তথ্য প্রযুক্তি

ফ্রিল্যান্সিং না চাকরি? আপনার ক্যারিয়ারের সেরা পথ কোনটা?

Contents hide

ভূমিকা

এই যুগে দাঁড়িয়ে অনেকেই একটা প্রশ্নে দ্বিধায় পড়ে যান চাকরি করবো, না কি ফ্রিল্যান্সিং? কেউ বলে, চাকরি করলেই মাস শেষে নিশ্চিন্ত বেতন, আবার কেউ বলে, ফ্রিল্যান্সিং করলে নিজের মতো করে কাজ করা যায়, বস নেই, চাপ নেই। বাস্তবে কিন্তু দুইটা পথেই সুবিধা-অসুবিধা আছে। দেশে অনেকেই ভালো ডিগ্রি নিয়েও চাকরী পাচ্ছে না, আবার অনেকে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করে সঠিকভাবে নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে না পেরে হতাশ হচ্ছেন। তাই এই লেখা তাদের জন্য, যারা সত্যি সত্যি চিন্তা করছেন নিজের ক্যারিয়ারের জন্য কোনটা ঠিক হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক!

চাকরি কী (Job)?

সংজ্ঞা ও ব্যাখ্যা:

চাকরি মানে হলো, আপনি একটি কোম্পানি, সংস্থা বা সরকারি প্রতিষ্ঠানে নির্দিষ্ট কাজ করতে যান এবং তার জন্য মাসিক বেতন পান। এটি একটি নির্দিষ্ট সময় ও কাজের দায়িত্বের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা। আপনি যখন চাকরী করেন, তখন প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য এবং নিয়ম অনুযায়ী কাজ করতে হয়।

কর্পোরেট/সরকারি/প্রাইভেট সেক্টরে নিয়মিত কর্মরত অবস্থান:

আপনি যদি একটি কর্পোরেট অফিসে চাকরী করেন, তাহলে আপনাকে ৯টা-৫টা বা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ করতে হবে। আবার সরকারি চাকরিতে নির্দিষ্ট পদ অনুযায়ী কাজ করার সুযোগ থাকে, যেখানে মাসে নির্দিষ্ট বেতন ও অন্যান্য সুবিধা দেওয়া হয়। প্রাইভেট সেক্টরেও কাজের ধরন প্রায় একই রকম, তবে সেখানকার পরিবেশ এবং সুযোগ-সুবিধা কিছুটা ভিন্ন হতে পারে।

নির্দিষ্ট সময়, বেতন ও সুযোগ-সুবিধা:

চাকরিতে আপনার কাজের সময় এবং বেতন নির্ধারিত থাকে। উদাহরণস্বরূপ, আপনি ৯টা-৫টা পর্যন্ত অফিসে থাকবেন এবং মাস শেষে আপনাকে বেতন দেওয়া হবে। কিছু কোম্পানি ছুটি, বোনাস, স্বাস্থ্য সেবা এবং পেনশন সুবিধা দেয়, যা আপনাকে আর্থিক নিরাপত্তা ও সুবিধা প্রদান করে।

চাকরির সুবিধা

  • নির্দিষ্ট আয় (সেলারি):
    চাকরি মানে মাসে নির্দিষ্ট একটা আয়, যা আপনি নিশ্চিন্তে খরচ করতে পারেন। বেতন সময়মতো পাওয়া যায়, তাই পরিকল্পনা করে খরচ করতে সুবিধা হয়।
  • নির্ধারিত সময়সূচি:
    আপনার কাজের সময় আগে থেকেই ঠিক থাকে, যেমন ৯টা-৫টা। এভাবে সময়টা নির্ধারিত থাকলে নিজের দিনচর্যা গুছিয়ে চলতে সুবিধা হয়। সাপ্তাহিক ছুটি থাকলে, আপনার ব্যক্তিগত সময়ও পাওয়া যায়।
  • ছুটি, বোনাস ও অন্যান্য সুবিধা:
    অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি, পেইড লিভ, বোনাস, স্বাস্থ্যসেবা ইত্যাদি সুবিধা থাকে। এসব সুবিধা আপনাকে আর্থিক ও মানসিকভাবে স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে।
  • দীর্ঘমেয়াদী ক্যারিয়ার গ্রোথ ও প্রমোশন:
    চাকরিতে সাধারণত ক্যারিয়ার গ্রোথের সুযোগ থাকে। আপনার কাজের দক্ষতা ও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পদোন্নতির (প্রমোশন) সুযোগ বাড়ে, যা ভবিষ্যতে আপনার আয়ের পরিমাণও বাড়িয়ে দিতে পারে।

