শিক্ষা

ইমেইল মার্কেটিং কি? Email Marketing কিভাবে করবেন?

তথ্য প্রযুক্তির অগ্রগতির এই যুগে স্মার্ট ফোন ইউজারের সংখ্যা বহুগুণ বেড়েছে। আর স্মার্ট ফোন ইউজের জন্য প্রয়োজন ইমেইল একাউন্ট। ফোনের অ্যাপস ইন্সটল থেকে শুরু করে বেশ কিছু অ্যাপস ইউজ করতেও ইমেইল প্রয়োজন। দিন দিন ইমেইলের প্রসারতা বেড়েই চলেছে। সাথে বেড়েছে ইমেইল মার্কেটিং এর জনপ্রিয়তা। অন্যান্য ডিজিটাল মার্কেটিং পদ্ধতি গুলোর মধ্যে ইমেইল মার্কেটিং সবচেয়ে সহজ ও সাশ্রয়ী। এই ব্লগে Email Marketing নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

ইমেইল মার্কেটিং কি?

মার্কেটিং হলো কোনো পণ্য বা সেবা প্রোমোশনের জন্য প্রচার প্রচারণা চালানোর প্রক্রিয়া। আর ইমেইল মার্কেটিং হলো ইমেইল এর মাধ্যমে কোনো প্রডাক্ট এর প্রচার প্রচারণা প্রক্রিয়া। একটি ইমেইল দ্বারা নিজের প্রোডাক্ট, বিজনেস বা সেবার বিষয়ে হাজার হাজার মানুষের কাছে একসাথেই প্রচার করা যায়। এই প্রক্রিয়াকে ইমেইল ব্রডকাস্টিং ও বলা হয়।

ইমেইলের ধরণ

ইমেইল কয়েক রকমের হয়ে থাকে। ইমেইল মার্কেটিং সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেতে এর প্রকারভেদ আগে জানতে হবে। উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হল-

১। স্প্যাম ইমেইল 

স্প্যাম হলো সেই সকল অনাকাঙ্ক্ষিত ইমেইল যা ব্যবহারকারীর অনুমতি ব্যতীত পাঠানো হয়। এর উদ্দেশ্য থাকে বানিজ্যিক বিজ্ঞাপনের প্রচার। স্প্যাম ইমেইল থাকে স্প্যাম ফোল্ডারে। কোনো ইমেইল স্প্যাম ফোল্ডারে যাওয়ার বেশ কিছু কারন আছে। সেগুলো হলো- একাধিক ইমেজ পাঠানো, ফ্রি, অফার এই ওয়ার্ডগুলো সাবজেক্ট এ ইউজ করা, অ্যাফিলিয়েট লিংক পাঠানো, ব্লক লিস্ট আইপি ব্যবহার করা ইত্যাদি।

২। বাউন্স ইমেইল

ইমেইল রিজেক্ট হওয়াকে বাউন্স ইমেইল বলে। ইমেইল নানা কারণে বাউন্স হতে পারে। যেমনঃ প্রভাইডার এর সার্ভার ডাউন হলে, ইমেইল ইনভ্যালিড ইত্যাদি। বাউন্স ২ প্রকার। হার্ড বাউন্স এবং সফট বাউন্স।

৩। Email টেম্পলেট

কোনো প্রডাক্ট এর প্রোমোশনের জন্য যে বিজ্ঞাপন ডিজাইন করে ইমেইল এ সেন্ড করা হয় সেটাই টেম্পলেট। এই ইমেইলে ওয়েবসাইটের লিংক ও এ্যাড করা যায়।

৪। Email সাবজেক্ট 

একটা আননোন ইমেইল এর সাবজেক্ট দেখেই সাধারণত সেটাকে ওপেন করা হয়। তাই প্রমোশনাল ম্যাসেজ টি হতে হবে তথ্যবহুল এবং স্ট্যান্ডার্ড।

৫। Email ক্যাম্পেইন

যখন একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের জন্য ইমেইল টার্গেটেড কাস্টোমারদের পাঠানো হয়, তাকে ইমেইল ক্যাম্পেইন বলে। ইমেইল ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে মেইলগুলো পারসোনালাইজড করা যায়। অর্থাৎ, প্রত্যেক ব্যক্তির নাম উল্ল্যেখ করে মেইল করা যায়। 

আরও পড়ুন-ইউটিউব ভিডিও মার্কেটিং কি? কেন ও কিভাবে করবেন?

Email Marketing কেন করবেন?

ইমেইল মার্কেটিং করার বেশ কিছু কারণ রয়েছে। নিম্নে কিছু কারণ উল্লেখ করা হল- 

১। ইমেইল মার্কেটিং করে গড়ে ১ ডলার খরচ করে ৪২ ডলার লাভ করা সম্ভব।

২। মাঝারি ব্যবসায়ীরা ইমেইল ব্যবহার করে ৮০% সময় কাস্টমারদের ধরে রাখে।

৩। নতুন কাস্টমারকে স্বাগত জানানো ওয়েলকাম ইমেইলের অপেন রেট ৮০%।

৪। ইমেইলের মাধ্যমে রি-মার্কেটিং করে ৬৯% সফলতা লাভ করা সম্ভব হয়েছে।

ইমেইল মার্কেটিং কিভাবে করবেন?

