শিক্ষা

সার্ভার কি? Server এর প্রকারভেদ ও কাজ করার পদ্ধতি

সার্ভার আজকের ডিজিটাল যুগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি। প্রতিদিন আমরা ইন্টারনেটে যেসব ওয়েবসাইট ব্যবহার করি, মেইল পাঠাই বা ক্লাউড স্টোরেজে ডেটা রাখি, সবকিছুর পেছনে রয়েছে সার্ভারের অবদান। কিন্তু অনেকেই জানে না, server কি এবং এটি কীভাবে কাজ করে।

সহজভাবে বলা যায়, সার্ভার হলো একটি শক্তিশালী কম্পিউটার বা প্রোগ্রাম যা অন্যান্য কম্পিউটার বা ক্লায়েন্টদের (যেমন আপনার ল্যাপটপ, মোবাইল) জন্য ডেটা, ফাইল বা সার্ভিস সরবরাহ করে। উদাহরণস্বরূপ, যখন আপনি কোনো ওয়েবসাইটে ভিজিট করেন, ওয়েব সার্ভার সেই ওয়েবপেজের ডেটা আপনার ব্রাউজারে পাঠায়।

সার্ভারের ব্যবহার শুধু ওয়েব হোস্টিং বা ইমেইল প্রেরণেই সীমাবদ্ধ নয়। ফাইল সার্ভার, ডাটাবেস সার্ভার এবং ক্লাউড সার্ভারের মাধ্যমে আমাদের দৈনন্দিন জীবন অনেক সহজ হয়ে গেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা, ব্যাংকিং এবং স্বাস্থ্যসেবা—প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে সার্ভারের প্রয়োজন আছে।

আজকের ব্লগে আমরা বিস্তারিতভাবে দেখব: সার্ভারের প্রকারভেদ, কীভাবে এটি কাজ করে, এবং কোন সার্ভার কোন ক্ষেত্রে বেশি ব্যবহার হয়। এছাড়া সার্ভার ম্যানেজমেন্ট, নিরাপত্তা, এবং আধুনিক ট্রেন্ড সম্পর্কেও আলোচ্য হবে।

Contents hide

সার্ভার কি?

সার্ভার হলো একটি শক্তিশালী কম্পিউটার বা সফটওয়্যার প্রোগ্রাম যা ক্লায়েন্টদের (যেমন আপনার কম্পিউটার, মোবাইল বা অন্যান্য ডিভাইস) জন্য বিভিন্ন সার্ভিস এবং ডেটা সরবরাহ করে। সহজ কথায়, এটি হলো “ডেটা সরবরাহকারী” বা “সেবা প্রদানকারী” যন্ত্র বা প্রোগ্রাম।

কেন সার্ভার গুরুত্বপূর্ণ?

আজকের ডিজিটাল পৃথিবীতে প্রতিদিন আমরা যে সকল সার্ভিস ব্যবহার করি—ইমেইল, ওয়েবসাইট ভিজিট, ক্লাউড স্টোরেজ, অনলাইন ব্যাংকিং—সবকিছুর পেছনে সার্ভারের অবদান আছে। উদাহরণস্বরূপ, যখন আপনি কোনো ওয়েবসাইটে যান, ওয়েব সার্ভার সেই ওয়েবপেজের ডেটা আপনার ব্রাউজারে পাঠায়। এছাড়া ফাইল সার্ভার ফাইল শেয়ার করতে, ডাটাবেস সার্ভার তথ্য সংরক্ষণ ও প্রসেস করতে সাহায্য করে।

সার্ভারের বৈশিষ্ট্য

    1. নির্ভরযোগ্যতা: সার্ভার ২৪/৭ চালু থাকে যাতে ক্লায়েন্ট যে কোনো সময় ডেটা বা সার্ভিস পেতে পারে।
    2. উচ্চ ক্ষমতা: সাধারণ কম্পিউটারের চেয়ে বেশি প্রসেসিং এবং স্টোরেজ ক্ষমতা থাকে।
    3. নিরাপত্তা: ডেটা সংরক্ষণ ও নিরাপদ ট্রান্সফার নিশ্চিত করা হয়।
    4. সার্ভিস প্রদান: ক্লায়েন্টের অনুরোধ অনুযায়ী দ্রুত তথ্য সরবরাহ করে।