চাকরির অসুবিধা

  • সীমিত স্বাধীনতা:

চাকরিতে আপনার কাজের ধরন এবং সময় প্রায়ই অন্যদের দ্বারা নির্ধারিত থাকে। আপনি নিজের মত করে কাজের সময় বা পরিবেশ পরিবর্তন করতে পারেন না, এবং আপনি যে কাজটি করবেন তাও অনেক সময় প্রতিষ্ঠানের নিয়মের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে।

  • অফিস রাজনীতি:

বেশিরভাগ অফিসে কিছু না কিছু রাজনীতি থাকে। এখানে কিছু মানুষ অন্যদের থেকে অগ্রাধিকার পেতে চেষ্টা করে, যা আপনার কর্মজীবনে চাপ তৈরি করতে পারে। কখনো কখনো অফিসের রাজনীতি আপনার ক্যারিয়ার অগ্রগতিতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

  • একঘেয়েমি:

চাকরিতে প্রতিদিন একই কাজ করতে হতে পারে। বিশেষ করে যদি একই ধরনের কাজ করতে করতে বিরক্তি চলে আসে, তখন একঘেয়েমি সমস্যা হতে পারে। অফিসের পরিবেশ এবং কাজের ধরন একঘেয়ে হয়ে উঠতে পারে, যা আপনার উদ্দীপনা কমিয়ে দিতে পারে।

  • চাকরী হারানোর আশঙ্কা:

চাকরির ক্ষেত্রে এক ধরনের অনিশ্চয়তা থাকে। কখনও কখনও কোম্পানি লোক ছাঁটাই করতে পারে বা অর্থনৈতিক সংকটের কারণে চাকরী হারানোর ঝুঁকি থাকে। এই বিষয়টি মানসিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে, কারণ আপনার বেতন এবং কর্মপরিস্থিতি পুরোপুরি প্রতিষ্ঠানের হাতে থাকে।

ফ্রিল্যান্সিং কী? (What is Freelancing)

সংজ্ঞা ও ব্যাখ্যা:
ফ্রিল্যান্সিং হলো এমন একটি কাজের ধরন যেখানে আপনি কোনো প্রতিষ্ঠানের অধীনে না থেকে নিজে কাজ করেন। অর্থাৎ, আপনি নিজের মতো করে কাজ বেছে নিতে পারেন এবং অনলাইনে বিভিন্ন ক্লায়েন্টের জন্য কাজ করেন। ফ্রিল্যান্সিংয়ে আপনার স্বাধীনতা থাকে, কারণ আপনি নিজে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন কোন প্রজেক্টে কাজ করবেন এবং কতটুকু কাজ করবেন।

নিজে কাজ বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা:
ফ্রিল্যান্সিং আপনাকে আপনার কাজ বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা দেয়। আপনি যেকোনো সময়, যেকোনো স্থান থেকে কাজ করতে পারেন। ক্লায়েন্টদের সঙ্গে সরাসরি চুক্তি করে কাজ করতে পারবেন, যেখানে আপনি কাজের ধরন এবং শর্তাবলী নিজেই নির্ধারণ করতে পারেন।

অনলাইন মার্কেটপ্লেস বা নিজস্ব ক্লায়েন্টদের জন্য কাজ:
ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে হলে আপনাকে প্রথমে কাজ খুঁজে নিতে হবে বিভিন্ন অনলাইন মার্কেটপ্লেসে, যেমন: Upwork, Fiverr, Freelancer ইত্যাদি। এছাড়াও আপনি চাইলে সরাসরি নিজের নিজস্ব ক্লায়েন্ট তৈরি করে তাদের জন্য কাজ করতে পারেন। এইভাবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করে আপনি আয় করতে পারবেন এবং ধীরে ধীরে আপনার আয়ের পরিমাণও বাড়াতে পারবেন।

