VPN কি এবং সেরা ১০ টি VPN অ্যাপ্লিকেশন
VPN শব্দটার সাথে আমরা সবাই কম-বেশি পরিচিত। তবে শুধু নামের সাথেই পরিচিত, কিন্তু অধিকাংশ মানুষই জানে না এটা কি। আজকে আমরা VPN কি, এর কাজ কি- এসমস্ত বিষয় সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করবো।
VPN এর পূর্ণ রূপ হল- Virtual Private Network। সোজা বাংলায়, VPN হল একটা কাল্পনিক ‘Tunnel’ যার মাধ্যমে নিরাপদে তথ্য আদান প্রদান করা যায়। এই ‘Tunnel’ বা সুড়ঙ্গের বাস্তবে কোন অস্তিত্ব নেই, এটি দিয়ে মূলত কাল্পনিক একটা প্রাইভেট নেটওয়ার্ক বোঝানো হচ্ছে যেটি দিয়ে ইন্টারনেটে নিরাপদে তথ্য আদান প্রদান করা যায়। আমরা এখন ‘নিরাপদ’ keyword টির উপর ফোকাস করবো। ইন্টারনেট মূলত উন্মুক্ত তথ্য আদান প্রদানের জায়গা। যেহেতু এটি পাবলিক নেটওয়ার্ক অর্থাৎ, পৃথিবীর সবাই সংযুক্ত তাই এখানে সরাসরি তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে তথ্যের গোপনীয়তা ফাঁস হয়ে যাবার একটা ঝুঁকি আছে। এই ঝুঁকি এড়ানোর জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করে নিজের ব্যক্তিগত নেটওয়ার্কে সংযুক্ত হওয়ার নিরাপদ পদ্ধতিই হল VPN। এই পদ্ধতিতে ব্যবহারকারী এবং প্রাইভেট নেটওয়ার্ককে সংযুক্ত করার জন্য ইন্টারনেটে একটি কাল্পনিক সুড়ঙ্গ তৈরী হয়।
VPN-এর শ্রেণীবিভাগঃ
VPN-কে বিভিন্নভাবে classify করা যায়। যেমন- PPTP VPN, Site to Site VPN, L2TP VPN, Remote Access VPN, IPsec, SSL, MPLS VPN, Hybrid VPN ইত্যাদি।কিভাবে VPN কাজ করে?একটি VPN সার্ভারে VPN ক্লায়েন্ট একটি বাহ্যিক নেটওয়ার্ক ইন্টারফেসের মাধ্যমে সংযুক্তহতে পারেন। VPN-এর মাধ্যমে ব্যবহারকারী এবং প্রাইভেট নেটওয়ার্ককে সংযুক্ত করার জন্য ইন্টারনেটে একটি কাল্পনিক সুড়ঙ্গ তৈরী হয় (যেটা আমরা আগেই বলেছি)। এই পদ্ধতিতে তথ্য encrypted অবস্থায় আদান- প্রদান করা হয়, ফলে তথ্যগুলো সুরক্ষিত থাকে। VPN এর জন্য প্রাইভেট নেটওয়ার্কে একটা VPN সার্ভার থাকে এবং ব্যবহারকারীর পিসিতে VPN ক্লায়েন্ট কনফিগার থাকে। যখন কোন ব্যবহারকারী VPN এর মাধ্যমে তার প্রাইভেট নেটওয়ার্কে সংযুক্ত হতে চাইবে প্রথমে তার পিসিতে ইন্টারনেট কানেকশন নিশ্চিত করতে হবে এর পর VPN ক্লায়েন্টের মাধ্যমে VPN সার্ভারে এলজি লগইন করার পর যদিও ব্যবহারকারী তার নেটওয়ার্ক থেকে অনেক দূরে অবস্থান করছে তারপরেও সে প্রাইভেট নেটওয়ার্কের সব সুযোগ সুবিধাগুলো পাবে।
VPN-এর সুবিধাগুলো কি কি?
