অন্যান্য

শেয়ার মার্কেট কি ? | শেয়ার বাজার কিভাবে কাজ করে ?

আপনি কি জানতে চান শেয়ার মার্কেট কি ? বর্তমানে বাংলাদেশের অধিকাংশ কম্পানি এর সাথে সংযুক্ত ।

এখান থেকে মানুষ ঘরে বসে হাজার হাজার টাকা ইনকাম করছে । আপনিও যদি ইনকাম করতে চান তাহলে এ মার্কেট সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা রাখতে হবে।

কেননা  যদি পরিপূর্ণ ধারণা না থাকে তাহলে সফল হওয়া অনেকটাই কঠিন হয়ে যাবে। আজ আমি শেয়ার মার্কেট সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা দিব। পাশাপাশি খুঁটিনাটি বিষয়গুলো বলবো।

শেয়ার মার্কেট বা শেয়ার বাজার কি ?

শেয়ার অর্থ হল : অংশ অর্থাৎ কোন কোম্পানির মূল মালিকানার অংশ।

যেমন :  যদি বলা হয়ে থাকে অমুক কোম্পানির ১০০ টি শেয়ার রয়েছে। সেখান থেকে যদি আপনি ৫০টি শেয়ার ক্রয় করেন তাহলে বলা হবে আপনি ওই কোম্পানির অর্ধেকের মালিক এবং আপনি ওই কোম্পানির একজন শেয়ারহোল্ডার হবেন। ইচ্ছা করলে আপনি যেকোন সময়  আপনার ঐ শেয়ারগুলো বিক্রি করতে পারবেন।

বাজার বা মার্কেট অর্থ হলো: যেখানে কোন কোম্পানির শেয়ার বেচা কেনা হয় । এই হিসেবে শেয়ার বাজার হল এমন একটিস্থান যেখানে কোন ব্যক্তি কোন কোম্পানির শেয়ার ক্রয় করতে পারে অথবা বিক্রয় করতে পারে। আশা করি আমি আপনাদেরকে  বুঝাতে পেরেছি ?

 জনগণের কাছে কম্পানি কেন শেয়ার বিক্রি করে ?

প্রত্যেকটি কোম্পানী বা ব্যবসার জন্য লাগে মূলধন। আর এই মূলধনের কারণে ঐ কোম্পানি বা ব্যবসা উন্নতি লাভ করে এবং ধীরে ধীরে গ্রহণযোগ্যতা পায়। মূলধন বৃদ্ধি করার জন্য বা লাভ করার জন্য প্রত্যেকটি কোম্পানি শেয়ার বিক্রি করে থাকে।

বাংলাদেশ মার্কেট কত প্রকার ?

সাধারণত 2 টি সিস্টেমে পাবলিক শেয়ার পাওয়া যায়

  • প্রাইমারি শেয়ার
  • সেকেন্ডারি শেয়ার

প্রাইমারি শেয়ার কাকে বলে বা মার্কেট কি ?

সাধারণত প্রত্যেক কোম্পানি মার্কেটে প্রবেশ করে  প্রাইমারি শেয়ার এর মাধ্যমে। তারপর কোম্পানি তাদের শেয়ারের মূল্য ধরে। এর সাথে প্রিমিয়াম মূল্য যোগ করা হয়।তারপর তারা রেজিস্টার করে স্টক এক্সচেঞ্জ এর কাছে। তারা অনুমতি দিলে জনগণের কাছে তাদের শেয়ার কেনার জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে অফার দেয়।যেমন : একটি কোম্পানির ১০০ টি শেয়ার রয়েছে। প্রতি শেয়ার মূল্য ২০ টাকা। পাশাপাশি তারা প্রিমিয়াম এর জন্য নির্ধারণ করেছে ১০ টাকা।এই হিসেবে আপনি যদি ওই কোম্পানির কাছ থেকে শেয়ার কিনতে চান তাহলে আপনাকে ৩০ টাকা করে দিতে হবে।

সেকেন্ডারি শেয়ার কাকে বলে ?

সেকেন্ডারি শেয়ার হল ঐ শেয়ার যেটা সরাসরি কোম্পানির কাছ থেকে নেয়া হয় না বরং শেয়ার হোল্ডারের কাছ থেকে নেয়া হয়।

শেয়ার বাজার কিভাবে কাজ করে ?