সার্ভারের কাজের মূল পদ্ধতি

সার্ভার মূলত ক্লায়েন্টদের (যেমন কম্পিউটার, মোবাইল, ট্যাব) জন্য ডেটা, ফাইল বা সার্ভিস সরবরাহ করে। এটি যে ভাবে কাজ করে তা বোঝার জন্য “Client-Server Model” বা ক্লায়েন্ট-সার্ভার মডেল বুঝা গুরুত্বপূর্ণ।

১. ক্লায়েন্ট-সার্ভার মডেল

ক্লায়েন্ট-সার্ভার মডেল হলো এমন একটি পদ্ধতি যেখানে ক্লায়েন্ট একটি অনুরোধ (request) পাঠায় এবং সার্ভার সেই অনুরোধের উত্তর (response) পাঠায়। উদাহরণস্বরূপ:

    • আপনি যখন ওয়েব ব্রাউজারে কোনো ওয়েবসাইট খুলেন, এটি একটি ক্লায়েন্ট অনুরোধ।
    • ওয়েব সার্ভার সেই অনুরোধ গ্রহণ করে এবং ওয়েবপেজের ডেটা আপনার ব্রাউজারে পাঠায়।

২. সার্ভারের কাজের ধাপসমূহ

    1. অনুরোধ গ্রহণ (Request Handling): সার্ভার ক্লায়েন্টের অনুরোধ গ্রহণ করে।
    2. প্রসেসিং (Processing): সার্ভার ডেটা প্রসেস করে বা প্রয়োজনীয় সার্ভিস প্রস্তুত করে।
    3. ডেটা প্রেরণ (Response Delivery): প্রসেস করা ডেটা ক্লায়েন্টের কাছে পাঠানো হয়।
    4. লগিং ও মনিটরিং (Logging & Monitoring): সার্ভার কার্যক্রম রেকর্ড করে এবং পারফরম্যান্স মনিটর করে।

৩. উদাহরণ:

ধরা যাক, আপনি অনলাইনে একটি ভিডিও স্ট্রিম করছেন।

    • ভিডিও প্লেয়ার একটি ক্লায়েন্ট অনুরোধ পাঠায়।
    • ভিডিও সার্ভার ভিডিও ফাইল প্রসেস করে এবং আপনার ডিভাইসে পাঠায়।
    • সার্ভার সেই সময় ভিডিও ডেটা স্ট্রিম করার জন্য ব্যান্ডউইথ ও স্টোরেজ নিয়ন্ত্রণ করে।

৪. সার্ভারের গুরুত্ব

সার্ভারের সঠিক কাজের ধারা ছাড়া ওয়েবসাইট, অ্যাপ বা নেটওয়ার্ক কার্যক্রম স্থিতিশীল থাকে না। ফাইল সার্ভার, ডাটাবেস সার্ভার, এবং ক্লাউড সার্ভারের মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদান দ্রুত ও নিরাপদ হয়।

আরও পড়ুন-প্রটোকল কি? প্রটোকলের কাজ কি?

সার্ভারের হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার উপাদান

সার্ভার শুধুমাত্র একটি শক্তিশালী কম্পিউটারই নয়, এটি বিভিন্ন হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার উপাদানের সমন্বয়ে কাজ করে। এই উপাদানগুলো একত্রে সার্ভারের নির্ভরযোগ্যতা, কার্যক্ষমতা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।

