং করবেন?
কাস্টমারের কাছে রিচ করার সবথেকে কার্যকরী মাধ্যম হচ্ছে কন্টেন্ট। ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ Content Marketing। কন্টেন্ট তৈরির মাধ্যমে পণ্য বা সেবার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হয়। এটি ডিজিটাল মার্কেটিং এর অনেক বড় একটি জায়গা জুড়ে আছে। Content Marketing এর মাধ্যমে পণ্য বা পরিষেবা কে যত সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হবে ক্রেতারা তত বেশি পণ্যের প্রতি আকৃষ্ট হবে এবং পণ্যটি কিনবে।
কন্টেন্ট মার্কেটিং কি?
কন্টেন্ট বলতে বুঝায় লেখা, ছবি, ভিডিও, ইনফোগ্রাফিক, পডকাস্ট ইত্যাদি। মার্কেটিং বলতে বুঝায় কোন পণ্য বা পরিষেবা মানুষের কাছে প্রচার করা। আর কন্টেন্ট মার্কেটিং হলো সূক্ষ পরিকল্পনা ও সৃজনশীলতার মাধ্যমে একটি বিষয়বস্তু বা কন্টেন্ট তৈরি করে তা টার্গেট কাস্টমারদের কাছে প্রমোশন করা।
Content Marketing কেন করবেন?
Content Marketing এর মূল লক্ষ্য হলো পণ্য বা সেবা সম্পর্কে গ্রাহককে জানানো। গ্রাহক এই বিজ্ঞাপন দেখে পণ্যের প্রতি আকৃষ্ট হবে। কন্টেন্ট মার্কেটিং এর মাধ্যমে ভোক্তাদের কোন পন্যের প্রতি আকৃষ্ট করে নেওয়া যায় খুব সহজে। বর্তমানে Content Marketing এর বিশেষ জনপ্রিয়তা গড়ে উঠেছে। নিচে Content Marketing এর প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করা হলো-
১। আপনার পণ্য বা সেবা সম্পর্কে কাস্টমারদের জানাতে কন্টেন্ট বিপণন বা মার্কেটিং অপরিহার্য ভুমিকা পালন করে।
২। কাস্টমাদের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করতে আকর্ষণীয় কন্টেন্টের বিকল্প নেই।
৩। কাস্টমারদের বিভিন্ন সমস্যা, কিভাবে আপনার প্রোডাক্ট সমাধান করতে পারে, তা বুঝাতে Content Marketing অত্যাবশ্যক।
৪। আপনার ব্যান্ড ভ্যলু বাড়াতে এবং আনুগত্যশীল কাস্টমার তৈরি করতে প্রয়োজন ভালো মানের কন্টেন্ট ।
৫। বিজ্ঞাপন, ইমেইল মার্কেটিং, ফেসবুক বুস্ট, ইউটিউব ভিডিও সবকিছুতেই প্রয়োজন আকর্ষণীয় ও গ্রহণযোগ্য কন্টেন্ট।
৬। একটি ভালো কন্টেন্ট অডিয়েন্সকে ভিজিটর থেকে কাস্টমারে রূপান্তর করতে পারে।
আরও পড়ুন-সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি?
কন্টেন্ট কত প্রকার?
কনটেন্ট প্রধানত পাঁচ ধরনের হয়ে থাকে। যেমনঃ
১। ব্লগ পোস্ট/ আর্টিকেল
ব্লগিং মূলত এমন একটি মাধ্যম, যার মাধ্যমে সমসাময়িক বিষয়সমূহ খুব সহজে গ্রাহকদের সামনে তুলে ধরা যায়। ব্লগিং হতে হবে ইনফরমেটিভ। কন্টেন্ট মার্কেটিংকে ছড়িয়ে দেওয়ার অন্যতম একটি মাধ্যম হল ব্লগিং। ব্লগিংয়ের মাধ্যমে মানুষ স্বাধীনচেতা হিসেবে, যেকোনো বিষয়ের উপর মন খুলে লিখতে পারে।
২। ভিডিও কন্টেন্ট
Content Marketing এর ক্ষেত্রে অন্যতম একটি ধাপ হল ভিডিও কন্টেন্ট। একটি তথ্যকে গ্রাহকদের সামনে ভিডিও আকারে উপস্থাপন করাকে ভিডিও কন্টেন্ট মার্কেটিং বলে। সময়ের সাথে সাথে গ্রাহকদের নিকট ভিডিও মার্কেটিং বেশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। মূলত, ইউটিউব ও সোশ্যাল মিডিয়াকে কেন্দ্র করে এই ধারণা গড়ে উঠেছে।
৩। পডকাস্ট
অডিওর মাধ্যমে গ্রাহকদের নিকট কন্টেন্ট পৌঁছে দেওয়ার প্রক্রিয়াকে পডকাস্ট কন্টেন্ট মার্কেটিং বলে। মূলত এক লক্ষের অধিক পডকাস্ট গ্রাহকদের জন্য সেবা প্রদান করে থাকে। বর্তমানে ব্যস্ততার জন্য মানুষের বড় কোন টপিক কিংবা কন্টেন্ট পড়ে না। এর সমাধান পডকাস্ট। বর্তমানে পডকাস্ট এর জনপ্রিয়তা বেড়েছে।
