YouTube SEO কি? YouTube SEO এর টিপস & ট্রিকস
YouTube SEO বলতে সহজ কথায় যেটি আপনার ভিডিও টপ র্যাঙ্ক করতে সাহায্য করে। তাই আপনার ভিডিও র্যাঙ্ক করতে হলে আপনাকে YouTube SEO সম্পর্কে জানতে হবে। তাহলে YouTube SEO সম্পর্কে সহজ কিছু টিপস & ট্রিকস জানা যাক,
YouTube SEO কি?
SEO এর পূর্ণরূপ হলো Search Engine Optimization। আপনার ওয়েবসাইটে ট্র্যাফিকের পরিমাণ এবং গুণমান বাড়ানোই এটির কাজ। YouTube SEO শেখার আগে YouTube SERP এর সাথে পরিচিত হওয়া যাক,
SERP হলো Search Engine Results pages। যখন আপনি YouTube search engine এ কিছু অনুসন্ধান করবেন, তখন কিছুটা এই রকম ফলাফল পাবেনঃ
YouTube SERP এবং Google SERP দুইটি একই, প্রথমে বিজ্ঞাপন দেখায় এবং তারপর ফলাফল। ইউটিউব SEO এই জৈব ফলাফলকে র্যাঙ্ক করে উপরে নিয়ে যায়। আশানুরূপভাবে YouTube search engine জানতে হলে ইউটিউব অ্যালগরিদম কিভাবে কাজ করে সেটা বোঝাও প্রয়োজন।
কিভাবে ইউটিউব অ্যালগরিদম কাজ করে?
YouTube Creator Academy অনুশারে ইউটিউব অ্যালগরিদম কিভাবে কাজ করে তা এখানে দেওয়া হলো;যেমনটি উপরের চিত্রটি থেকে স্পষ্ট প্রমাণ হয় যে, ইউটিউব অ্যালগরিদম এর দুইটি গুরুত্বপূর্ণ দিকঃ
১.ভিডিও সামগ্রী আশানুরূপীকরণ, প্রাসঙ্গিক শিরোনাম এবং বিবরণ।
২.ব্যবহারকারীবৃত্তিঃ যদি আপনার ভিডিও অধিক লাইক এবং ভিউস পেতে পারে, তখন এটি ইউটিউব অ্যালগরিদম কে সংকেত পাঠাবে আপনার ভিডিও র্যাঙ্ক করার জন্য।
তাহলে, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজের জন্য কিভাবে আমি আশানুরূপভাবে আমার ভিডিও তৈরি করতে পারি? তো জানা যাক,
২০২৪ সালের ইউটিউব SEO এর জন্য 5 টি টিপস & ট্রিকস এখানে দেওয়া হলোঃ
১.তুলনামুলক কম কম্পিটিশন ইউটিউব কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধান করা
২. আকর্ষণীয় ইউটিউব টাইটেল (শিরোনাম) এবং ডিসক্রিপসন(বর্ণনা) করা
৩. গ্রহন যোগ্যতা সমৃদ্ধ ভিডিও তৈরি করা
৪.নজরকারা thumbnails
৫.ভিডিওতে কথা বলার সময় কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করা
১. ইউটিউব কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধান
আপনি যদি SEO কোম্পানি হয়ে থাকেন, আপনি সম্ভাবত Google trands, Adwords, Ahrefs, and SEMRush ইত্যাদি ব্যবহার করে কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধান করতে পারেন। তবে ইউটিউব কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধান করাটা একটু আলাদা। ইউটিউব কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের জন্য নির্দিষ্ট কোন টুল নেই।
তাহলে কিভাবে আমি ইউটিউব কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধান করব?
