প্রযুক্তির খবর

ব্লকচেইন কি?

বর্তমান সময়ে অনলাইনে লেনদেন ব্যবস্থাপনায় বিপ্লব ঘটানো বিটকয়েন টেকনোলজির পর্দার আড়ালে যে প্রযুক্তি কাজ করছে সেটিই হলো ব্লকচেইন। আজ আমরা জানার চেষ্টা করব এই প্রযুক্তির বিশেষ কিছু বিষয়।
ব্লকচেইন হল মূলত এক ধরণের শক্তি যা বিটকয়েন গুলোকে গতিশীল করে, বিটকয়েনের মধ্যে স্থানান্তরকে সহজ করে এবং এর সবরকম লেনদেন রেকর্ড করে রাখে। গঠনগতভাবে ইহা কার্যকাল ও কার্যপ্রকৃতির তথ্য সমন্বিত তথ্যভান্ডার এবং তথ্য পরিবর্তনরোধী কৌশল।এটা হলো একটি উন্মুক্ত বিভাজিত তথ্যভান্ডার যা যাচাইযোগ্য ও নির্ভরযোগ্য প্রক্রিয়ায় সম্পাদিত কাজের রেকর্ড করতে পারে । একটি বিভাজিত তথ্যভান্ডার হিসেবে ব্যবহারকল্পে,একটি ব্লকচেইন প্রকৃতিগতভাবে পিয়ার-টু-পিয়ার নেটওয়ার্ক সংগঠনের মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা করা হয় যা একটি প্রক্রিয়ার সাথে যুক্ত হয় নতুন ব্লক যাচাইকরনের জন্য।
তবে এখানে আপনার একটি সংশয় থাকতে পারে – যেমন কেউ তো তাহলে ১০০ টাকা পাঠিয়ে ১০০০ টাকা পাঠিয়েছে বলতে পারে। এই জন্যই লেনদেনের পুরো সিস্টেমটিকে যাচাই বা ভেরিফাই করতে হয় আর এই ভেরিফিকশনের কাজটি যারা করে থাকেন তাদেরকে আমরা মাইনার (Miner) বলে থাকি।

সংক্ষেপে ব্লকচেইন —

ব্লকচেইন = ব্লক + চেইন
এই সিস্টেমে প্রতিটি ব্লক এক একটি একাউন্ট যার প্রতিটি লেনদেন ব্যবস্থাপনা চেইন আকারে পরিচালিত হয়। প্রত্যেকটি ব্লক হ্যাশিং (Hashing) এর মাধ্যমে উচ্চ মানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে যার ফলে কেউই এখানে হস্তক্ষেপ করতে পারে না।

ব্লকচেইন সিস্টেমের সুবিধা

থার্ড পার্টির ঝামেলা থেকে মুক্তি — 

উপরের উদাহরণ গুলোর দিকে লক্ষ্য করলে বুঝতে পারবেন ব্লকচেইন লেনদেন ব্যবস্থাপনায় কোন রকম তৃতীয় পক্ষের প্রয়োজন পরে না ফলে আপনি পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে লেনদেন করতে পারছেন কোন ঝামেলা ছাড়াই। যা নরমাল ব্যাংকিং সিস্টেমে খুবই ঝামেলাপূর্ণ।

নিরপত্তা — 

PayPal লেনদেন সিস্টেমের কথা চিন্তা করুন এখান থেকে যেকোন সময় পাঠানো টাকা বা ব্যবহারকারীর ডেটা গুলো চুরি হতে পারে কিন্তু ব্লকচেইন সিস্টেমে আইডেন্টিটি হিডেন থাকা ও প্রতিনিয়ত ডেটা গুলো আপডেট হওয়ার ফলে এখানে চুরি কিংবা দূর্নীতির আওতায় আশা একেবারেই অসম্ভব।

দূর্নীতি দূরীকরণে

 বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সরকারি লেনদেন ব্যবস্থাপনায় যদি এটি ব্যবহার করা হয় তাহলে ভাবুন তো সরকারী লেনদেন ব্যবস্থাপনায় দূর্নীতির হার কতটা কমবে।

ব্লকচেইনের ভবিষ্যৎ!

ক্রিপ্টোকারেন্সির জনপ্রিয়তা যেভাবে বেড়ে চলছে, তাই আর বেশীদিন নেই যেদিন থেকে ব্যাংক ব্লকচেইন সিস্টেম ব্যবহার করা শুরু করবে। ব্লকচেইনের সক্ষমতা ইতিমধ্যে প্রমাণিত তাই অদূর ভবিষ্যতে সরকারও এটি ব্যবহার করা শুরু করবে। বৃহত্তর আমেরিকান স্টক এক্সচেঞ্জ ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান NASDAQ ব্লকচেইন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছে।

অসংখ্য স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান নিত্য নতুন আইডিয়া নিয়ে ব্লকচেইন প্রযুক্তিতে প্রবেশ করছে যেমন, একটি প্রতিষ্ঠান ব্লকচেইন থেকে ডেটা ব্যবহার করে অপরাধ ট্র্যাক করতে পারে এমন সেবা দিতে যাচ্ছে। ব্লকচেইন প্রযুক্তি এখনো প্রাথমিক ধাপে রয়েছে তাই এই বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি নিয়ে প্রচুর কাজ চলছে যার ফলে মার্কেটে এর পরিচিতি দিন দিন ব্যাপক হারে বাড়ছে।  বিটকয়েন যেভাবে বর্তমান অর্থনীতিতে ব্যাপক ভাবে সাড়া ফেলেছে। আশাকরি, খুব শীগ্রই ব্লকচেইন প্রযুক্তিও এমন কিছু উপহার দিতে যাচ্ছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!