প্রক্রিয়াটি সহজে বুঝার জন্য ধাপ হিসেবে দেওয়া হলোঃ

১। নিজের একটি বিজিনেস ইমেইল আইডি থাকতে হবে।

২। কিছু ফ্রি ইমেইল মার্কেটিং টুলস বা ওয়েবসাইটে রেজিস্টার করতে হবে।

৩। ফ্রি বা পেইড মাধ্যমে ইমেইল লিস্ট তৈরি করতে হবে।

৪। ইমেইল মার্কেটিং টুল ব্যবহার করে ইমেইল লিস্টে থাকা সাবস্ক্রাইবার বা ইমেইল কন্টাক্ট গুলোকে ইমেইল পাঠিয়ে নিজের পণ্য, ব্লগ, অফার বা বিজনেসের মার্কেটিং করা যাবে।

Email List তৈরি

ইমেইল লিস্ট ২ ভাবে তৈরির করা যায়। ১) ফ্রি মেইল লিস্ট, ২) পেইড মেইল লিস্ট।

ফ্রি ইমেইল লিস্ট

ফ্রি মেইল লিস্ট তৈরির কয়েকটি উপায় আছে। চাইলে ম্যানুয়ালি লিস্ট করতে পারবেন। আবার নিজের ব্লগ বা ওয়েবসাইট দ্বারাও লিস্ট করতে পারবেন। ব্লগ বা ওয়েবসাইট থাকলে তাতে ব্লগ সাবস্ক্রিপশন বা নিউজ লেটার অপশনের মাধ্যমে ইউজারদের লিস্টে যোগ হওয়ার জন্য বলতে পারেন। ইমেইল লিস্টে নিজেকে যোগ করলেই তারা সব রকমের ব্লগের আর্টিকেল বা ব্লগ পোস্ট ইমেইলের মাধ্যমে পাবেন। এভাবেই সব কোম্পানি নিজের একটি ওয়েবসাইট বা ব্লগের দ্বারা নিউজ লেটারের মাধ্যমে হাজার হাজার লোকের ইমেইল সংগ্রহ করেন। তারপর তাদের নিজের প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের ব্যাপারে যখন খুশি তখন ইমেইল এর মাধ্যমে প্রচার করেন।

পেইড ইমেইল লিস্ট

পেইড ইমেইল মার্কেটিং বলতে বুঝায় টাকা দিয়ে ইমেইল মার্কেটিং করানো। পেইড ইমেইল মার্কেটিং এ কিছু ওয়েবসাইট বা অনলাইন টুলের থেকে হাজার হাজার ইমেইল কন্টাক্ট কেনা যায়। কিছু টাকা খরচ করেই আপনি অনেক লোকেদের ইমেইল আইডি কিনতে পারবেন। একবার ইমেইল আইডি কেনার পর ইমেইল মার্কেটিং টুল গুলর ব্যবহার করে ইমেইল মার্কেটিং করতে পারবেন।

ইমেইল মার্কেটিং এর সুবিধা

ইমেইল মার্কেটিং এর সুবিধা সমূহ নিচে উল্লেখ করা হল-

১। সবচেয়ে বেশি নতুন কাস্টমার ইন্টারনেটের মাধ্যমে পাওয়া যায়।

২। ব্লগ এবং ওয়েবসাইটের জন্য হাজার হাজার ভিজিটর বা ট্রাফিক আনতে পারে।

৩। কোনো বিজ্ঞাপনের ফি, মুদ্রণ বা মিডিয়া স্পেস ব্যয় নেই।

৪। কেবল একটি ইমেইল পাঠিয়েই যেকোনো নতুন ভিডিও, ব্লগ আর্টিকে, প্রোডাক্ট বা বিজিনেস সম্পর্কে ঘরে বসেই লোকেদের জানানো যায়।

৫। কিছু ফ্রি ইমেইল মার্কেটিং টুল ব্যবহার করে ফ্রীতেই ব্যবহার করা যায়।

৬। ইমেইল মার্কেটিং অনেক সোজা এবং এর থেকে লাভ অনেক বেশি।

৭। ইমেইল ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে মেইলগুলো পারসোনালাইজড করা যায়। অর্থাৎ, প্রত্যেক ব্যক্তির নাম উল্ল্যেখ করে মেইল করা যায়। সাধারণ মেইলের চেয়ে পারসোনালাইজড মেইলের ওপেন রেট অনেক বেশি।

পরিশেষে

গ্রাহকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগের জন্য Email Marketing এর কোন বিকল্প নেই। অন্যান্য ডিজিটাল মার্কেটিং পদ্ধতিগুলোর মধ্যে Email Marketing সবচেয়ে সহজ ও সময় সাশ্রয়ী। আশা করি ইমেইল মার্কেটিং নিয়ে পূর্ণ ধারণা পেয়েছেন। এরপরেও কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করুন।

এছাড়াও ডিজিটাল মার্কেটিং বিষয়ে যেকোন প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন ফেইসবুক পেইজ Digital Crop অথবা www.digital-crop.com আমাদের ওয়েব সাইটে। আমরা আপনার বিজনেস কে ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে কাস্টমারদের কাছে পৌঁছে দেব।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!