কি-ওয়ার্ডের ধারনা
সর্বপ্রথম স্প্রেডশিট বের করুন তারপর আপনার ভিডিওটির সমস্ত কীওয়ার্ডের ধারনা তালিকাভুক্ত করুন। উদাহরণসরূপ, যদি আমার ভিডিও ইউটিউব SEO নিয়ে হয় তবে আমি ইউটিউব SEO,ইউটিউব কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধান, ইউটিউব ভিডিও SEO, ইউটিউবের জন্য SEO আরও অনেক কিছুর তালিকা তৈরি করব।
এটির জন্য আপনি গুগল কি-ওয়ার্ডও ব্যবহার করতে পারেন।
ইউটিউবের পরামর্শ ব্যবহার
যখন আপনার সব কি-ওয়ার্ড তৈরি হয়ে যাবে, তখন ইউটিউবের সার্চ বারে এই কি-ওয়ার্ড টাইপ করবেন এবং আপনি দেখতে পাবেন ইউটিউব কতকগুলো কি-ওয়ার্ডের পরামর্শ দিচ্ছে।
একটি দূর্দান্ত কৌশল হলো কি-ওয়ার্ডের পূর্বে * চিহ্ন ব্যবহার করা, তাহলে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড গুলো পাওয়া যাবে।
দারুন, তাই না?
লক্ষ করলেই দেখা যাবে, ইউটিউবের সাজেষ্ট করা কি-ওয়ার্ড গুলো অসাধারণ। কারণ, এগুলোই আসল কি-ওয়ার্ড যা ইউজারেরা অনুসন্ধান করে বা খোজে। আপনার ভিডিও র্যাঙ্ক ও ভালো ফলাফলের জন্য যতদূর সম্ভব এই কি-ওয়ার্ডগুলোই ব্যবহার করবেন।
ব্যবহার করুন Ahrefs Keyword Explorer
আপনি কি-ওয়ার্ড এক্সপ্লরার এর টুল Ahrefs Keyword Explorer তে অনুরূপ কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধান করতে পারেন। কীওয়ার্ড এক্সপ্লোরারে নেভিগেট করুন-> অনুসন্ধান ইঞ্জিন হিসাবে “ইউটিউব” নির্বাচন করুন-> আপনার কীওয়ার্ডটি টাইপ করুন। আপনি এই কৌশল অবলম্বন করেও কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধান করতে পারবেন।
প্রতিদ্বন্দ্বী কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করুন
SEO এর কমার্সিয়াল সংস্থাগুলো তে প্রতিদ্বন্দীদের বিশ্লষণ করে কি-ওয়ার্ড সরবরাহ করাকে কার্যকরী কৌশল বলে মনে করে। প্রতিদ্বন্দ্বীরা কোন কি-ওয়ার্ডকে লক্ষ্য করে র্যাঙ্ক করছে তা খুজে বের করা, এবং এই কি-ওয়ার্ডকে সংযোজন করা নিজের কৌশলে।
উদাহরণস্বরূপ, আমার কন্টেন্ট ‘কিভাবে শাড়ি পরতে হয়’ সে সম্পর্কে। কি-ওয়ার্ডটি টাইপ করুন এবং ফলাফল লক্ষ্য করুন। ভিডিও ওপেন করুন এবং দেখুন তারা কি টাইটেল, ডিসস্কিপসন ও ট্যাগ ব্যবহার করেছে।
২. ইউটিউবে আকর্ষণীয় টাইটেল বা শিরোনাম
যদি আপনি SEO সংস্থার হন, আপনি ইতমধ্যে জেনে গেছেন পেইজ র্যাঙ্ক করতে টাইটেল, ডিসস্ক্রিপসন এর গুরুত্ব। ইউটিউবের ক্ষেত্তেও অভিন্ন।
টাইটেলের দৈর্ঘ্য
ইউটিউব টাইটেলের অক্ষর সংখ্যা ১০০ মধ্যে হওয়া উচিৎ। ডট(…) গুলো ৭০ টি অক্ষরে পর ব্যবহার করতে হবে। ইউটিউবের প্রতি টাইটেলের অক্ষর সংখ্যা ৭০ এর নিচে রাখার চেষ্টা করতে হবে।
টাইটেলের শুরুতে কি-ওয়ার্ড ব্যবহার
টাইটালের শুরুতেই যেন গুরুত্বপুর্ণ কি-ওয়ার্ডগুলো ব্যবহ্বত হয় সে ব্যাপারে নিশ্চিত থাকতে হবে। ইউটিউব অলগারিদম টাইটেলের শুভ সুচনার জন্য আলাদাভাবে মূল্যায়ন করে।