১. সার্ভারের হার্ডওয়্যার উপাদান

  1. প্রসেসর (CPU)
    • সার্ভারের মস্তিষ্ক হিসেবে কাজ করে।
    • ওয়েব সার্ভার, ডাটাবেস সার্ভার বা ফাইল সার্ভারের জন্য শক্তিশালী CPU প্রয়োজন যাতে একসাথে অনেক অনুরোধ প্রক্রিয়াকরণ করা যায়।
  2. মেমরি (RAM)
    • দ্রুত ডেটা অ্যাক্সেস ও প্রোসেসিং নিশ্চিত করে।
    • বেশি ব্যবহারকারীর অনুরোধ হ্যান্ডল করতে বেশি RAM গুরুত্বপূর্ণ।
  3. স্টোরেজ (HDD/SSD)
    • ডেটা সংরক্ষণ এবং দ্রুত retrieval এর জন্য ব্যবহৃত হয়।
    • ক্লাউড সার্ভার এবং ডাটাবেস সার্ভারে SSD প্রায়শই ব্যবহৃত হয় দ্রুত পারফরম্যান্সের জন্য।
  4. নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস
    • সার্ভারকে ইন্টারনেট বা লোকাল নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত রাখে।
    • ওয়েব সার্ভার ও ফাইল সার্ভারের জন্য উচ্চ গতি ও নির্ভরযোগ্য কানেকশন অত্যন্ত জরুরি।

২. সার্ভারের সফটওয়্যার উপাদান

  1. অপারেটিং সিস্টেম (OS)
    • Windows Server, Linux Server, অথবা Unix-ভিত্তিক OS সার্ভারের ভিত্তি।
    • বিভিন্ন সার্ভার টাইপের জন্য আলাদা OS ব্যবহার করা হয়।
  2. সার্ভার সফটওয়্যার
    • ওয়েব সার্ভার সফটওয়্যার: Apache, Nginx, IIS
    • ডাটাবেস সার্ভার সফটওয়্যার: MySQL, PostgreSQL, Oracle
    • ফাইল সার্ভার সফটওয়্যার: Samba, FTP সার্ভিস
  1. কনফিগারেশন ও মনিটরিং টুলস
    • সার্ভারের পারফরম্যান্স, সিকিউরিটি এবং ব্যাকআপ মনিটরিং করে।
    • উদাহরণ: Nagios, Zabbix, Prometheus

৩. বাস্তব উদাহরণ

একটি ই-কমার্স কোম্পানি তাদের ওয়েবসাইট পরিচালনার জন্য সার্ভার ব্যবহার করে:

    • ওয়েব সার্ভার হোস্ট করে প্রোডাক্ট পেজ।
    • ডাটাবেস সার্ভার গ্রাহকের তথ্য সংরক্ষণ করে।
    • ফাইল সার্ভার ছবিসহ ফাইল শেয়ার নিশ্চিত করে।
    • OS এবং মনিটরিং টুলস সার্ভারকে নিরাপদ ও স্থিতিশীল রাখে।

Server কিভাবে কাজ করে?

সার্ভার কিভাবে কাজ করে তা বোঝার জন্য মূলত ক্লায়েন্ট-সার্ভার আর্কিটেকচার এবং ডেটা প্রসেসিং প্রক্রিয়া বুঝা জরুরি। সার্ভার হলো সেই শক্তিশালী কম্পিউটার বা সফটওয়্যার যা ক্লায়েন্টদের অনুরোধ অনুযায়ী ডেটা বা সার্ভিস সরবরাহ করে।

সার্ভার কিভাবে কাজ করে?

১. ক্লায়েন্ট থেকে সার্ভারে অনুরোধ (Request)

প্রথম ধাপ হলো ক্লায়েন্টের অনুরোধ পাঠানো। উদাহরণ:

    • আপনি ওয়েব ব্রাউজারে কোনো ওয়েবসাইট খুলতে চাইলে, এটি একটি HTTP অনুরোধ হিসেবে সার্ভারে পৌঁছায়।
    • অনুরোধের মধ্যে থাকে ইউজার ইনপুট, যেমন লগইন তথ্য, সার্চ কুয়েরি বা পেইজ রিকোয়েস্ট।

২. সার্ভারে প্রসেসিং (Processing)

সার্ভার প্রাপ্ত অনুরোধ অনুযায়ী ডেটা প্রক্রিয়াকরণ করে।

    • ওয়েব সার্ভার: ওয়েবপেজের HTML, CSS, JavaScript পাঠায়।
    • ডাটাবেস সার্ভার: গ্রাহকের তথ্য খুঁজে বের করে এবং প্রয়োজনীয় তথ্য ক্লায়েন্টকে দেয়।
    • ফাইল সার্ভার: ফাইল রিকোয়েস্ট অনুযায়ী ডাউনলোড বা শেয়ার নিশ্চিত করে।