১। VPN ব্যবহার করার অর্থ হল আপনি ডাটা নিরাপদে আদান প্রদান করতে পারছেন।
২। VPN ব্যবহার করলে আপনার অবস্থান কেউ ট্র্যাক করতে পারবে না।
৩। IP address (Internet Protocol address) হাইড করে রাখে। অর্থাৎ, হ্যাকারদের কবলে পড়ার সম্ভাবনা নাই।
৪। আপনার ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী আইপিএস থেকে নেটের ফুল স্পিড পাবেন।
৫। VPN দিয়ে আপনি আইএসপি তে ব্লক করা সাইট ভিজিট করতে পারবেন। যেমন ধরেন, যদি ইউটিউব আমাদের দেশে বন্ধ করে দেয়া হয়, তাহলেও আপনি VPN ব্যবহার করে ইউটিউবে ঢুকতে পারবেন।
৬। এটি নিরাপদ যোগাযোগ এবং ডাটা encrypt করার একটি পদ্ধতি হিসেবে কাজে লাগে। মানে VPN আপনার মেশিনকে একটি ভার্চুয়াল নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত করতে পারে এবং আপনার পাঠানো সব data দ্রুততার সঙ্গে encrypt করে ফেলে অর্থাৎ public domain থেকে লুকিয়ে রাখে এবং এটা আপনার browsing history-র কোনো ট্র্যাক রাখে না। কাজেই আপনি অনলাইনে পুরোপুরি নিরাপদ।
তবে এত সুবিধার পরেও VPN-এর কিছু অসুবিধা রয়েছে। এর প্রধান অসুবিধা হচ্ছে এটি আপনাকে টরেন্ট ফাইল ডাউনলোডের সুবিধা দেবে না এবং এটি সম্পূর্ণ ইন্টারনেট নির্ভর। VPN সার্ভিস ফ্রি কিংবা প্রিমিয়াম হতে পারে। যদিও অধিকাংশ VPN সার্ভিসের ক্ষেত্রেই টাকা গুণতে হয়। তবে কিছু জনপ্রিয় ফ্রি VPN সার্ভিস রয়েছে, যা দিয়ে আপনি প্রিমিয়ামের কাছাকাছি সুবিধা পাবেন। যেমন- ProXPN, Hotspot Shield, Cybershost, SecurityKiss, SpotFlux ইত্যাদি।
এখন আমরা জানব সেরা ১০ টি VPN অ্যাপ সম্পর্কে।
সেরা ১০ টি VPN অ্যাপ
1. ExpressVPN
প্রাইসঃ ফ্রি ট্রাইল / $৬.৬৭ (মাস)
বর্তমান সময়ের সেরা ভিপিএন এর কথা বলতে গেলে সবার আগে নাম আসে ExpressVPN এর। আসবেই না কেন, এটি বর্তমানে সময়ের সবচেয়ে ফাস্ট এবং নিরাপদ ভিপিএন হিসেবে পরিচিত। পৃথিবীর ৯৪টি দেশে ExpressVPN এর প্রায় ৩ হাজারের মতো সার্ভার রয়েছে। ফলে আপনাকে ইন্টারনেট স্পিড নিয়ে কখনোই ভাবতে হবে না। অনেক সময় স্মার্টফোনে ভিপিএন ব্যবহার করার ফলে দেখা যায় ইন্টারনেট স্পিড অনেকটা কমে যাচ্ছে। কিন্তু এই ভিপিএন ব্যবহার করার সময় এমনটা হবে না। এটি AES ২৫৬ বিট এনক্রিপশনের মাধ্যমে ব্যবহারকরীদের ইন্টারনেটে সর্বত্র সুরক্ষা নিশ্চিত করে থাকে। তাছাড়া এর অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপটি ইউজার ফ্রেন্ডলি হওয়ায় ব্যবহার করাও অনেক সহজ।
ExpressVPN অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপের সাহায্যে আপনি খুব সহজেই সারা বিশ্বে থাকা তাদের দ্রুত সার্ভারগুলোতে সংযুক্ত হতে পারবেন। অ্যাপটিতে রিকমন্ডেড লোকেশন নামে একটি ফিচার রয়েছে যেটি আপনার লোকেশনের উপর ভিত্তি করে যে সার্ভারটিতে কানেক্টে হলে সবচেয়ে ভালো স্পিড পাওয়া যাবে সেই সার্ভারটি আপনার জন্য সিলেক্ট করে দিবে। যেহেতু এটি একটি প্রিমিয়াম ভিপিএন সার্ভিস তাই এটি ব্যবহার করতে চাইলে আপনাকে টাকা দিতে হবে। কিন্তু আপনি এটি ফ্রিতেও ব্যবহার করতে পারবেন কিন্তু সেটা শুধু লিমিটেড টাইমের জন্য।
