গ্যাজেটস এন্ড ডিভাইস

Keyboard কেনার সময় কোন কোন বিষয়গুলি দেখবেন?

Keyboard এ যে যত বেশি দক্ষ, সে তত বেশি এগিয়ে। তাই কিবোর্ড নির্বাচনে সচেতন হতে হবে। বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে কিবোর্ড নির্বাচন করতে হয়। আজকের ব্লগে কিবোর্ড এর বিবেচ্য বিষয় এবং প্রাইস সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করব।

Keyboard কি?

কম্পিউটারের প্রধান ইনপুট ডিভাইস হলো কিবোর্ড। এটি কম্পিউটারে নির্দেশনা দিতে ব্যবহৃত হয়। সাধারণত কিবোর্ডে উপস্থিত অক্ষর, সংখ্যা এবং চিহ্ন ইত্যাদির কী দ্বারা নির্দেশনা দেওয়া হয়। এটি কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার অংশের অধীনে আসে। যার আকৃতি আয়তাকার, আমরা খুব সহজেই দেখতে ও স্পর্শ করতে পারি। বিস্তারিত জানতে পড়ুন কিবোর্ড কি? Keyboard পরিচিতি

আকারের ভিত্তিতে keyboard

আকারের ভিত্তিতে কিবোর্ড ২ রকমের। যথা-

১। পূর্ণ আকারের কিবোর্ডঃ পূর্ণ আকারের কিবোর্ডে সাধারণত থাকে- বর্ণমালা কি, অক্ষর কি, বিরামচিহ্ন কি, সংখ্যা কি এবং বিভিন্ন ফাংশন কি। কিবোর্ডের ডান দিকে নম্বরযুক্ত প্যাড থাকতে পারে। দ্রুত কাজ করার জন্য এই কিবোর্ড গুলো বেশি সুবিধাজনক।

২। মিনি কিবোর্ডঃ এই কিবোর্ড গুলো স্ট্যান্ডার্ড কীবোর্ড গুলোর সমান কাজ করে। তবে আকার এবং ওজনে ছোট। কিছু ফাংশন কি থাকে না এবং ডান পার্শ্বের সংখ্যাযুক্ত প্যাড নেই। মিনি কিবোর্ড গুলো বহন করা সহজ।

আরও পড়ুন-বাজারের সেরা ১০ টি হেডফোন

কাজের ভিত্তিত কিবোর্ড

কারো কারো কাজের চেয়ে স্টাইলিশ কিবোর্ড পছন্দ। কারো আবার তারের জঞ্জাল ভাল লাগে না, পছন্দ ব্লুটুথ। কারো চাই ব্যাকলিটসম্পন্ন কিবোর্ড। সব চাহিদা এবং কাজের ভিত্তিতে কিবোর্ড এর ধরণ নিয়ে আলোচনা করা হল।

১। লেখালেখির জন্য কিবোর্ড

পেশাগত ভাবে যাদের কাজ শুধু লিখালিখি যেমন- সাংবাদিক, কবি, সাহিত্যিক কিংবা সফটওয়্যার ডেভেলপার। তারা পছন্দ করেন সাদাসিধে কিবোর্ড। লেআউটের ক্ষেত্রে কিগুলো একটু ফাঁকা হলে ভালো। এতে লিখতে সুবিধা হয়। লেখকদের কিবোর্ডে সাধারণত ডান দিকের কিগুলোতে বেশি চাপ পরে। অনেকে রাতে লেখেন, তারা সহজে টাইপ করার জন্য ব্যাকলিটসম্পন্ন কিবোর্ড পছন্দ করেন। বাজারে এ ধরনের বেশ কিছু কিবোর্ড রয়েছে।

ডেল কেবি২১৬ এবং লজিটেক কে২৭০-এর মধ্যে ভালো। এফোরটেকেরও এমন শ্রেণির একাধিক কিবোর্ড রয়েছে। দাম ৫০০ থেকে শুরু করে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত। 

২। ডিজাইনিং ও এডিটিং

কিবোর্ডে গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের কাজ সাধারণের তুলনায় একটু বেশি। তাদের শর্টকাটে অনেক কাজ করতে হয়। বেশি ব্যবহৃত হয়- শিফট, কন্ট্রোল, অল্টার, ট্যাব, ক্যাপস লক ইত্যাদি কি। তাই তাদের চাই আরামদায়ক কিবোর্ড। প্রয়োজনীয় কিগুলো বামপাশে অপেক্ষাকৃত বড় আকারের হলে কাজের সুবিধা হয়। ভিডিও এডিটিংয়ের ক্ষেত্রেও সাধারণত একই ধরনের কিবোর্ড দরকার হয়। এরকম কিবোর্ডের দাম ১০০০ টাকা থেকে শুরু।

