প্রযুক্তির খবর

ডোমেইন ও হোস্টিং কি? বিস্তারিত জেনে নিন

ডোমেইন ও হোস্টিং, অনেকের কাছেই শব্দ দুটি পরিচিত। বিশেষ করে যারা একটু অনলাইনে ওয়েবসাট সম্পর্কে ঘাটাঘাটি করে তাদের কাছে এটি বেশি পরিচিত। ডোমেইন এবং হোস্টিং নিয়ে আপনি যদি খুব বেশি না জেনে থাকেন তবে চিন্তার কিছু নেই। এই আর্টিকেলটি আপনার জন্যই তৈরি। এগুলো জানা ও বোঝা খুবই জরুরী হয়ে যায় যখন কেউ একটি নতুন ওয়েবসাইট খুলতে চায়। বর্তমানে অনেকেই ওয়েবসাইট বিজনেসের দিকে ধাবিত হচ্ছে। আপনিও যদি একটি ওয়েবসাইট বিজনেস করতে চান বা নিজস্ব প্রয়োজনে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান তবে এই বিষয়গুলো সম্পর্কে আপনাকে ভালোভাবে জানতে হবে। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে ডোমেইন ও হোস্টিং নিয়ে আপনার মনে জাগা প্রশ্ন গুলোর জেনে নিই।

ডোমেইন কি?

কোন একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হলে প্রথমেই সেটির একটি নাম বাছাই করতে হয়। সেটা আমরা সবাই জানি। মুলত ওয়েবসাইটের এই নামকেই ডোমেইন বলা যায়। ডোমেইন শব্দের অর্থ হলো নাম বা ঠিকানা। এক্ষেত্রে নাম বলতে ওয়েবসাইটের নামকে বোঝায়। সহজভাবে বলতে গেলে, যে নামের মাধ্যমে কোন ওয়েবসাইটকে খুজে বের করা যায় তাই হলো ডোমেইন। উদাহরনস্বরূপ, ফেসবুককে আমরা www.facebook.com নামক ঠিকানা দিয়ে খুজে পাই। আবার, ইউটিউবের ক্ষেত্রে www.youtube.com নামক ঠিকানার মাধ্যমে আমরা ইউটিউবকে খুজে বের করতে পারি। এভাবে যে নির্দিষ্ট নাম বা ঠিকানার মাধ্যমে আমরা কোন ওয়েবসাইট ভিজিট করি সেটাই ঐ ওয়েবসাইটের ডোমেইন।

ডোমেইন শুধু .com এক্সটেনশন দিয়েই শেষ হবে এরকম কোন কথা নেই। বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ধরনের ডোমেইন এক্সটেনশন ব্যবহার করা হয়। যেমনঃ .org, .net, .info ইত্যাদি। ব্যবসা বা সাধারন ব্যবহারের জন্য .com ডোমেইন এক্সটেনশন ব্যবহার করা হয়। আবার, বিভিন্ন ধরনের সংগঠনের জন্য .org, নেটওয়ার্কিং সাইটের জন্য .net, ইনফরমেশন সাইন্টের জন্য .info ডোমেইন এক্সটেনশন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এগুলো ডোমেইন ওয়েবসাইট থেকে ক্রয় করতে হয়। আলাদা আলাদা ডোমেইনের জন্য আলাদা আলাদা মূল্য নির্ধারন করা হয়।

ডোমেইন নেইম ও আইপি অ্যাড্রেসের সম্পর্ক-

ডোমেইন নেম হচ্ছে একটি স্বতন্ত্র টেক্সট এড্রেস যা আইপি অ্যাড্রেস কে প্রতিনিধিত্ব করে। www.facebook.com এর পরিবর্তে 31.13.78.35 এই আইপি অ্যাড্রেস এর মাধ্যমেও facebook এর ওয়েবসাইট ব্রাউজ করা যায়। অর্থাৎ facebook ডোমেইন আইপি অ্যাড্রেস 31.13.78.35 কে প্রতিনিধিত্ব করছে। মানুষ আইপি অ্যাড্রেস ব্যবহার না করে ডোমেইন নেম ব্যবহার করে । কারণ একসাথে অনেক গুলো আইপি মনে রাখা কষ্টকর কিন্তু ডোমেইন নেম মনে রাখা সহজ।

ডোমেইনের ধরন

সাধারনত ডোমেইন নামের দুটি অংশ থাকে। ডট এর পূর্বের অংশকে ডোমেইন নাম এবং ডট এর পরের অংশকে টপ লেভেল ডোমেইন বলা হয়। যা ডোমেইন এর ধরণ নির্দেশ করে । অর্থাৎ, ডোমেইনটি কোন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হবে সেটা নির্দেশ করে।  নিচে কয়েকটি প্রাতিষ্ঠানিক ডোমেইনের উদাহরন দেওয়া হলোঃ-