ন কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করতে হলে প্রথমে তাকে স্টক এক্সচেঞ্জের কাছে রেজিস্টার করাতে হবে। প্রায় প্রতিটি দেশেই স্টক এক্সচেঞ্জ রয়েছে। যেমন আমাদের বাংলাদেশীয় স্টক এক্সচেঞ্জ রয়েছে।

  1.  ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ
  2. চিটাগাং স্টক এক্সচেঞ্জ
  3. পাশাপাশি আমাদের পাশের দেশ ভারতের স্টক এক্সচেঞ্জ এর নাম হলো ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ অফ ইন্ডিয়া। তারপর রেজিস্টার হয়ে গেলে ওই কোম্পানির শেয়ার বিক্রি শুরু করে দেয়।

শেয়ার বাজার থেকে কখন শেয়ার কিনবেন ?

  • শেয়ার কেনার আগে অবশ্যই যে কোম্পানি থেকে কিনবেন ওই কোম্পানির সম্পর্কে ভালভাবে যাচাই বাছাই করে কিনবেন।
  • যখন শেয়ারের দাম কম থাকবে এবং ভবিষ্যতে বাড়ার সম্ভাবনা থাকবে তখনই ঐ সমস্ত শেয়ার কিনবেন।
  • কোন সময় শেয়ারের দাম কমে এবং কোন সময় শেয়ারের দাম বাড়ে এই সমস্ত বিষয়ের প্রতি লক্ষ রাখুন তারপর গবেষণা করুন। গবেষণা শেষ হলে একটি ফল নির্ণয় করুন তারপর শেয়ার কিনুন।
  •  ইনভেস্ট করা খুবই রিস্ক। কেননা শেয়ার ভ্যালু বাড়বে না কমবে তা বলা যায় না। তাই অবশ্যই শেয়ার মার্কেটে আপনার প্রয়োজনের বাইরে অতিরিক্ত টাকাগুলো ইনভেস্ট করুন। এক্ষেত্রে শেয়ারের দাম কমে গেলেও আপনার প্রবলেম হবেনা। অর্থাৎ আপনি নিঃস্ব হবেন না।
  • মাসের মাঝামাঝি সময়ে শেয়ার কেনার চেষ্টা করুন।

আরও পড়ুনঃ নিজেই নিজের জাতীয় ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করুন

শেয়ার কিভাবে কিনতে হয় ?

শেয়ার কেনার জন্য অবশ্যই আপনাকে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। অ্যাকাউন্ট দুই ভাবে করতে পারেন।

  1. যারা মিডিয়া হিসেবে কাজ করে  মার্কেটে। অর্থাৎ ব্রোকার তাদের কাছ থেকে আপনি একাউন্ট খুলতে পারেন। আর এই একাউন্টের মাধ্যমে আপনি শেয়ার কেনা বেচা করতে পারবেন। আর এই একাউন্টে আপনার সমস্ত লাভ চলে আসবে। আর একাউন্ট খোলার জন্য অবশ্যই আপনাকে একটি ব্যাংক একাউন্ট থাকতে হবে । কেননা এই অ্যাকাউন্টি ব্যাংক একাউন্টের সাথে যুক্ত করতে হবে।
  2. দ্বিতীয় পদ্ধতি হলো সরাসরি ব্যাংকে যেয়ে শেয়ার বেচাকেনা জন্য একাউন্ট খুলতে হবে। এটা একটু ঝামেলার বটে।

শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ বা শেয়ার ব্যবসা করতে কত টাকা লাগে ?

আমরা দুই ভাগে ভাগ করে ছিলাম শেয়ার বাজারকে। সেই হিসাবে 5000 থেকে 6000 টাকা বিনিয়োগ করতে পারেন প্রাইমারি বাজারে ক্ষেত্রে।

তবে এর থেকে বেশি টাকা বিনিয়োগ করা ভালো। প্রাইমারি বাজারে বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে রিক্স কম থাকে।

আর সেকেন্ডারি বাজারের ক্ষেত্রে আপনি 20000 থেকে 25000 টাকা দিয়ে বিনিয়োগ করতে পারবেন। তবে ধীরে ধীরে টাকার পরিমাণ বাড়ানো ভালো।

শেয়ারবাজার থেকে শেয়ার কখন কিনব ?