৩। গেইমিং

গেইমারের প্রয়োজন শক্তিশালী ও ভিন্ন নকশার কিবোর্ড। তাদের চাহিদা সব সময় ‘হেবি ডিউটি’ ডিভাইসে। কিবোর্ড এ থাকতে হবে ম্যাক্রো কি, ইউএসবিতে ফুল কি রোলওভার, উইন লক ও সিইউবি সফটওয়্যার। খেলার সময় গেইমাররা হাত নড়াচড়া করেন বেশি। এ ক্ষেত্রে ব্রাইডেড ফাইবারযুক্ত কিবোর্ড ভাল। গেইমারদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি হয়েছে কোরশেয়ার কে৭০ লাক্স মেকানিক্যাল কি-বোর্ড। যার দাম ১২ হাজার টাকা। এ ছাড়া লজিটেক জি১০০ গেইমিং কম্বো পাওয়া যাচ্ছে  ৩৫০০ টাকায়।

বাজারে যে ধরনের কিবোর্ড পাওয়া যায়

বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের আধুনিক প্রযুক্তি ও ডিজাইনের কিবোর্ড পাওয়া যাচ্ছে। আর তার দামও খুব কম। উল্লেখযোগ্য কিছু কিবোর্ড-

১। মেমব্রেন কীবোর্ড

এটি মূলত বেশ হালকা এবং টাইপিংয়ের সময় খুব কম শব্দ উৎপন্ন করা একটি কিবোর্ড যা মূলত প্লাস্টিক ও বারারের সমন্নয়ে তৈরি। এটির ব্যবহার আমরা ল্যাপটপে দেখতে পাই।

২। মেকানিক্যাল কিবোর্ড

২০১৪ সালে মেকানিক্যাল কিবোর্ডও বাজারে এসেছে। এটি একটি দিক থেকে মেমব্রেন কিবোর্ডের বিপরীত বলা যায়। আর সেটা হলো এটির কি গুলোতে প্রেস করলে বেশ জোড়ালো ভাবে বাউন্স করে। যার ফলে আপনি আপানার হাতে ও কানে একটা অনুভুতি পাবেন।

৩। লেজার কিবোর্ড

একটি ডিভাইস থেকে লেজার রশ্মি যে কোন সমতল স্থানে আলোর মত পরে সেখানে কিবোর্ড উৎপন্ন করে। যা মূলত আলোক সেন্সরের মাধ্যমে কাজ করে। তবে এটি শুধু মাত্র সৌখিন ব্যবহারকারীদের জন্য। যারা নিয়মিত বা পেশাদার কাজ করে থাকেন তাদের জন্য এটি মোটেও কার্যকরী নয়।

কিবোর্ড কেনার সময় কী কী বিষয় বিবেচনা করতে হয়?

বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে কিবোর্ড নির্বাচন করতে হয়। নিম্নে বিবেচ্য বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হল।

১। কিবোর্ডের টাইপঃ

সাধারণত মেমব্রেন, মেকানিক্যাল এবং লেজার সহ বিভিন্ন ধরণে কীবোর্ড বাংলাদেশে পাওয়া যায়। বিভিন্ন ফিজিক্যাল শো-রুম, কম্পিউটার অ্যাক্সেসোরিস দোকানে পাওয়ার পাশাপাশি জনপ্রিয় অনলাইন মার্কেটপ্লেস বিডিস্টল.কমে সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যায়। তবে, টাইপের ভিন্নতা অনুযায়ী কীবোর্ড সমূহ ভিন্ন ভিন্ন টাইপিং অভিজ্ঞতা প্রদান করে। তাই কীবোর্ড কেনার সময় নয়েস লেভেল, বাটনের রেসপন্স টাইম, এবং গ্রিপ বিবেচনা করতে হবে।

২। ব্যবহারঃ

গেমিং, টাইপিং এবং প্রোগ্রামিং সহ সাধারণ কাজে ব্যবহার উপযোগী বিভিন্ন ধরণের কীবোর্ড রয়েছে। বর্তমানে, বাংলাদেশে কম দামে প্রোগ্রামেবল কী সহ গেমিং কীবোর্ড এবং দীর্ঘ টাইপিং সেশনের জন্য এরগনোমিক কীবোর্ড পাওয়া যায়। তাই কীবোর্ড কেনার আগে ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী কীবোর্ড বাছাই করতে হবে।

৩। সংযোগ সুবিধাঃ

তারযুক্ত, ব্লুটুথ এবং ওয়্যারলেস সংযোগ সুবিধা সম্পন্ন করতেব সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যায়। তবে, ওয়্যারড কীবোর্ড ব্যবহারে সাধারণত চলাচলের সীমাবদ্ধ থাকে। অন্যদিকে, ওয়্যারলেস কীবোর্ড সাধারণত ১০ মিটার দূরত্ব থেকে ব্যবহার করা যায় পাশাপাশি ব্যাটারি প্রতিস্থাপন বা চার্জ করার প্রয়োজন হয়ে থাকে। তাই, কীবোর্ড কেনার আগে অবশ্যই সংযোগ সুবিধা যাচাই করতে হবে।

