প্রযুক্তির খবর

ক্লাউড কম্পিউটিং কি? এর সুবিধা-অসুবিধা ও ব্যবহার

ক্লাউড কম্পিউটিং শব্দটি শুনলেই প্রথমেই হয়তো আপনার মাথায় আসতে পারে এটি বোধ হয় মেঘ রিলেটেড কিছু। কিন্তু এখানে Cloud শব্দটি internet এর রূপক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। সেই দিক থেকে ভাবলে যেহেতু data এবং অন্যান্য programs সমূহকে local hard drive বা personal computer এ রেখে, process বা manage করা হয় তাই এটিকে local computing ও বলা যায়। এখন প্রশ্ন হলো, ক্লাউড কম্পিউটিং কি? এটি এমন এক ধরনের সেবা যার মাধ্যমে যেকোন যায়গা থেকে তথ্য ব্যবহার করা যায়। ব্যাপারটি আরো পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারবেন যদি আপনি এই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়েন। এছাড়াও ক্লাউড কম্পিউটিং কিভাবে কাজ করে, এর সুবিধা-অসুবিধা এবং ব্যবহার সম্পর্কেও স্পষ্ট একটা ধারনা পাবেন। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে ক্লাউড কম্পিউটিং কি সেটি জানা যাক।

ক্লাউড কম্পিউটিং কি?

Cloud Computing হলো কম্পিউটার রিসোর্স (যেমন- কম্পিউটার হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার, নেটওয়ার্ক ডিভাইস ইত্যাদি) ব্যবহার করে কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে (বিশেষ করে ইন্টারনেটে) কোনো সার্ভিস বা সেবা প্রদান করা। এখন মনে আসতে পারে এটি কিভাবে কাজ করে? এটি আসলে এমন একধরনের বিশেষ প্রযুক্তি যেখানে যেকোনো file, data, database, programs ইত্যাদি গুলোকে জমা (store) করা হয়। তবে এসব data বা file গুলো local server বা hard drive এ জমা করে রাখার পরিবর্তে internet এর remote server এ রাখা হয়। যার ফলে যে কেউ data ও file গুলো যেকোনো স্থান থেকে access করতে পারেন। কেননা, এই data ও file গুলো ইন্টারনেটের remote server network-এ থাকে।

অর্থাৎ, Cloud computing বলতে বোঝায় বিভিন্ন ধরনের ডাটা এবং প্রোগ্রামসমূহকে নিজ কম্পিউটার হার্ড ড্রাইভে রাখার পরিবর্তে ইন্টারনেটে রেখে ইন্টারনেটের মাধ্যমে manage, process এবং access করার সেবা বা সুবিধা ভোগ করা।

What-is-Cloud-Computing

ক্লাউড কম্পিউটিং এর ব্যবহারঃ

বিভিন্ন ক্ষেত্রে ক্লাউড কম্পিউটিং প্রযুক্তিকে ব্যবহার করা হয়। অতীতে এর ব্যবহারের প্রসার ক্ষুদ্র থাকলে বর্তমানে তা ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ক্লাউড কম্পিউটিং এর ব্যবহারীক ক্ষেত্রে সমূহ নিম্নরূপঃ

  • অনলাইন এপ্লিকেশন গুলো ব্যাকাপ হিসেবে রাখার জন্য ক্লাউড কম্পিউটিং ব্যবহার করা হয়।
  • ওয়েবসাইট এবং ওয়েব এপ্লিকেশন তৈরিতে অধিক পরিমানে ক্লাউড হোস্টিং সার্ভিস ব্যবহার করা হয়।
  • নিজস্ব ফাইল এবং তথ্যসমূহ সংরক্ষনে ক্লাউড কম্পিউটিং ব্যাপক হারে ব্যবহৃত হয়।
  • বিভিন্ন ধরনের এপ্লিকেশন টেস্ট এবং ডিভলোপমেন্টের ক্ষেত্রে ইত্যাদি।

এছাড়াও চিকিৎসা, বৈজ্ঞানিক গবেষনা, যোগাযোগ ইত্যাদির ক্ষেত্রে ক্লাউড কম্পিউটিং-এর ব্যবহার করা হয়।