৪। ইমেইল
ইমেইল, কন্টেন্ট মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য ধাপ। আপনার লিখিত কন্টেন্টকে গ্রাহকদের তথ্যের উপর ভিত্তি করে, ইমেইলের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হলো ইমেইল মার্কেটিং। ইমেইলের মাধ্যমে আপনার প্রেরিত কন্টেন্ট গ্রাহকদের কাছে পৌঁছাবে। এতে তাদের আপনার প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে আগ্রহ জন্মাবে।
৫। ইনফোগ্রাফিক্স
ইনফোগ্রাফিক্স কেবলমাত্র শব্দের চেয়ে ডেটা আরও চিত্র জোরালো ভাবে ভিজ্যুয়ালাইজ করতে পারে। ট্যাবল, চার্ট, গ্রাফ ইত্যাদি হলো ইনফগ্রাফিক্সের উদাহরণ। অডিয়েন্সকে সংক্ষেপে পুরো বিষয়বস্তু বুঝাতে ইনফোগ্রাফিক্সের বিকল্প নেই।
কিভাবে পারফেক্ট কন্টেন্ট তৈরি করা যায়?
একটি পারফেক্ট কন্টেন্ট তৈরি করা চ্যালেঞ্জিং কাজ। এটি নির্ভর করে টার্গেটেড অডিয়েন্স, মার্কেট এবং লক্ষ্যের উপর। তবে, কিছু পয়েন্ট অনুসরণ করে পারফেক্ট কনটেন্ট তৈরি করা যাবে সহজেই। যা অডিয়েন্সকে আকর্ষণ করবে এবং লক্ষ্য অর্জনে সাহায্য করবে। সেগুলো হলো-
১। অডিয়েন্সঃ
আপনি কন্টেন্ট এর মাধ্যমে যাদের কাছে পৌঁছাতে চাচ্ছেন তাদেরকে অডিয়েন্স বলে। অডিয়েন্স এর আগ্রহ এবং তাদের প্রশ্নগুলো কী নিয়ে তা স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করুন। যদি সেই আগ্রহ বা প্রশ্নগুলো আমরা কভার করতে পারি তাহলেই অডিয়েন্স ইন্টারেকশন বেশী কাজ করে।
২। উদ্দেশ্যঃ
কন্টেন্ট টি কেন তৈরি করছেন? কন্টেন্ট এর মাধ্যমে অডিয়েন্সদের কী বোঝাতে চাচ্ছেন? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে হবে। উদ্দেশ্য তখনই সফল হয় যখন আমরা এক বা একাধিক নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের জন্য কন্টেন্ট তৈরি করি। এবং এর মাধ্যমে অডিয়েন্স উপকৃত হয়ে থাকে। তাই সর্বপ্রথম উদ্দেশ্য নিয়ে আপনার দিক থেকে পরিষ্কার ধারণা থাকতে হবে।
৩। ইনফর্মেশনঃ
ইনফর্মেশন হলো সেই সকল তথ্য যা আপনি অডিয়েন্স কে জানাতে চাচ্ছেন। পণ্য বা পরিষেবা সম্পর্কে সকল ইনফর্মেশন ভাল ভাবে জানাতে হবে। যা আপনার উদ্দেশ্যকে সফল করবে।
৪। আকর্ষণীয় শিরোনামঃ
শিরোনামকে আকর্ষণীয় করতে হবে। শিরোনাম হবে স্পষ্ট, সংক্ষিপ্ত এবং আকর্ষণীয়। লক্ষ্য রাখতে হবে যেন শিরোনামে মূল বিষয়বস্তু স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকে।
৫। স্পষ্ট এবং সহজবোধ্যঃ
কন্টেন্ট এ ভাষা সহজবোধ্য এবং সরল হওয়া উচিত। এতে করে পাঠক সহজেই পড়তে পারবে, আগ্রহ হারাবে না। জটিল শব্দ এবং বাক্য গঠন এড়িয়ে চলতে হবে।
৬। SEO:
কন্টেন্টে প্রাসঙ্গিক কীওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে। আপনার কন্টেন্টকে সার্চ ইঞ্জিনের জন্য অপ্টিমাইজ করুন।
৭। কন্টেন্ট আপডেট করাঃ
নিয়মিত নতুন কন্টেন্ট যুক্ত করতে হবে এবং পুরানো কন্টেন্ট আপডেট করতে হবে।
পরিশেষে
ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ Content Marketing। এর মাধ্যমে সহজে রিচ করা যায়। এই ব্লগে Content Marketing নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এ বিষয়ে আরও কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করুন।