৩. রেসপন্স পাঠানো (Response)

প্রসেসিং শেষ হলে সার্ভার ক্লায়েন্টকে রেসপন্স পাঠায়।

    • ওয়েবপেজ লোড, ফাইল ডাউনলোড, ভিডিও স্ট্রিম বা ডেটা আপডেটের মাধ্যমে ক্লায়েন্ট সেই রেসপন্স পায়।
    • সার্ভারের কাজ ঠিক থাকলে response দ্রুত এবং নির্ভুল হয়।

৪. লগিং ও মনিটরিং (Logging & Monitoring)

    • সার্ভার প্রতিটি অনুরোধের লগ রাখে এবং পারফরম্যান্স মনিটর করে।
    • এটি সার্ভারের সুরক্ষা, ব্যাকআপ এবং সমস্যা সমাধানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

৫. বাস্তব উদাহরণ

ধরা যাক, একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইটে আপনি প্রোডাক্ট দেখতে চান:

    1. ব্রাউজার রিকোয়েস্ট পাঠায় → ওয়েব সার্ভার গ্রহণ করে।
    2. সার্ভার ডাটাবেস সার্ভার থেকে প্রোডাক্ট তথ্য সংগ্রহ করে।
    3. ফাইল সার্ভার ছবি ও অন্যান্য ফাইল পাঠায়।
    4. সবশেষে আপনার ব্রাউজারে সম্পূর্ণ প্রোডাক্ট পেজ লোড হয়।

এভাবে সার্ভার দ্রুত এবং নির্ভুলভাবে ক্লায়েন্টকে সেবা প্রদান করে।

সার্ভারের প্রধান প্রকারভেদ

সার্ভার বিভিন্ন ধরণের হয় এবং প্রতিটি সার্ভারের কাজ আলাদা। সার্ভারের প্রকারভেদ জানা থাকলে কোন ব্যবসা বা ব্যক্তিগত প্রয়োজনে কোন সার্ভার ব্যবহার করতে হবে তা সহজে বোঝা যায়।

১. ওয়েব সার্ভার (Web Server)

    • ওয়েব সার্ভার হলো এমন সার্ভার যা ওয়েবপেজ বা ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন ক্লায়েন্টকে সরবরাহ করে।
    • উদাহরণ: Apache, Nginx, IIS
    • কাজ: ওয়েবপেজের HTML, CSS, JavaScript এবং মিডিয়া ফাইল পাঠানো।

২. ফাইল সার্ভার (File Server)

    • ফাইল সার্ভার হলো সেই সার্ভার যা ফাইল সংরক্ষণ এবং শেয়ারিং এর জন্য ব্যবহার করা হয়।
    • উদাহরণ: FTP সার্ভার, Samba
    • কাজ: একাধিক ব্যবহারকারীকে ফাইল অ্যাক্সেস এবং শেয়ার করার সুযোগ দেয়।

৩. ডাটাবেস সার্ভার (Database Server)

    • ডাটাবেস সার্ভার ডেটা সংরক্ষণ, পরিচালনা এবং অনুরোধ অনুযায়ী তথ্য সরবরাহ করে।
    • উদাহরণ: MySQL, PostgreSQL, Oracle
    • কাজ: ব্যবহারকারীর তথ্য, প্রোডাক্ট ডেটা, লেনদেন সংরক্ষণ।

৪. ইমেইল সার্ভার (Email Server)

    • ইমেইল সার্ভার ইমেইল প্রেরণ, গ্রহণ ও সংরক্ষণে ব্যবহৃত হয়।
    • উদাহরণ: Microsoft Exchange, Postfix
    • কাজ: ইমেইল ডেলিভারি নিশ্চিত করা।

৫. ক্লাউড সার্ভার (Cloud Server)

    • ক্লাউড সার্ভার হলো ভার্চুয়াল সার্ভার যা ইন্টারনেটে হোস্ট করা হয়।
    • উদাহরণ: Amazon AWS, Google Cloud, Microsoft Azure
    • কাজ: বিভিন্ন সার্ভিস, স্টোরেজ এবং প্রসেসিং ক্ষমতা অনলাইনে সরবরাহ করা।

৬. নেটওয়ার্ক সার্ভার (Network Server)

    • নেটওয়ার্ক সার্ভার নেটওয়ার্ক সংযোগ ও রিসোর্স শেয়ারিং নিয়ন্ত্রণ করে।
    • উদাহরণ: Domain Controller, DHCP সার্ভার।
    • কাজ: ইউজার অথেনটিকেশন, প্রিন্টার বা ফাইল শেয়ারিং নিয়ন্ত্রণ।

সার্ভার ডাউন কেন হয়?