এর সার্ভিস প্রোভাইডার ৩০ দিনের একটি ট্রায়াল পিরিয়ড দেয় যেখানে আপনি সমস্ত প্রিমিয়াম ফিচারগুলো উপভোগ করতে পারবেন। সাথে আপনি ৩০ দিনের মানি ব্যাক গ্যারান্টিও পাবেন। তবে এই ভিপিএন অ্যাপ টি ক্র্যাক করেও ব্যবহার করা যায়। কিন্তু এটি সম্পূর্ন অবৈধ্য একটি প্রক্রিয়া।
2. NordVPN
প্রাইসঃ ফ্রি ট্রাইল / $৬.৬৭ (মাস)
আরেকটি সেরা ভিপিএন হলো NordVPN। এটি জনপ্রিয় একটি ভিপিএন। প্লে স্টোরে ৫ মিলিয়ন ডাউনলোড সহ অ্যাপটির ভালো রিভিউ রয়েছে।
পৃথিবীর ৬০টি দেশে NordVPN এর প্রায় ৫ হাজারের মতো সার্ভার রয়েছে এবং এর স্পিডও অনেক ভালো। এতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফিচার রয়েছে। এতে ‘ডাবল ভিপিএন’ নামে একটি ফিচার রয়েছে যা একসাথে দুটি ভিন্ন সার্ভারের সাথে কানেক্টেড হতে সাহায্য করে থাকে। যেখানে অন্যান্য ভিপিএন একটি সার্ভারের মাধ্যমে আপনাকে সুরক্ষা প্রদান করে সেখানে এটি দুটি সার্ভার ব্যবহার করে। যার ফলে ইন্টারনেটে আপনি কি করছেন তা কেউ জানতে পারবে না। তবে ভিপিএনটিতে ডাবল সার্ভারের সংখ্যা খুবই কম। NordVPN এর আরেকটি ভালো দিক হলো এটি ‘জিরো লগস’ পলিসি অনুসরণ করে। অর্থাৎ এটি ব্যবহারকারীদের অনলাইন অ্যাক্টিভিটি ট্র্যাক করে না।
NordVPN অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপটি ব্যবহার করাও অনেক সহজে। এতে থাকা কুইক কানেক্ট ফিচারের সাহায্যে সহজেই সার্ভারগুলোতে এক্সেস করা যাবে। অ্যাপটিতে একটি বিল্ট-ইন অ্যাড ব্ল্যাকার রয়েছে যাতে আপনি আরও অবাধে কম ডেটা ব্যবহার করে ইন্টারনেটে ব্রাউজ করতে পারেন। এই ভিপিএন সার্ভিস আপনি নেটিভ ডেস্কটপ অ্যাপ্লিকেশনের পাশাপাশি ফায়ারফক্স এবং ক্রোমে ভিপিএন এক্সটেনশনের মাধ্যমে আপনার কম্পিউটারেও ব্যবহার করতে পারবেন।
এই প্রিমিয়াম ভিপিএন সার্ভিসের ফ্রি ট্রাইল ৭ দিনের জন্য উপলব্ধ। সাথে থাকছে ৩০ দিনের মানি ব্যাক গ্যারান্টি।
3. Private Internet Access
প্রাইসঃ $২.৯১ (মাস)
আজকের লিস্টের তৃতীয় স্থানে রয়েছে Private Internet Access। হাই স্পিডের জন্য এটি বেশ পরিচিত একটি ভিপিএন। এই ভিপিএন অ্যাপ ব্যবহার করা অনেক সহজ। এতে পোর্ট ফরওয়ার্ডিং সাপোর্ট, প্রক্সি সাপোর্ট, ইউডিপি এবং টিসিপি প্রোটোকল, কাস্টম এনক্রিপশন এবং হ্যান্ডশেকিং মেথডের মতো ফিচারগুলো রয়েছে। এতে অটো রিকমেন্ডেশন ফিচারও রয়েছে যা আপনাকে সবচেয়ে ফাস্ট সার্ভারে কানেক্টে হতে সাহায্য করবে। ৩২টি দেশে ৩,৩০০ সার্ভার রয়েছে এই ভিপিএনের। এই ভিপিএন সার্ভিস ‘জিরো লগস’ পলিসি অনুসরণ করে। অর্থাৎ এটি ব্যবহারকারীদের অনলাইন অ্যাক্টিভিটি ট্র্যাক করে না।