 আশাকরি এতক্ষণ শেয়ার মার্কেট / share market সম্পর্কে আপনার কিছু ধারনা হয়েছে। তাহলে চলুন এবার জেনে নিই শেয়ার বাজার থেকে শেয়ার আমরা কিভাবে কিনবো।
শেয়ার মার্কেট বা শেয়ার কেনাবেচা করতে গেলে প্রথমেই আমি বলব আপনার এই বিষয়ে ভালো অভিজ্ঞতা প্রয়োজন। এবং বিষয়গুলি ভালোভাবে বুঝতে হবে যে কখন আপনাকে শেয়ার কিনতে হবে বা বিক্রি করতে হবে।
যখন আপনার এই সকল বিষয়ে সামান্য পরিমাণে ধারণা বেড়ে যাবে তখন আপনি শেয়ার মার্কেটে টাকা লাগাতে পারবেন। এই সকল ধারণা যদি আপনার না থাকে তবে আপনি টাকা লাগালেও লস হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
যদি শেয়ার মার্কেট সম্পর্কে আপনার আগ্রহ থেকে থাকে তবে প্রতি মুহূর্তে লক্ষ্য রাখতে হবে শেয়ার মার্কেটে কোন কোম্পানির শেয়ারের মূল্য কমছে বাড়ছে।
প্রতিমুহূর্তে বা প্রতিদিন শেয়ারের বাজারদর লক্ষ্য রাখতে গেলে আপনি ইকোনমিক্স টাইমস নিউজ পেপার টি ফলো করতে পারেন। আবার প্রতি মুহূর্তে শেয়ার বাজারের দর দেখতে গেলে আপনি আপনার টিভি থেকে এনডিটিভি চ্যানেলটি লক্ষ্য করতে পারেন।
বিশেষত এই দুটি মাধ্যম যদি আপনি প্রতিদিন এবং প্রতিমুহূর্তে লক্ষ্য রাখেন তাহলে আপনার শেয়ার কেনার আগেই এ সম্পর্কে অনেক ধারণা জন্মাবে যে কি করে এবং কখন শেয়ারবাজার থেকে শেয়ার কিনব।
আমি আগেই বলেছি এইখানে যেমন লাভের সম্ভাবনা থাকে ঠিক একই রকম ভাবে প্রচুর সম্ভাবনা থাকে লস হবার। এই কারণে কোন বিষয় না জেনে বা না বুঝে এখানে টাকা লাগানো উচিত নয়। প্রতি মুহূর্তে শেয়ার বাজার বা শেয়ার মার্কেট বিষয়টি ঝুঁকিপূর্ণ একটি বিষয়।
যেমন একটি ঝুঁকির বিষয়ে আলোচনা করতে চাই সেটি হল ধরুন আপনি একটি সামান্য 1000 টাকার শেয়ার কিনে লস করলেন। আপনার মনের ভিতর কিন্তু এটি কাজ করবে যে ঐ লোকটিকে কি করে আমি পুনরায় তুলে নিয়ে আসতে পারি। এই কারণে আপনি প্রতি মুহূর্তে চাইবেন যে বেশি পরিমাণ টাকা লাগিয়ে ওই টাকাটা তুলে আনার জন্য।
কিন্তু এটি আপনার আরও বেশি বিপদের মুখে ঠেলে দিতে পারে। এই কারণে কখনোই লস হয়ে যাওয়া বিষয়টিকে বেশি পরিমাণে টাকা লাগিয়ে তুলতে যাওয়া শেয়ার মার্কেটে উচিত নয় বলে আমি মনে করি।

Support Level কি ?

কোন শেয়ার মার্কেটে / share market কোন কোম্পানির শেয়ার ওই মুহূর্তে কতখানি কমে যেতে পারে তা হলো সাপোর্ট লেভেল। সাপোর্ট লেভেল কে তৈরি করা হয় ক্রেতার তার উপর নির্ভর করে।

একটি সাপোর্ট লেভেল / support level এর জন্য শেয়ার মার্কেটে এর নির্দিষ্ট সীমা রেখা করে দেয়া হয় যা সবচেয়ে নিচে কে নির্দেশ করে থাকে এবং অবশ্যই একটি সময়সীমার মধ্যে একে নির্ধারণ করা হয়।

সমগ্র বেচাকেনার নিরিখে এই সাপোর্ট লাইনটি বা নির্দিষ্ট সীমারেখাটি উপরে বা নিচে নামতে পারে। কিন্তু এই সাপোর্ট লেভেল কে কিভাবে গণনা করা হয়, সাপোর্ট লেভেল কে গণনা করার বিষয়টি হলো – সাপোর্ট লেভেল এমন একটি সীমারেখা যেখানে বিক্রেতা পরিমাণ কম হয় কিন্তু ক্রেতার পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।

Resistance Level কি ?