সার্ভার ডাউন বা সার্ভার বন্ধ হয়ে যাওয়া হলো এমন একটি অবস্থা যেখানে সার্ভার ক্লায়েন্টের অনুরোধ পূরণ করতে ব্যর্থ হয়। এটি ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট, ব্যবসার ওয়েবসাইট বা অনলাইন সার্ভিসে বড় সমস্যা তৈরি করতে পারে। সার্ভার ডাউন হওয়ার বিভিন্ন কারণ রয়েছে।

Server ডাউন কেন হয়?

১. হার্ডওয়্যার সমস্যা

    • প্রসেসর, RAM বা স্টোরেজ ডিভাইসের ত্রুটি।
    • পাওয়ার সাপ্লাই বা নেটওয়ার্ক কার্ডের সমস্যা।
    • উদাহরণ: হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে যাওয়া বা হার্ডড্রাইভ ক্র্যাশ।

২. সফটওয়্যার বা কনফিগারেশন সমস্যা

    • সার্ভার OS বা অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যারে বাগ।
    • ভুল কনফিগারেশন বা আপডেটের ত্রুটি।
    • উদাহরণ: ওয়েব সার্ভার সফটওয়্যার আপডেটের সময় সার্ভিস বন্ধ হয়ে যাওয়া।

৩. ট্রাফিক অতিরিক্ত হওয়া (High Traffic Load)

    • হঠাৎ অনেক ক্লায়েন্ট একসাথে সার্ভারে অনুরোধ পাঠালে সার্ভার ওভারলোড হয়ে যেতে পারে।
    • উদাহরণ: একটি জনপ্রিয় ই-কমার্স সেল বা নতুন প্রোডাক্ট লঞ্চের সময় ওয়েবসাইট ধীর বা বন্ধ হয়ে যাওয়া।

৪. নেটওয়ার্ক সমস্যা

    • ইন্টারনেট বা লোকাল নেটওয়ার্কে সমস্যা।
    • DNS, IP, বা রাউটিং ত্রুটি।
    • উদাহরণ: সার্ভার ঠিক থাকলেও ইউজারের কাছে ডেটা পৌঁছায় না।

৫. সাইবার আক্রমণ (Cyber Attack)

    • DDoS (Distributed Denial of Service) আক্রমণ সার্ভারকে অপ্রাপ্য করে তোলে।
    • Malware বা র‍্যানসমওয়্যার আক্রমণ সার্ভারের কাজ ব্যাহত করতে পারে।

৬. ব্যাকআপ বা রক্ষণাবেক্ষণ কাজ

    • নিয়মিত সার্ভার আপডেট, ব্যাকআপ বা রক্ষণাবেক্ষণ চলাকালীন সার্ভার অস্থায়ীভাবে বন্ধ থাকতে পারে।

কীভাবে রোধ করা যায়:

    • হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার মনিটরিং।
    • ট্রাফিক লোড অনুযায়ী স্কেলিং (Cloud server auto-scaling)।
    • Firewall, Antivirus, এবং DDoS প্রটেকশন।
    • ব্যাকনিয়মিত আপ সার্ভার বা redundant server setup

উপসংহার

সার্ভার আজকের ডিজিটাল পৃথিবীর অপরিহার্য প্রযুক্তি। ওয়েবসাইট, অ্যাপ্লিকেশন, ক্লাউড স্টোরেজ, ইমেইল সার্ভিস—সবকিছুর পেছনে সার্ভারের অবদান আছে। সার্ভার শুধুমাত্র ডেটা সরবরাহ করে না, এটি আমাদের দৈনন্দিন কাজকে দ্রুত, নিরাপদ এবং কার্যকর করে তোলে।

আজকের ব্লগে আমরা দেখেছি:

