সহিহ শুদ্ধভাবে রোজার নিয়ত সহজ আরবি-বাংলা উচ্চারণ শেখার উপায়
সহিহ শুদ্ধভাবে রোজার নিয়ত শেখার উপায়
পবিত্র রমজান মাসে রোজার পালনের নির্দেশ দিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ তা’আলা। প্রাপ্ত বয়স্ক মুসলমান নারী-পুরুষের জন্য রোজার রাখা ফরজ। রোজা রাখার মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর নৈকট্য ও তাকওয়া লাভে ধন্য হয়।
ইফতার ও সাহরির সময়সূচি ২০২৫
রোজা পালনে সাহরি ও ইফতারের যেমন গুরুত্ব রয়েছে তেমনি রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়ার রয়েছে যথেষ্ট গুরুত্ব। সাহরি খাওয়ার পর রোজা নিয়ত করা জরুরি।
রোজার নিয়ত আরবি
نَوَيْتُ اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مِّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْم
আরবি নিয়ত উচ্চারণসহ:
উচ্চারন : নাওয়াইতু আন আছুম্মা গাদাম মিন শাহরি রমাজানাল মুবারাকি ফারদাল্লাকা, ইয়া আল্লাহু ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আনতাস সামিউল আলিম।
আরবিতে রোজার নিয়ত উচ্চারণ অর্থসহ:
অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আগামীকাল পবিত্র রমজানের তোমার পক্ষ থেকে নির্ধারিত ফরজ রোজা রাখার ইচ্ছা পোষণ (নিয়্যত) করলাম। অতএব তুমি আমার পক্ষ থেকে (আমার রোযা তথা পানাহার থেকে বিরত থাকাকে) কবুল কর, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।
রোজার -ভঙ্গের কারণ?
রোজা ভঙ্গের কারণ: প্রথমত ও সাধারণত তিনটি কারণে রোজা ভেঙে যায়। সেগুলো হলো- খাওয়া, পান করা ও স্ত্রী-সম্পর্ক। রোজা পবিত্র রমজানের গুরুত্বপূর্ণ ফরজ বিধান। এ মাসে রোজা রাখার পাশাপাশি পরিপূর্ণ ইবাদতে মশগুল থাকলে, মহান আল্লাহ তার দ্বিগুণ ফিরিয়ে দেন। রমজান মাস গুনাহ মাফের মাসও। তাই রমজানে বেশি বেশি ইবাদত করা উচিত।
- তবে রোজা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট কিছু কারণ রয়েছে। এর বাইরে রোজা ভঙ্গ হয় না।
- সাধারণত তিনটি কারণে রোজা ভেঙে যায়- খাওয়া, পান করা ও স্ত্রী-সম্পর্ক।
- তবে এগুলো ছাড়াও আরো কিছু কারণে রোজা ভেঙে যায়। যেগুলো জেনে রাখা প্রত্যেক রোজাদারের জন্য জরুরি।
১। ভুলে খাওয়া বা পান করার পর রোজা ভেঙে গেছে মনে করে আবার ইচ্ছাকৃতভাবে খাওয়া বা পান করা। (ফাতওয়া শামি, খণ্ড : ০৩, পৃষ্ঠা : ৩৭৫)
২। বিড়ি-সিগারেট বা হুঁকা সেবন করা। (জাওয়াহিরুল ফিকাহ, খণ্ড : ০১, পৃষ্ঠা : ৩৭৮)
৩। কাঁচা চাল, আটার খামির বা একত্রে অনেক লবণ খাওয়া। (ফাতওয়া আল-হিন্দিয়্যা, খণ্ড : ০১, পৃষ্ঠা : ১৯৯)
৪। এমন কোনো বস্তু খাওয়া, যা সাধরণত খাওয়া হয় না। যেমন- কাঠ, লোহা, কাগজ, পাথর, মাটি, কয়লা ইত্যাদি। (ফাতওয়া আল-হিন্দিয়্যা, খণ্ড : ০১, পৃষ্ঠা : ২০২; জাওয়াহিরুল ফিকাহ, খণ্ড : ০১, পৃষ্ঠা : ৩৭৮)
৫। পাথর, কাদামাটি, কঙ্কর, তুলা-সুতা, তৃণলতা, খড়কুটো ও কাগজ গিলে ফেলা। (ফাতাওয়া আল-হিন্দিয়্যা, খণ্ড : ০১, পৃষ্ঠা : ২০৩)
৬। নিজের থুতু হাতে নিয়ে গিলে ফেললে। (ফাতাওয়া আল-হিন্দিয়্যা, খণ্ড : ০১, পৃষ্ঠা : ২০২)
৭। ভুলে স্ত্রী সম্ভোগের পর রোজা ভেঙে গেছে মনে করে, আবার স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস সম্পর্ক করা। (ফাতওয়া শামি, খণ্ড : ০৩, পৃষ্ঠা : ৩৭৫)
৮। কানে বা নাকের ছিদ্র দিয়ে তরল ওষুধ দেওয়া। (ইমদাদুল ফাতাওয়া, খণ্ড : ০২, পৃষ্ঠা : ১২৭)
৯। দাঁত দিয়ে রক্ত বের হলে যদি তা থুতুর চেয়ে পরিমাণে বেশি হয় এবং কণ্ঠনালিতে চলে যায়। (ফাতাওয়া শামি, খণ্ড : ০৩, পৃষ্ঠা : ৩৬৭)
১০। মুখে পান দিয়ে ঘুমিয়ে যাওয়া এবং এ অবস্থায় সুবহে সাদিক করা। (ইমদাদুল ফাতাওয়া, খণ্ড : ০২, পৃষ্ঠা : ১৭২)
১১। হস্তমৈথুন করা। (ফাতাওয়া দারুল উলুম দেওবন্দ, খণ্ড : ০৬, পৃষ্ঠা : ৪১৭)
১২। রোজা স্মরণ থাকা অবস্থায় কুলি কিংবা নাকে পানি দেওয়ার সময় কণ্ঠনালিতে পানি চলে যাওয়া। (আহসানুল ফাতাওয়া, খণ্ড : ০৪, পৃষ্ঠা : ৪২৯)
১৩। কাউকে জোর-জবদস্তি করে পানাহার করানো। (ফাতাওয়া হিন্দিয়্যা, খণ্ড : ০১, পৃষ্ঠা : ২০২)
১৪। রাত মনে করে সুবহে সাদিকের পর সাহরি খাওয়া। (জাওয়াহিরুল ফিকাহ, খণ্ড : ০১, পৃষ্ঠা : ৩৭৮)
১৫। ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করা বা বমি আসার পর তা গিলে ফেলা। (ফাতহুল কাদির, খণ্ড : ০২, পৃষ্ঠা : ৩৩৭)
১৬। সূর্যাস্ত হয়ে গেছে মনে করে ভুলে দিনে ইফতার করা। (বুখারি, হাদিস : ১৯৫৯)
১৭। যদি কেউ রাত ধারণা করে স্ত্রী সহবাসে লিপ্ত হয়ে যায়, অতঃপর সুবহে সাদিকের কথা জানতে পেরে তৎক্ষণাৎ সহবাস থেকে বিরত হয়ে যায়। (ফাতওয়া শামি, খণ্ড : ০৩, পৃষ্ঠা : ৩৭৪)
১৮। বৃষ্টি বা বরফের টুকরো খাদ্যানালির ভেতরে চলে গেলে রোজা ভেঙে যায়। (ফাতাওয়া হিন্দিয়্যা, খণ্ড : ০১, পৃষ্ঠা : ২০৩) রোজার নিয়ত আরবি-বাংলা উচ্চারণ