টপ লেভেল ডোমেইনডোমেইন ধরন
.comবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান
.milমার্কিন সেনাবাহিনীর জন্য সংরক্ষিত
.govরাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান
.eduশিক্ষা প্রতিষ্ঠান
.netনেটওয়ার্ক সার্ভিস
.orgঅলাভজনক প্রতিষ্ঠান
.intআন্তর্জাতিক সংস্থা

কান্ট্রি ডোমেইন- ওয়েব অ্যাড্রেস এর একে বারে শেষের অংশ , যা ওয়েবসাইটটি কোন দেশের তা নির্দেশ করে। কান্ট্রি ডোমেইন সকল ওয়েবসাইটের জন্য অত্যাবশ্যকীয় নয়। যেমন- www.edupoint.com.bd । এই ওয়েব অ্যাড্রেস এর একে বারে শেষে bd লেখা আছে। অর্থাৎ এই ওয়েবসাইটটি বাংলাদেশের নির্দেশ করে। এই ধরনের আরো কিছু কান্টি ডোমেইনের উদাহরন নিম্নে দেওয়া হলোঃ-

কান্ট্রি কোডকান্ট্রি নেম
.bdBangladesh
.ukUnited Kingdom
.usUnited States
.inIndia
.auAustralia
.cnChina
.jpJapan
.ruRussia
.frFrance
.caCanada

হোস্টিং কি?

ডোমেইন কি সেটা এতক্ষনে হয়তো বুঝতে পেরেছেন। এখন তাহলে হোস্টিং কি সে বিষয়ে জানা যাক। এক কথায় হোস্টিং কি সেটা বলতে গেলে বলা যায়, ওয়েবসাইট বা ওয়েব পেজকে নির্দিষ্ট একটি ওয়েব সার্ভারে আপলোড করাকে হোস্টিং বলে। কিন্তু হোস্টিং এর ব্যাপারে সুস্পষ্ট ধারনা পেতে হলে আপনাকে এই আর্টিকেলের শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে। ধরুন আপনি একটি ডোমেইন কিনেছেন অর্থাৎ, আপনি আপনার ওয়েবসাইটের জন্য একটি নাম বা ঠিকানা কিনেছেন। এখন আপনার ওয়েবসাইটে যেসব তথ্য বা কন্টেন আছে বা থাকবে সেগুলো অবশ্যই কোন একটি স্টোরেজ ডিভাইস বা কম্পিউটারে রাখতে হবে। তাই না? এই তথ্য গুলো আপনি আপনার কম্পিটারেও রাখতে পারবেন। কিন্তু কোন ওয়েবসাইট সর্বদা খোলা রাখার জন্য তার ব্যাকাপ স্টোরেজ ডিভাইসটি সর্বদা চালু রাখতে হয়।

হোস্টিং কিভাবে কাজ করে

একইভাবে আপনার ওয়েবসাইটটিও সবসময় সক্রিয় রাখতে হলে আপনাকেও আপনার কম্পিউটারটি সব সময় চালু রাখতে হবে। কিন্তু আপনার কম্পিউটারটি সব সময় চালু রাখা তো আর আপনার পক্ষে সম্ভব না। তাই না? তাছাড়াও ঐ তথ্য গুলো যদি কোন ভাবে ডিলিট হয়ে যায় তবে আপনার ওয়েবসাইটের ভেতরের তথ্যগুলোও রিমুভ হয়ে যাবে। তাই আপনার ওয়েব সাইটের তথ্যগুলোকে এমন একটি কম্পিউটারে রাখতে হবে যেই কম্পিউটার দিনের ২৪ ঘন্টা, বছরের ৩৬৫ দিনই চালু থাকবে। আবার, যাতে কোন তথ্য রাখলে তা ডিলিট হয়ে যাওয়ারও কোন আশঙ্কা নেই। তেমন একটি সুপার কম্পিউটারে তথ্য রাখার সুযোগ হোস্টিং কোম্পানির মালিকেরা আপনাকে আমাকে দিয়ে থাকে। হোস্টিং কোম্পানিগুলো বছরে কিছু পরিমান টাকার বিনিময়ে আপনাকে এই সেবাটি দিয়ে থাকে। বিভিন্ন ধরনের কোম্পানি বিভিন্ন ধরনের হোস্টিং রেট ধার্য করে থাকে।

আশা করি ডোমেইন ও হোস্টিং সম্পর্কে সামান্য হলেও স্পষ্ট ধারনা পেয়েছেন। তথ্যপ্রযুক্ত বিষয়ে কোন কিছু সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে চাইলে নিচে কমেন্ট সেকশনে কমেন্ট করতে পারেন। প্রযুক্তির ভাষা কর্তৃক আপানার কমেন্টের যথা সম্ভব মূল্যায়ন করার চেষ্টা করা হবে। আজ এই পর্যন্তই। ধন্যবাদ।

আরও পড়ুন godaddy এবং bigrock থেকে ডোমেইন কিভাবে কিনবেন বা রেজিষ্ট্রেশন করবেন

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!