এটি AES ১২৮ এবং ২৫৬ বিট এনক্রিপশনের মাধ্যমে ব্যবহারকরীদের ইন্টারনেটে সর্বত্র সুরক্ষা নিশ্চিত করে থাকে। আপনি যদি এমন কোনো ভিপিএন খুঁজে থাকেন যা আপনাকে টরেন্টিংয়ে বাধা দিবে না, তাহলে এই ভিপিএনটি হতে পারে আপনার জন্য প্রথম পছন্দ। এতে থাকছে পিয়ার-টু-পিয়ার ফাইল শেয়ার করে নেওয়া সুবিধা। ফলে আপনি যে কোনো টরেন্টিং ক্লায়েন্ট থেকে আপনার পছন্দসই যা ডাউনলোড করতে চান তা করতে পারবেন।
এই ভিপিএন সার্ভিসটি পেইড হওয়ায় মাসিক বা বাৎসরিক সাবস্ক্রিপশনের মাধ্যমে আপনাকে পে করতে হবে। নেই কোনো ফ্রি ট্রাইলের সুযোগ।
4. Hotspot Shield
প্রাইসঃ ফ্রি / $২.৯৯ (মাস)
আজকের লিস্টে থাকা একটি সেরা ফ্রি ভিপিএন হলো Hotspot Shield। ৭০০ মিলিয়ন একটিভ ব্যবহারকারী এই ভিপিএন সার্ভিস ব্যবহার করে থাকে। পৃথিবীর ৭০টি দেশে Hotspot Shield এর প্রায় ৩ হাজার ২০০ এর মতো সার্ভার রয়েছে। তবে এগুলো শুধু প্রিমিয়াম ভার্সনে উপভোগ করা যাবে। এই ভিপিএন ব্যবহার করে আপনি প্রতিদিন ৫০০ মেগাবাইট পর্যন্ত ডেটা ব্যবহারের সুযোগ পাবেন। ফ্রি ভার্সনে আরো কিছু লিমিটেশন রয়েছে।
তবুও এর ফ্রি ভার্সনটি অন্যান্য ভিপিএনের তুলনায় যথেষ্ট ভালো। ফ্রি ভার্সনেও এই ভিপিএন আপনাকে সর্বোচ্চ সুরক্ষা প্রদান করবে। তাই অনলাইন সুরক্ষা যদি আপনার একমাত্র লক্ষ্য হয়, তাহলে এই ভিপিএন সার্ভিসটি শুধু আপনার জন্যই। কেননা এটি তাদের ফ্রি ভার্সনেও ‘মিলিটারি-গ্রেড এনক্রিপশন’ ব্যবহার করে থাকে। ফলে অনলাইনে আপনাকে কেউ ট্র্যাক করতে পারবে না। Hotspot Shield ভিপিএনের অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপের সিম্পল ইউজার ইন্টারফেস থাকায়, এটি ব্যবহার করাও অনেক সহজ।
আপনি এই ভিপিএনের ফ্রি ভার্সনটি ব্যবহার করতে পারেন। তবে এতে কিছু লিমিটেশন রয়েছে। প্রিমিয়াম ভার্সনের ফ্রি ট্রাইল ৭ দিনের জন্য উপলব্ধ। সাথে থাকছে ৪৫ দিনের মানি ব্যাক গ্যারান্টি।
5. OpenVPN Connect
প্রাইসঃ ফ্রি
অ্যান্ড্রয়েডের জন্য আরেকটি ফ্রি ভিপিএন হলো OpenVPN। আপনি যদি ফ্রি ভিপিএন ব্যবহার করতে চান তাহলে এটি ব্যবহার করতে পারেন। এর স্পিড মোটামুটি ভালোই। এটি আপনার গোপনীয়তা এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য কাটিং-এজ সব প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকে। এই ভিপিএনের সবচেয়ে ভালো দিকটি হলো যে এটি সম্পূর্ণ ফ্রি একটি ভিপিএন। অন্যান্য ভিপিএন ফ্রি হলেও তাতে নানা ধরনের লিমিটেশন থাকে। কিন্তু OpenVPN Connect এর ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য নয়। OpenVPN তাদের অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপে কোন ধরনের বিজ্ঞাপনও প্রদর্শন করে না।তবে মনে রাখবেন, এই ভিপিএন অ্যাপ ব্যবহার করার জন্য আপনাকে নিজের একটি ওপেনভিপিএন সার্ভার তৈরি করতে হবে এবং সেটা আপনাকেই সেট-আপ করতে হবে। তাই এ বিষয়ে কিছু জ্ঞান থাকা চায়।
