মোবাইল দিয়ে অনলাইনে ইনকাম করার উপায়
ঘরে বসে অনলাইনে ইনকাম করতে অনেকই চান। বিশেষ করে মেয়েরা চায় ঘরে বসে ইনকাম করতে। আবার অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে। কম্পিউটার ছাড়া কি ঘরে বসে অনলাইনে ইনকাম করা যাবে ? হ্যাঁ কম্পিউটার ছাড়াও ঘরে বসে ইনকাম করা যাবে । আজকের আর্টিকেলটিতে আলোচনা করা হবে কিভাবে মোবাইল দিয়ে অনলাইনে ইনকাম করতে পারবেন।
আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোনটি ছোটখাটো একটি কম্পিউটার। কম্পিউটারের বিভিন্ন অ্যাপের একটি করে এন্ড্রয়েড ভার্সন থাকে। যার মাধ্যমে বিভিন্ন অ্যাপস ডাউনলোড করে আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোনটি কে বানিয়ে ফেলতে পারেন ছোটখাটো একটি কম্পিউটার। অবিশ্বাস্য হলেও এটি সত্য মোবাইল দিয়ে আপনি মাসে ১৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন। আসুন জেনে নেই মোবাইল দিয়ে অনলাইনে ইনকাম করার উপায়:-
ইউটিউব থেকে আয়
অনলাইনে ইনকাম করার একটি জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে ইউটিউব। আপনার মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে সেই ভিডিও ইউটিউবে আপলোড দিয়ে আপনি খুব সহজেই ইনকাম করতে পারবেন। এক বছরে যদি সাবস্ক্রাইবার এক হাজার এবং ওয়াচ টাইম ৪ হাজার মিনিট হয় তাহলে আপনি মনিটাইজেশনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে আরেকটি কথা হল প্রতিটি ভিডিও আপনার নিজস্ব হতে হবে। অন্যের করা ভিডিও আপলোড দিলে ইউটিউবে কপিরাইট আসবে সে ক্ষেত্রে আপনি মনিটাইজেশন নাও পেতে পারেন। প্রথমে আপনাকে ভিডিও করতে হবে এবং ভিডিওগুলো খুব সহজেই বিভিন্ন অ্যাপস এর সাহায্যে এডিট করে নিতে পারেন। তারপর আপলোড দিয়ে এভাবে খুব সহজে মোবাইল দিয়ে অনলাইনে ইনকাম করতে পারবেন।
ওয়েবসাইট থেকে আয়
মোবাইল দিয়ে অনলাইনে ইনকাম করার উপায় এর মধ্যে এটি একটি আয় করার একটি জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে ওয়েবসাইট। যারা লেখালেখি তে অভ্যস্ত। তারা খুব সহজেই ওয়েবসাইট থেকে আয় করতে পারেন। এক্ষেত্রে ফ্রি এবং পেইড দুই ধরনের ওয়েবসাইট রয়েছে। ব্লগার ডট কম থেকে ফ্রিতে একটি আইডি খুলে নিতে পারেন । অথবা ডোমেইন হোস্টিং কিনে ওয়ার্ডপ্রেসের একটি ওয়েবসাইট তৈরী করতে পারেন।তারপর সেখানে প্রতিদিন লেখা দিতে পারেন । তবে সাবধান অন্যর কোনো লিখা কপি পেস্ট করে, আপনার ওয়েবসাইটে দিবেন না। সম্পূর্ণ ইউনিক এবং শ্রুতি মধুর লেখা হতে হবে। তাহলে ভিজিটর পড়তে বেশী আগ্রহী হবে। তারপর মনিটাইজেশন অন করে খুব সহজে অনলাইন থেকে ইনকাম করতে পারবেন।
ছবি ও ভিডিও বিক্রি করে আয়
ছবি তোলা এবং ভিডিও করা অনেকেরই শখ।এই শখকে কাজে লাগিয়ে খুব সহজে ইনকাম করতে পারবেন। বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ছবি ও ভিডিও বিক্রয় করা যায়। তবে সাবধান অন্যর কোনো ছবি বা ভিডিও কপি করা যাবে না। নিচে জনপ্রিয় কিছু সাইটের নাম দেওয়া হলঃ-
- ড্রিমস টাইম
- আই এম
- স্নাপওয়্যার
- শাটার স্ট্রোক
তাছাড়া ফেসবুকে কিছু ছবি ও ভিডিও বিক্রয়ের গ্রুপ রয়েছে। সেখানেও আপনি চাইলে আপনি আপনার তোলা ছবি এবং ভিডিও বিক্রয় করতে পারেন।
অনলাইনে টিউশনি করে
অনলাইনে অনেক ছাত্র-ছাত্রী পড়তে চাই। কোরনাকালীন সময়ের পর থেকে অনলাইনে কোচিং করার হার টাও বৃদ্ধি পেয়েছে। এখানে সুবিধা হলো ছাত্র-ছাত্রীরা ঘরে বসে কোচিং করতে পারে। সময় এবং অর্থ দুটোই বাঁচার কারণে অনেকেই ঘরে বসে কোচিং করতে চাই। বিশেষ করে বিবাহিত যারা অনার্স মাস্টার্স পড়ুয়া তারা বেশিরভাগই অনলাইন কে কোচিং করার জন্য সহজ মাধ্যম হিসেবে মনে করে। আপনি শিক্ষা রিলেটেড ফেসবুক গ্রুপ গুলোতে পোস্ট করে ছাত্র-ছাত্রী জোগাড় করতে পারেন।