    • Server কি এবং কিভাবে কাজ করে।
    • সার্ভারের প্রধান প্রকারভেদ: ওয়েব সার্ভার, ফাইল সার্ভার, ডাটাবেস সার্ভার, ইমেইল সার্ভার, ক্লাউড সার্ভার এবং নেটওয়ার্ক সার্ভার।
    • সার্ভারের হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার উপাদান, যেমন CPU, RAM, স্টোরেজ, OS এবং মনিটরিং টুলস।
    • Server ডাউন হওয়ার কারণ এবং এর প্রতিরোধ ব্যবস্থা।
    • বাস্তব জীবনের উদাহরণ, যেখানে সার্ভারগুলি বিভিন্ন কার্য সম্পাদন করে।

সার্ভার ম্যানেজমেন্ট ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রতিটি ব্যবসা ও ব্যবহারকারীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ, সঠিক কনফিগারেশন, ব্যাকআপ, নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং পর্যাপ্ত ট্রাফিক হ্যান্ডলিং সার্ভারকে স্থিতিশীল রাখে।

সার্ভারের প্রকারভেদ ও কাজের পদ্ধতি বোঝা ব্যবসা ও ব্যক্তিগত প্রয়োজনে সঠিক সার্ভার বেছে নিতে সাহায্য করে। আধুনিক ট্রেন্ড যেমন ক্লাউড সার্ভার, ভার্চুয়ালাইজেশন এবং AI-based সার্ভার ম্যানেজমেন্ট আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।

সবশেষে, একটি শক্তিশালী, নিরাপদ এবং দক্ষ সার্ভার ব্যবস্থাপনা কেবল প্রযুক্তি নয়, এটি আপনার ডিজিটাল সফলতার মূল চাবিকাঠি।

FAQs (প্রশ্নোত্তর)

সার্ভার কি এবং এটি কেন প্রয়োজন?

সার্ভার হলো একটি শক্তিশালী কম্পিউটার বা সফটওয়্যার যা ক্লায়েন্টদের জন্য ডেটা, ফাইল বা সার্ভিস সরবরাহ করে। এটি ওয়েবসাইট হোস্টিং, ডাটাবেস সংরক্ষণ, ফাইল শেয়ারিং এবং অন্যান্য অনলাইন কার্যক্রমে অপরিহার্য।

ওয়েব সার্ভার, ফাইল সার্ভার এবং ডাটাবেস সার্ভারের মধ্যে পার্থক্য কী?

    • ওয়েব সার্ভার: ওয়েবপেজ বা ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন ক্লায়েন্টকে সরবরাহ করে।
    • ফাইল সার্ভার: ফাইল সংরক্ষণ ও শেয়ারিংয়ের কাজ করে।
    • ডাটাবেস সার্ভার: তথ্য সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ এবং ক্লায়েন্টকে সরবরাহ করে।

Server ডাউন হওয়ার প্রধান কারণগুলো কী?

হার্ডওয়্যার ত্রুটি, সফটওয়্যার বাগ, অতিরিক্ত ট্রাফিক, নেটওয়ার্ক সমস্যা, সাইবার আক্রমণ এবং রক্ষণাবেক্ষণের কারণে সার্ভার ডাউন হতে পারে।

সার্ভারের নিরাপত্তা ও রক্ষণাবেক্ষণ কিভাবে নিশ্চিত করা যায়?

নিয়মিত ব্যাকআপ, সফটওয়্যার আপডেট, মনিটরিং টুলস ব্যবহার, ফায়ারওয়াল ও Antivirus ইনস্টলেশন এবং ট্রাফিক লোড অনুযায়ী স্কেলিং সার্ভারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।

ক্লাউড সার্ভার এবং ঐতিহ্যবাহী সার্ভারের মধ্যে পার্থক্য কী?

ক্লাউড সার্ভার ভার্চুয়াল এবং ইন্টারনেটে হোস্ট করা হয়, যা স্কেলেবল এবং অন-ডিমান্ড সার্ভিস প্রদান করে। ঐতিহ্যবাহী সার্ভার সাধারণত ফিজিক্যাল হোস্টে স্থির থাকে এবং স্কেলিং সীমিত।

 

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!