৪। কিবোর্ড লেআউটঃ

গেমিং এবং টাইপিং এর জন্য কিছু কিবোর্ডে অতিরিক্ত কি বা বিশেষ লেআউট থাকে। যা বিশেষ সুবিধা প্রদান করে। কিবোর্ড কেনার ক্ষেত্রে চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী কিবোর্ড এর কি লেআউট যাচাই করতে হবে।

৫। কিবোর্ডের ডিজাইনঃ

দীর্ঘ সময় টাইপিং করার জন্য এরগোনমিক ডিজাইনে তৈরি কিবোর্ড বিবেচনা করতে হবে। যা হাত এবং কব্জির অবস্থান স্বাভাবিক রাখতে সহায়ক হয়ে থাকে। ফলে, দীর্ঘসময় আরামদায়ক ভাবে কীবোর্ড ব্যবহার করা যাবে।

৬। কিবোর্ড সাইজঃ

কীবোর্ড মূলত মিনি সাইজ, কমপ্যাক্ট ডিজাইন এবং পোর্টেবল সহ ফোল্ডেবল অবস্থায় পাওয়া যায়। ডেস্ক কিংবা কম্পিউটার টেবিলে স্থান বিবেচনা ছাড়াও, পোর্টেবল কীবোর্ড বিবেচনা করতে হবে।

৭। ব্যাকলাইটিংঃ

কম-আলোতে কাজ করার ক্ষেত্রে কিংবা গেমিং এর জন্য ব্যাকলিট কীবোর্ড হচ্ছে আদর্শ কিবোর্ড। কিবোর্ড কেনার ক্ষেত্রে সিঙ্গেল কালার বা আরজিবি এর মত ব্যাকলাইটিং সুবিধা সম্পন্ন কীবোর্ড যাচাই করতে হবে।

৮। সামঞ্জস্যতাঃ

কিবোর্ড সাধারণত উইন্ডোজ এবং ম্যাকওএস এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ভাবে ব্যবহার করা যায়। বর্তমানে মোবাইল সাথে ব্যবহার উপযোগী কিবোর্ডও বাজারে পাওয়া যায়। কিবোর্ড কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই ব্যবহৃত ডিভাইসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ভাবে ব্যবহার করা যাবে কিনা তা দেখতে হবে।

৯। বিল্ড কোয়ালিটিঃ

উচ্চ মানের উপকরণে তৈরি এবং শক্তিশালী বিল্ড কোয়ালিটির কিবোর্ড দীর্ঘদিন নিশ্চিন্তে ব্যবহার করা যায়। তাই, কিবোর্ড কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই বিল্ড কোয়ালিটি যাচাই করতে হবে।

Keyboard price-2025 in BD

বাংলাদেশে keyboard দাম ৪০০ টাকা থেকে শুরু। যা মিনি বা পূর্ণ আকারের একটি ইউএসবি কিবোর্ড। এছাড়াও, গেমিং কিবোর্ড, মেকানিক্যাল কিবোর্ড, ওয়্যারলেস কিবোর্ড রয়েছে। কিবোর্ডের দাম কার্যকারিতা, ব্র্যান্ড, গুণমান এবং প্রযুক্তির উপর নির্ভর করে। তবে সাধারণ কাজের জন্য কম দামের কিবোর্ড বেশ ভাল। এগুলো অনেকদিন ভাল সার্ভিস দিয়ে থাকে। আর বাংলাদেশের বাজারে বাংলা কিবোর্ড পাওয়া যায় যার দাম একটু বেশি। কিন্তু যারা বেশি বাংলা টাইপ করেন তাদের জন্য এটি বেশ সুবিধাজনক।

মডেল ও কিবোর্ডের দামঃ

  1. Logitech K120 USB Keyboard- ৭০০ টাকা
  2. A4Tech KRS-83 Wired Multimedia FN Keyboard- ৭৫০ টাকা
  3. A4Tech KRS-82 USB Multimedia Keyboard- ৮০০ টাকা
  4. Sky-Touch G21 Gaming Keyboard and Mouse Comb- ৮৪০ টাকা
  5. IMICE AN-300 RGB Gaming Keyboard & Mouse Combo- ১১০০ টাকা
  6. PC Power K87 Retro Punk Suspension Keyboard- ১১৫০ টাকা
  7. Mini 7-inch Bluetooth Keyboard and Mouse Combo- ১৩৯৯ টাকা
  8. Marvo CM306 3-in-1 Gaming Starter Kit Combo- ১৫৫০ টাকা
  9. A4Tech FG1112 Wireless Keyboard and Mouse Combo- ১৯৫০ টাকা
  10. Mini Wireless Keyboard with Touchpad- ৩২৫০ টাকা

পরিশেষে

কিবোর্ড এর মূল্যগুলো কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে। মূল্য বিক্রেতার উপর নির্ভর করে। আশা করি কিবোর্ড কেনার পূর্বের বিবেচ্য বিষয়গুলো বুঝতে পেরেছেন। এই বিষয়ে আরও কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করুন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!