টাইটেলে নাম্বার ব্যবহার
এটা প্রমানিত যে, সার্চ ইঞ্জিনের জন্য টাইটেলে নাম্বার ব্যবহার করা খুবই উপযোগি। কারন এটা টাইটেলকে আর্কষণীয় করে তলে। উদাহরণ স্বরূপ, “৫ টি সহজ উপাই … এর জন্য, বিশ্বসেরা ৩টি …” ইত্যাদি। আপনি যদি লক্ষ্য করেন দেখতে পাবেন নাম্বার ছাড়া টাইটেলের চেয়ে #নাম্বার যুক্ত টাইটেল র্যাঙ্কে উপরে থাকে। আপনার সাইটেও সুবিধাটি কাজে লাগাতে পারেন।
২.২ বর্ণনা সুনির্দিষ্ট করা
বর্ণনা সুদীর্ঘ করা অধিকাংশ মানুষ এই ভুলটি করে তাদের ইউটিউব ভিডিও তে ডিস্ক্রিবসনে লেখতে। কিছু সংখ্যক লোক তাদের ভিডিও ডিস্ক্রিবসনে শুধু প্রধান কি-ওয়ার্ড দিয়ে এক বা দুই লাইন লেখে।
ইউটিউব ডিস্ক্রিবসন লেখার জন্য অক্ষর সীমা ৫০০০ অক্ষরের মতো। ৫০০০ অক্ষর! হ্যা। আপনার এই সুযোগটি হাত ছাড়া করা মোটেও উচিৎ নয়।
আপনাকে নিশ্চিত থাকতে হবে যেন ডিস্ক্রিবসনটি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক সর্বস্তরের কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করে বর্ণনা মূলক হয়। ইউটিউব অলগারিদম ২ বা ৩ টি বাক্য লক্ষ্য করে এবং তা থেকেই মূল্যায়ন করে। তাই ভিডিও ডিস্ক্রিবসনে গুরুত্বপূর্ণ কি-ওয়ার্ড গুলো ২৫০ ওয়ার্ডের মধ্যেই রাখার চেষ্টা করতে হবে।
ডিস্ক্রিবসনে আপনার ওয়েবসাইটের লিংক সংযোজন করা
গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক হলো যে ডিস্ক্রিবসনে ওয়েবসাইট লিংক বাদ পরলে ইউটিউবের SEO সংস্থা তাদের ওয়েবসাইটের লিংক সংযোজন করে।
আপনার যদি কোন ওয়েবসাইট থাকে তাহলে আপনার ভিডিও ডিস্ক্রিবসনে প্রাসঙ্গিক সাইটের লিংকটি অ্যড করুন। এটা আপনাকে সাহায্য করবে আপনার সাইটে ট্রাফিক নিয়ে আসতে।
ডিস্ক্রিবসনে # হ্যাশট্যাগস ব্যবহার করুন
যদিও ডিস্ক্রিবসনে ট্যাগের উপর ভিডিও এর র্যাঙ্ক নির্ভরকরে না, তবে এটি অবশ্যই আপনার লক্ষ্য দর্শকদের কাছে পৌছাতে এবং আপনাকে খুঁজে পেতে সহায়তা করবে।
যার ফলস্বরূপ লোকেদের দ্বারা আপনার ভিডিও উদ্ঘাটিত করতে এবং ব্যবহারকারীবৃত্তিকে বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করবে।কিন্তু আপনার #ট্যাগগুলো যেন বিজ্ঞভাবে ব্যবহ্বত সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।
৩. গ্রহন যোগ্যতা সমৃদ্ধ ভিডিও তৈরি করা
ইউটিউব সার্চ ইঞ্জিনে ভিডিও রাঙ্ক করার ব্যাপারে ব্যবহারকারীবৃত্তি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনার তৈরি কৃত ভিডিও তে শুধু টাইটেল ও ডিস্ক্রপসন আশানুরূপ করলেই হবে না বরং ভিডিওর গুণাগুনের দিকে বিশেষভাবে মনোযোগ দিতে হবে। আপনার ভিডিও শুধু SEO এর আশানুরূপ হলেই চলবে না, ব্যবহারকারীবৃত্তি ছাড়া ভিডিও র্যাঙ্ক করা অসম্ভব। যেহেতু, আপনার ভিডিও র্যাঙ্ক করার জন্য প্রধান লক্ষ্য দর্শক, তাই