তাছাড়া বিশেষ করে যারা মাদ্রাসা লাইনের তারা আন্তর্জাতিক মার্কেট গুলোতে আরবী টিউশনি করতে পারেন। গুগল মিটে বা জুৃমে একসঙ্গে অনেক ছাত্র-ছাত্রীর ক্লাস নেওয়া যায়।
ই-কমার্স এর মাধ্যমে
আগের যুগে ব্যবসা করাটা খুব জটিল প্রক্রিয়া ছিল। অনলাইনের এ যুগে ব্যবসা করাটা অনেকটা সহজ। ফেসবুক অ্যাপ ওপেন করলেই দেখা যায় কেউ শাড়ী, কেউবা কসমেটিকস আইটেম আবার অনেকে বেকিং আইটেম বিক্রি করছে। ক্রয়-বিক্রয়য়ে অনলাইন প্লাটফর্ম দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
আপনার সাধারণ ফেসবুক আইডি থেকে পেইজ ক্রিয়েট করে। প্রাথমিক দিকে অল্প কিছু পণ্য ক্রয় করে সেখানে আপলোড দিতে পারেন। ধীরে ধীরে বিক্রয় বাড়লে। আপনার পুঁজি বাড়িয়ে ব্যবসাটি বড় করতে পারেন।
মাইক্রোওয়ার্ক সাইট থেকে আয়
কিছু সাইট থেকে ছোট ছোট কাজ করে টাকা ইনকাম করা যায়।যেমন ছোট ছোট ডাটা এন্টি, ভিডিও দেখা,ভিডিও শেয়ার, ইমেইল তৈরি ইত্যাদি। এসব সাইটের সুবিধা হলো মোবাইল দিয়ে সহজে কাজ করা যায়।তবে এখান থেকে খুব বেশী ইনকাম করতে পারবেন না। যারা এখনো লেখাপড়া করছেন তারা লেখাপড়ার পাশাপাশি মাসে ৭ থেকে ১০ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারেন এই সাইট গুলো থেকে। দুইটি জনপ্রিয় মাইক্রো সাইট হলো:-
- মাইক্রো ওয়ার্কার্স
- পিকো ওয়ার্কার্স
রিসেলিং ব্যাবসা করে
ঝুঁকি হীন ব্যবসা করার অন্যতম একটি মাধ্যম হলো রিসেলিং ব্যবসা। আপনি অফলাইন মার্কেটের পন্যের ছবি ফেইসবুকে শেয়ার করতে পারেন। যখন কোনে ক্রেতা অর্ডার করবে আপনি পন্যেটি কিনে কিছুটা লাভরেখে ডেলিভারি দিবেন।মনে করেন ১ কেজি খেজুর ১০০ টাকা দিয়ে কিনে সেটা আপনি ১৫০ টাকা দরে বিক্রয় করে দিলেন।এখানে ৫০ টাকা আপনার লাভ থাকলো।
আবার কোনো ই-কমার্স সাইটের সাথে চুক্তি করে তাদের পন্য বিক্রয়ের জন্য আপলোড দিতে পারেন। লাভ দুইয়ের মধ্যে ভাগ করে নিলেন। এভাবেও আপনি শুধুমাএ আপনার হাতে থাকা মোবাইল দিয়ে অনলাইনে ইনকাম করতে পারেন।
ফ্রিল্যান্সিং করে মোবাইল দিয়ে আয়
ফ্রিল্যান্সিংয়ের এমন কিছু সেক্টর রয়েছে যা মোবাইল দিয়ে করা যায়। যা খুব সহজে যে কেউ করতে পারে। এক্ষেত্রে সুবিধা হল নিজের ইচ্ছামত কাজ করা যায়। মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করতে চাইলে আপনার যেকোনো একটি দক্ষতা থাকা লাগবে। না পারলে ইউটিউবে ভিডিও দেখে শিখে নিতে পারেন। কারন অনেকেই ইউটিউবে বিভিন্ন কোর্স সমূহের ভিডিও আপলোড করে থাকে।
ফ্রিল্যান্সিংয়ের যেসব সেক্টরগুলো আপনি মোবাইল দিয়ে করতে পারবেন তার কয়েকটি সেক্টরের নাম দেওয়া হলো:-
- কনটেন্ট রাইটিং।
- ব্লগিং।
- ই মেইল মার্কেটিং।
- ফেইসবুক মার্কেটিং।
- ইনস্টাগ্রাম মার্কেটিং।
- প্রোডাক্ট ডেসক্রিপশন রাইটিং।
- কপি রাইটিং।
- অনুবাদ ইত্যাদি।
মোবাইল দিয়ে অনলাইনে টাকা ইনকাম করার উপায় গুলো অনেকেই অবগত নয়। তাই ফেইসবুকে অযথা টাইম নষ্ট করে থাকে।মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করার উপায় সমূহ বেশী বেশী শেয়ার করে সবাইকে জানাতে হবে।তাহলে তরুণ প্রজন্ম কিছুটা হলেও বেকারত্বের পাপ থেকে মুক্তি পাবে।প্রাথমিক ভাবে মোবাইল দিয়ে শুরু করলেও ধীরে ধীরে একটি পিসি কিনে ফ্রিল্যান্সিং এর অল সেক্টরে কাজ করতে পারবেন।