ক্লাউড কম্পিউটিং এর সুবিধাঃ

Cloud Computing এর অনেক সুবিধা বা ভালো দিক রয়েছে। যেমন-

  • কম খরচে লাইসেন্সকৃত সফটওয়্যার ব্যবহার করা যায়।
  • খুব দ্রুত ডাটা ট্রান্সফার করা যায়।
  • হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার রক্ষনাবেক্ষণ করার ঝামেলা নেই। কারন, শক্তিশালি নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকায় হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের জন্য ব্যবহারকারীকে আলাদা কোন ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না।
  • বিশ্বের যেকোন প্রান্ত হতে ডাটা ব্যবহার করা যায়।
  • প্রয়োজনমত স্টোরেজ বাড়িয়ে নেওয়া যায়।

আরো পড়ুনঃ সেরা ১০টি AI Tools

ক্লাউড কম্পিউটিং এর অসুবিধাঃ

সব কিছুরই যেমন সুবিধা ও অসুবিধা দুইটি দিকই থাকে ক্লাউড কম্পিউটিং এর ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম নয়। ক্লাউড কম্পিউটিং এরও কিছু অসুবিধা রয়েছে। অসুবিধা গুলো নিম্নরূপঃ

  • ডাটা বা এপ্লিকেশন কোনটির উপর এটির ইউজারের নিয়ন্ত্রন থাকে না।
  • ডাটা পাঠানোর পর কিভাবে তা প্রসেস হয় সেটা ইউজার বুঝতেও পারে না।
  • ক্লাউড কম্পিউটিয়ে তথ্যের গোপনীয়তা প্রকাশের সম্ভাবনা থাকে।

ক্লাউড কম্পিউটিং সার্ভিসের প্রকারভেদঃ

ক্লাউড কম্পিউটিং তিন ভাবে সার্ভিস দিয়ে থাকে। যেমন- IaaS, PaaS & SaaS।

  • IaaS (Infrastructure-as-a-Service)

এটি ক্লাউড কম্পিউটিং এর সবচেয়ে ব্যাসিক সার্ভিস। এটি self-service model হিসেবে পরিচিত। এখানে তথ্য রাখার জন্য শুধু যায়গা দেওয়া হয়, তথ্য কিভাবে মেনুফেকচার করে ব্যবহার করবে সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে ব্যবহারকারীর উপর। অর্থাৎ, কিভাবে ব্যবহার করবে সেটা ব্যবহার কারীকে সেটআপ করতে হয়। ওয়েব এপ্লিকেশন ডিভলোপমেন্ট এবং অনলাইন নির্ভর যেকোন এপ্লিকেশন তৈরি করার জন্য এই সার্ভিস ব্যবহার করা হয়।

  • PaaS (Platform-as-a-Service)

এটি সফটওয়্যার ডিভলোপারদের জন্য একটি অন্যতম প্ল্যাটফর্ম। কেননা এই সার্ভিস ব্যবহার করে ডিভলোপারা বিভিন্ন এপ্লিকেশন গুলো খুব সহজেই ডিভলোপিং এবং মেনেজিং করতে পারে। তবে প্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার এবং টুলস গুলো একটি থার্ট পার্টি প্রোভাইডার দিয়ে থাকে। কিন্তু ইনফ্রাস্ট্রাকচার, অপারেটিং সিস্টেম এবং ডাটাবেজ মেনেজমেন্ট টুলস গুলো এই প্ল্যাটফর্ম থেকে দিয়ে দেয়।

  • SaaS (Software-as-a-Service)

ইউজারকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে সফটওয়্যার সার্ভিস প্রদান করাই এই method প্রধান উদ্দেশ্য। যার ফলে এই SaaS ইউজারকে সফটওয়্যার বা এপ্লিকেশন কম্পিউটারে ইনস্টল করে ব্যবহার করতে হয় না। ইন্টারনেট থেকে সরাসরি ব্যবহার করা যায়। একটি SaaS এপ্লিকেশন যেকোনো ব্রাউজার থেকে ব্যবহার করা যায়। Gmail, Yahoo mail এই জলন্ত উদাহরণ।

আশা করি, আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে সামান্য হলেও ক্লাউড কম্পিউটিং সম্পর্কে ধারনা দিতে পেরেছি। ক্লাউড কম্পিউটিং সম্পর্কে যদি আপনার মনে যেকোনো প্রশ্ন থেকে থাকে তবে অবশ্যই আমাদেরকে এই আর্টিকেলের কমেন্ট সেকশনে জানাবেন। প্রযুক্তিভাষার মেম্বারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে আপনার প্রশ্নের দ্রুত ও সঠিক উত্তর দিতে। আজ আর কথা না বাড়াই। কথা হবে অন্য এক আর্টিকেলে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!