Resistance বা Resistance Level হল কোন স্টক মার্কেটের এমন একটি উচ্চ সীমারেখা যেখানে গিয়ে প্রায় সকল বিক্রেতা তাদের কোম্পানির শেয়ার কে বিক্রি করতে চাই।

কেমন থাকবে Resistance Level কেমন থাকবে তা নির্ভর করে টাকার অ্যাকশন এর উপর। এটি অনেক টেকনিক্যাল বিষয় গুলি কে নিয়ন্ত্রণ করে রাখে – যেমন ট্রেন্ডলাইন, মুভিং এভারেজ, আইডেন্টিফাই ইত্যাদি।

Support level আর Resistance Level এর মধ্যে পার্থক্য হল তালিকায়, এই দুটি লেভেল আলাদা আলাদা প্রাইস পয়েন্ট কে দেখে থাকে। স্টক মার্কেট শেয়ার মার্কেট করতে গেলে এই দুটি বিষয়কে যথেষ্ট গুরুত্ব দিতে হবে।

Resistance Level কে আমরা বোঝাতে গেলে বলতে পারি এটি হলো তালিকায় থাকা একটি এমন সীমারেখা যেখানে তিনি ক্রেতার থেকে বিক্রেতারা বেশি পরিমাণে তাদের শেয়ার বিক্রি করতে চাই।

যেহেতু একই সময়ে অনেকগুলো কোম্পানির শেয়ার এখানে বিক্রি করার জন্য বিক্রেতারা আসে তাই এই মুহূর্তে শেয়ার মার্কেট এর দাম কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

Share Market Down কেন হয় ?

কখনো কখনো আমরা শুনে বা দেখে থাকি যে শেয়ার মার্কেট এর দাম অনেক কমে গেছে বা শেয়ার মার্কেট এর দাম কখনও বেড়ে যায়। কিন্তু কেন এমন হয় চলুন দেখে নিই –

১) শেয়ার মার্কেট / share market কখনো কখনো ডাউন হয়ে যায় এর জন্য প্রধানত যে কারণগুলি দায়ী তার মধ্যে অন্যতম হলো যদি বিশ্বে এমন কোন ঘটনা দুর্ঘটনা ঘটে থাকে যার জন্য দেশের আন্তর্জাতিক অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তখন শেয়ার মার্কেট পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

কারণ আন্তর্জাতিক বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেখানে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যেমন বর্তমানে করুণা মহামারী জন্য সমস্ত বিশ্বের আন্তর্জাতিক বাজারে এরকম অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।

২) কখনো কখনো এমন অবস্থা সৃষ্টি হয় যখন যারা শেয়ার মার্কেট কিনতে চাই তাদের হাতে টাকা থাকে না। কখনো দেশীয় বাণিজ্যে এমন সমস্যা সৃষ্টি হয় যখন ক্রেতারা পয়সা বিনিয়োগ করতে চায় না তখন শেয়ার মার্কেট এর দাম কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

৩) কখনো কখনো কিছু কোম্পানি বা শেয়ারহোল্ডার তারা আগামী দিনের রসের কথা চিন্তা করে শেয়ার মার্কেটে তাদের শেয়ার খুব কম দামে বেশি দিতে উদ্যত হয়। এই সময় শেয়ার মার্কেটে ওই কোম্পানির শেয়ার মূল্য অনেক কমে যায়।

শেয়ার বাজার কি হালাল ?

হালাল হওয়ার জন্য কয়েকটি শর্ত

  1. যেসব কোম্পানির শেয়ার ক্রয় করা হচ্ছে ওইসব কোম্পানি প্রকৃতপক্ষে বিদ্যমান থাকতে হবে।
  2. হালাল এবং বৈধ হতে হবে কোম্পানির মূলধন বা সম্পদ।
  3. এসব কোম্পানির ব্যবসা হালাল হতে হবে।
  4. শেয়ার ক্রয়ের সময় অবশ্যই বেচাকেনার সকল নিয়ম নীতি বিদ্যমান থাকতে হবে।
  5. কোম্পানীর সমস্ত লাভ কোম্পানির অংশীদারদের মাঝে তার অংশ অনুপাতে বন্টন করতে হবে।
  6. কোম্পানি কোন সুদী ব্যবসার সাথে জড়িত না থাকতে হবে।

এ সমস্ত শর্ত যদি পাওয়া যায় তাহলে আশা করি শেয়ার মার্কেট এর মধ্যে বিনিয়োগ করা হালাল হবে।

পরিশেষে বলব : উপরের উল্লেখিত আলোচনা অর্থাৎ শেয়ার মার্কেট কি  ? এটা কিভাবে কাজ করে ? আরো নানান বিষয় আলোচনা করেছি। যদি আমার আলোচনা ভালো লাগে তাহলে কমেন্ট করবেন। ধন্যবাদ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!