আপনি যদি এই বিষয়টি মেইনটেইন করতে পারেন, তাহলে এটি যে আপনার জন্য একটি বেস্ট চয়েস হতে পারে তা বলার অবকাশ রাখে না।
6. SurfEasy
প্রাইসঃ ফ্রি / $৩.৯৯-$৬.৪৯ (মাস)
বর্তমান সময়ের বিশ্বাসযোগ্য একটি ভিপিএন সার্ভিস হলো SurfEasy। বর্তমানে এটি অপেরা ওয়েব ব্রাউজারের সাথে বিল্ট-ইন ভাবেই পাওয়া যাচ্ছে। এর অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপটিও অনেক জনপ্রিয়। ২.৫ লক্ষ রিভিউয়ের সাথে বর্তমানে এটি প্রায় ৫ মিলিয়ন অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে ইনস্টলকৃত রয়েছে। SurfEasy ফ্রি ভার্সনে প্রায় ১ হাজারের মতো সার্ভার রয়েছে ২০টি ভিন্ন ভিন্ন লোকেশানে। সাথে ফ্রি ভার্সনেই সর্বোচ্চ ৫টি ডিভাইস একত্রে ব্যবহার করার সুযোগ থাকছে। তবে ফ্রি ভার্সনে আপনি মাসে ৫০০ মেগাবাইট পর্যন্ত ডেটা ব্যবহারের সুযোগ পাবেন। তাই আপনি যদি হেভি ইন্টারনেট ইউজার থাকেন, তাহলে এটি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকবেন। তবে অপেরা ওয়েব ব্রাউজারের সাথে বিল্ট-ইন ভাবে থাকা ভিপিএনটিতে কোন লিমিট নেই। অপেরাতে থাকা SurfEasy ভিপিএনে আপনি আনলিমিটে ডেটা ব্যবহার করতে পারেন।
তাই আপনি যদি এটি ফ্রিতে ব্যবহার করতে আগ্রহী হয়ে থাকেন, তাহলে অপেরা ব্রাউজের মাধ্যমে এটি ব্যবহার করতে পারেন।
7. Windscribe
প্রাইসঃ ফ্রি / $৯ (মাস)
Windscribe খুব অল্প সময়ের মধ্যে জনপ্রিয়তা লাভ করছে। এর পিছনে অন্যতম একটি প্রধান কারণ হলো ব্যবহারকরীদের গোপনীয়তা রক্ষার প্রতি উদারতা। এটি কোনো রকম কানেকশন লগ, আইপি স্ট্যাম্প বা ব্রাউজিং হিস্টোরি জমা রাখে না। এটি সর্বদা ‘জিরো লগস’ পলিসি অনুসরণ করে। যেখানে অন্যান্য ভিপিএন ফ্রি ভার্সনে ৫০০ মেগাবাইট ডেটা ব্যবহার করতে দেয়, সেখানে Windscribe ব্যবহারকরীদের মাসে ১০ গিগাবাইট পর্যন্ত ডেটা ব্যবহারের সুযোগ দেয়। Windscribe ফ্রি ভার্সনে আপনি যুক্তরাজ্য, হংকং, কানাডা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ দশটি রিমোট সার্ভারে কানেক্টেড হতে পারবেন।
তাছাড়া এই ভিপিএনের সবচেয়ে ভালো একটি দিক হলো এখানে একাউন্ট তৈরি করলেই আপনি এক মাসের একটি ফ্রি ট্রায়াল পেয়ে যাবেন। আপনি এই ভিপিএন সম্পর্কে টুইটারে যতবারই টুইট করবেন ততবারই আপনাকে ৫ গিগাবাইট একস্ট্রা ডেটা দেওয়া হবে। আর আপনার বন্ধুকে এটি ব্যবহারের জন্য ইনভাইট করলে আপনাকে ১ গিগাবাইট ডেটা দেওয়া হবে। ইন্টারনেটে নিরাপত্তার জন্য Windscribe এর ফ্রি ভার্সনটি ব্যবহার করে দেখতে পারেন, আপনার অব্যশই ভালো লাগবে। প্লে স্টোরে ভালো রেটিং সহ এর ১০ লক্ষ সক্রিয় ইনস্টল রয়েছে।
8. ProtonVPN
প্রাইসঃ ফ্রি / $৪-$২৪ (মাস)