এটি তাদের পছন্দ মতো হতে হবে এটাই স্বভাবিক। আপনার শেষ লক্ষ্য হলো দর্শকে নিযুক্ত করা, যার ফলে অনেক লাইকস এবং শেয়ার পাওয়া যাবে। যা কিছু করেই হক আপনাকে ব্যবহারকারিদের থেকে প্রতিত্তুরে অনেক কমেন্ট জোগার করতে হবে আপনার ভিডিও এর কমেন্ট সেকশনে। আপনার চ্যানেলের প্রতি দর্শকে সন্তুষ্ট করে তুলতে হবে, যাতে তারা চ্যানেলটি সাবসক্সইব করে। আপনাকে সব কমেন্টের উত্তর দিতে হবে না কিন্তু যার আপনার সাহায্যের প্রয়োজন তার প্রশ্নের সমাধান করে দেওয়া আপনার একান্ত দায়িত্ব।
৪.নজরকারা thumbnails
এখানে আপনার সৃজনশীলতা প্রয়োজন হবে। আপনার thaumbnails খুবই চমকপ্রদ করে তুলতে হবে যাতে দর্শকের নজর কারে এবং তারা ভিডিও টি চালু করতে দুর্বল হয়ে পরে। thaumbnails টি এমন হওয়া উচিৎ যাতে আপনার প্রতিদন্দীদের ভিডিওর মধ্যেও যেন আপনার ভিডিওটি দৃষ্টি আর্কষণ করে। আপনার ভিডিও টির thaumbnails প্রাশংগীক হওয়া উচিৎ। নতুবা আর্কষণীয় thaumbnails এর কারণে দর্শক ভিডিও তে ক্লিক করলেও কিছুক্ষনের মধ্যেই হতাশ হয়ে ভিডিও ছেড়ে চলে যাবে। আপনাকেই সিধান্ত নিতে হবে কোন thaumbnails টি চিত্তাকার্শক হবে!
৫.ভিডিওতে কথা বলার সময় কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করা
এটি একটি গোপন কৌশল যার সাহায্য ইউটিউবে আপনার ভিডিও র্যাঙ্ক করতে পারেন। আপনি যখন গান বা কোনও ভিডিও শোনেন, ইউটিউব আপনাকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে উত্পন্ন সাবটাইটেলগুলি দেখায়, এমনকি ভিডিওটি আপলোড করা ব্যক্তি সাবটাইটেলগুলি আপলোড না করলেও। এটি কি-ওয়ার্ড গুলোকে আলাদাভাবে ইন্ডিকেট করতে সাহায্য করে। তাই কথাবলার সময় কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে যাতে করে ভিডিও টি আর্কষণীয় হয়ে ওঠে।
এসব কৌশল অবলম্বন করা ছাড়াও আরও কিছু কৌশল অবলম্বন করে ইউটিউবের ভিডিও র্যাঙ্ক করা যায়। সর্বপ্রথম আপনার ভিডিও তৈরিতে উন্নত মানের ক্যামেরা ব্যবহার করতে হবে। তাছাড়াও আপনার চ্যানেলের পেইজ আশানুরূপ বা সর্বজন গ্রহন যোগ্য করা, আপনার প্লে-লিস্টও আশানুরূপ বা গ্রহন যোগ্য করা, শেষে ক্লোজ ক্যাপসন ব্যবহার করা, ফাইলের নামেও কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করা, ইউটিউবে গল্প এবং পোস্ট ব্যবহার করে ভিডিও বানানো ইত্যাদি করতে পারেন। ইউটিউব এর SEO কঠিন মনে হতে পারে। আপনার শিরোনাম, বর্ণনা অনুকূলিত করুন, এখানে কয়েকটি হ্যাকস ব্যবহার করুন এগুলোই যতেষ্ট। সত্যি কথা বলতে, ইউটিউব SEO জনিত খুব বেশি প্রযুক্তি নেই। আপনাকে কেবল এমন ভিডিও তৈরিতে মনোনিবেশ করতে হবে যা ব্যবহারকারীদের কাছে পছন্দনীও। যদি আপনার ভিডিওটি নিখুঁত হয় তবে আপনার জন্য ইউটিউব SEO খুবই উপযোগি হবে।
আরো পড়ুন১৩ টি আকর্ষণীয় ফেসবুক ট্রিকস যা আপনি জানেন না