বর্তমানে সময়ের আরেকটি জনপ্রিয় ভিপিএন হলো ProtonVPN। আপনি যদি অনলাইন প্রাইভেসি নিয়ে চিন্তিত থাকেন, তাহলে এটি ব্যবহার করতে পারেন। এটি সর্বদা ‘জিরো লগস’ পলিসি অনুসরণ করে। অর্থাৎ এটি কোনো রকম কানেকশন লগ, আইপি স্ট্যাম্প বা ব্রাউজিং হিস্টোরি জমা রাখে না।
ProtonVPN ফ্রি ভার্সনে আনলিমিটেড ডেটা ব্যবহার করা যায়, যা এটিকে একটি জনপ্রিয় ভিপিএনে পরিণত করেছে। ফ্রি ভার্সনে আপনি যত খুশি ততো ডেটা ব্যবহার করতে পারবেন। যদিও ফ্রি ভার্সনটিতে বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। যেমনঃ আপনি মাত্র একটি ডিভাইস কানেক্ট করতে পারবেন এবং তিনটির বেশি লোকেশনে কানেক্টেড হতে পারবেন না। তবুও, ProtonVPN ফ্রি সংস্করণটি খুবই ভালো এবং বেশিরভাগ মানুষের জন্য এটি যথেষ্ট। প্লে স্টোরে এর প্রায় ১ মিলিয়ন ডাউনলোড রয়েছে।
9. TunnelBear
প্রাইসঃ ফ্রি / $৪.৯৯ (মাস)
আরেকটি জনপ্রিয় ভিপিএন সার্ভিস হলো TunnelBear। এর অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপটির ইউজার ইন্টারফেস সহজ ও সাবলীল। এই ভিপিএন ব্রাউজিং স্পিড ও নিরাপত্তার দিক দিয়ে খুবই ভালো। ফ্রি ভার্সনে ২২টি দেশের ১ হাজারের মতো সার্ভারের সাথে যুক্ত হওয়ার সুযোগ থাকছে। পেইড ভার্সনে এই সংখ্যা আরো বেশি।
তবে ফ্রি ভার্সনে আপনি মাসে ৫০০ মেগাবাইট পর্যন্ত ডেটা ব্যবহারের সুযোগ পাবেন। ফ্রি ভার্সনে আরো কিছু লিমিটেশন রয়েছে। TunnelBear ২৫৬ বিট ওপেন ভিপিএন এনক্রিপশনের ব্যবহারকরীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে থাকে। তাছাড়া এরা সর্বদা ‘জিরো লগস’ পলিসি অনুসরণ করে। প্লে স্টোরে ভালো রেটিং এর পাশাপাশি এটি অ্যাপেল আইটিউনসে ৫ স্টার রেটেড। প্লে স্টোরে এর রেটিং ৪.৪। বর্তমানে ১০ মিলিয়ন ব্যবহারকরী এটি ব্যবহার করে থাকে।
10. Hide.me
প্রাইসঃ ফ্রি / $৫.৪১-$১৪.৯৫ (মাস)
Hide.me একটি ফ্রি ভিপিএন সার্ভিস প্রোভাইডার। নিরাপত্তা ও স্পিডের দিক থেকে এটিও একটি ভালো ভিপিএন।
এর ফ্রি ভার্সনে আপনি প্রতিমাসে ২ গিগাবাইট পর্যন্ত ডেটা ব্যবহার করতে পারবেন এবং আপনি সর্বোচ্চ একটি ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবেন।
ফ্রি ভার্সনে আপনি তিনটি লোকেশন সিঙ্গাপুর, কানাডা এবং নেদারল্যান্ডসে কানেক্টেড হতে পারবেন। তবে পেইড ভার্সনে ৫৭টি লোকেশনে কানেক্টেড হওয়া যাবে।
এটি এক্সপ্রেস ভিপিএন এর মতো AES ২৫৬ বিট এনক্রিপশনের মাধ্যমে ব্যবহারকরীদের ইন্টারনেটে সর্বত্র সুরক্ষা নিশ্চিত করে থাকে।
তাছাড়া এরা সর্বদা ‘জিরো লগস’ পলিসি অনুসরণ করে। এটি AES ২৫৬ বিট এনক্রিপশনের পাশাপাশি IKEv2 এনক্রিপশনও ব্যবহার করে।
IKEv2 এনক্রিপশন মূলত ফাস্ট ব্রাউজিংয়ে সাহায্য করে থাকে। প্লে স্টোরে অ্যাপটির ১ মিলিয়ন প্লাস ডাউনলোড রয়েছে। ফ্রি ট্রাইল ৭ দিনের জন্য উপলব্ধ।
আজ এই পর্যন্তই। কথা হবে অন্য আর এক আর্টিকেলে। ধন্যবাদ।