ফ্রিল্যান্সিংয়ের সুবিধা

  1. সময়ের স্বাধীনতা:
    ফ্রিল্যান্সিংয়ের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো আপনি নিজের কাজের সময় ঠিক করতে পারেন। আপনি যে সময় ইচ্ছা করেন, তখন কাজ শুরু করতে পারেন এবং আপনি কাজ শেষ করার সময়ও নিজে ঠিক করতে পারেন।
  2. নিজের পছন্দের প্রজেক্টে কাজ করার সুযোগ:
    আপনি চাইলে আপনার পছন্দের কাজ বেছে নিতে পারেন, কারণ ফ্রিল্যান্সিংয়ে কোনো নির্দিষ্ট কাজের শৃঙ্খলা বা বাধ্যবাধকতা থাকে না। আপনি যে প্রকল্পে আগ্রহী, সেই প্রকল্পেই কাজ করতে পারবেন।
  3. ঘরে বসে আয়:
    ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে আপনি ঘর থেকে কাজ করতে পারেন। এটি বিশেষভাবে সুবিধাজনক, কারণ আপনাকে অফিসে যেতে হয় না বাসায় বসে কাজ করতে পারেন।
  4. একাধিক ইনকাম সোর্স গড়ার সুযোগ:
    ফ্রিল্যান্সিংয়ে আপনি একাধিক ক্লায়েন্ট বা প্রকল্প নিয়ে কাজ করতে পারেন, যা আপনাকে একাধিক আয় করার সুযোগ দেয়। এতে আপনার আয় বাড়ার সম্ভাবনাও থাকে।

ফ্রিল্যান্সিংয়ের অসুবিধা

  • ইনকাম অনিশ্চয়তা:

ফ্রিল্যান্সিংয়ের সবচেয়ে বড় অসুবিধা হলো আয় অনিশ্চিত। কোনো মাসে আপনি অনেক আয় করতে পারেন, আবার পরের মাসে আয়ের পরিমাণ কমও হতে পারে। আয় নির্ভর করে আপনার কাজের ধরণ, ক্লায়েন্ট এবং প্রজেক্টের ওপর।

  • ক্লায়েন্ট পাওয়া ও রেট নির্ধারণের চ্যালেঞ্জ:

অনেক সময় ফ্রিল্যান্সারদের জন্য নতুন ক্লায়েন্ট পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। এছাড়া কাজের রেট নির্ধারণ করাও একটি চ্যালেঞ্জ হতে পারে, কারণ অনেক সময় বাজারে কম দামে কাজ নিতে আগ্রহী ক্লায়েন্টরা আসেন, যা আপনার আয় কমিয়ে দেয়।

  • ডিসিপ্লিন বজায় রাখা কঠিন:

যেহেতু ফ্রিল্যান্সিংয়ে আপনি স্বাধীনভাবে কাজ করেন, আপনাকে নিজের সময় এবং কাজের জন্য ডিসিপ্লিন বজায় রাখতে হয়। অনেক সময় বাড়িতে কাজ করার ফলে অপ্রয়োজনীয় অবকাশের জন্য সময় নষ্ট হতে পারে, যা আপনাকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে অসুবিধা সৃষ্টি করে।

  • সামাজিক নিরাপত্তার অভাব (বোনাস, পেনশন ইত্যাদি নেই):

ফ্রিল্যান্সিংয়ে সাধারণত কোনো সামাজিক নিরাপত্তা থাকে না, যেমন বোনাস, পেনশন, চাকরী হারানোর ক্ষেত্রে প্রভৃতি সুবিধা। আপনাকে নিজের সবকিছু ম্যানেজ করতে হয়, যেমন স্বাস্থ্য বীমা, অবসরকালীন তহবিল ইত্যাদি।

কোনটি আপনার জন্য উপযুক্ত?

বিশ্লেষণ:

  1. আপনি কি রিস্ক নিতে পছন্দ করেন?
    যদি আপনি নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করেন এবং কিছুটা রিস্ক নিতে সক্ষম হন, তাহলে ফ্রিল্যান্সিং আপনার জন্য উপযুক্ত হতে পারে। ফ্রিল্যান্সিংয়ে আয় অনিশ্চিত হলেও, এটি আপনাকে স্বাধীনভাবে কাজ করার এবং নতুন প্রকল্পে কাজ করার সুযোগ দেয়। অন্যদিকে, যদি আপনি রিস্ক নিতে না চান এবং নিয়মিত, স্থিতিশীল আয় চান, তাহলে চাকরি আপনার জন্য উপযুক্ত।
  2. আপনি কি নিজের সময় নিয়ন্ত্রণ করতে চান?
    ফ্রিল্যান্সিংয়ে আপনি আপনার কাজের সময় এবং পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন, যা অনেকের জন্য এক বড় সুবিধা। আপনি যদি নিজের সময়কে খুব বেশি গুরুত্ব দেন এবং নিজের পছন্দ অনুযায়ী কাজ করতে চান, তাহলে ফ্রিল্যান্সিং বেছে নিন। তবে যদি আপনি একটি নির্দিষ্ট সময়সূচী মেনে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন, তাহলে চাকরি আপনার জন্য ভালো হতে পারে।
  3. আপনি কি নিয়মিত বেতনে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন?
    চাকরি করলে আপনি একটি নির্দিষ্ট মাসিক বেতন পাবেন, যা আপনাকে আর্থিকভাবে স্থিতিশীল রাখে। আপনি যদি নিশ্চিত আয় পেতে চান, যেখানে কোনো প্রকার উদ্বেগ বা অনিশ্চয়তা না থাকে, তাহলে চাকরি আপনার জন্য উপযুক্ত। তবে, যদি আপনি আয় সংক্রান্ত অনিশ্চয়তা নিতে চান এবং স্বাধীনভাবে কাজ করতে চান, তাহলে ফ্রিল্যান্সিং আপনার জন্য আদর্শ হতে পারে।

কারা চাকরী বেছে নেবেন?

যারা স্থিরতা, নিয়মিত আয় ও নিরাপত্তা চান:

যারা একজন নির্দিষ্ট কাজের জন্য দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করতে চান এবং নিয়মিত আয় চান, তাদের জন্য চাকরি সবচেয়ে ভালো। চাকরিতে আপনি একটি নির্দিষ্ট পদ, বেতন এবং অফিস সুবিধা পাবেন, যা আপনাকে এক ধরনের নিরাপত্তা দেয়। চাকরী যারা স্থিতিশীলতা ও ভবিষ্যতের জন্য পরিকল্পনা করতে চান, তাদের জন্য উপযুক্ত।

কারা ফ্রিল্যান্সিং বেছে নেবেন?

যারা স্বাধীনতা, বৈচিত্র্যময় কাজ ও স্কিল-ভিত্তিক আয়ে আগ্রহী:

যারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে চান, বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে চান এবং স্কিল অনুযায়ী আয় করতে চান, তাদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং আদর্শ। ফ্রিল্যান্সিংয়ে আপনার কাজের ধরন এবং সময় নির্ধারণ করতে পারেন, যা আপনাকে বৈচিত্র্যময় কাজের সুযোগ দেয়। এই পথে যারা নতুন কিছু শিখতে এবং উন্নতি করতে চায়, তাদের জন্য এটি একটি চমৎকার পেশা হতে পারে।

হাইব্রিড মডেল: চাকরীর পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং করা কি সম্ভব?

বর্তমানে অনেকেই চাকরির পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং করছেন, এবং এটি একটি কার্যকরী হাইব্রিড মডেল হতে পারে। তবে, এর জন্য কিছু পরিকল্পনা ও সচেতনতা প্রয়োজন। আসুন জেনে নেই এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক:

পার্ট-টাইম ফ্রিল্যান্সিং স্ট্র্যাটেজি

  • সময় ব্যবস্থাপনা:

চাকরী ও ফ্রিল্যান্সিং উভয়কে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে হলে, সময়ের সঠিক ব্যবস্থাপনা অপরিহার্য। একটি শক্তিশালী সময়সূচী তৈরি করে, নির্দিষ্ট সময়ে কাজের প্রতি মনোযোগ দিন।

  • কর্মক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন:

 চাকরিতে অর্জিত স্কিলগুলো ফ্রিল্যান্সিং কাজেও কাজে লাগানো যাবে। যেমন, গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, কনটেন্ট রাইটিং, এবং আরও অনেক ক্ষেত্র।

  • প্রথম দিকে ছোট প্রকল্প নেওয়া:

 চাকরি থাকাকালীন বড় প্রকল্প নেওয়ার ঝুঁকি কমাতে, ছোট ছোট প্রকল্প থেকে শুরু করুন। এতে চাপ কম থাকবে এবং আপনি সহজেই সময় ম্যানেজ করতে পারবেন।

চাকরি চলাকালীন স্কিল ডেভেলপমেন্ট ও ফ্রিল্যান্সিং শুরু করা

  1. অনলাইন কোর্স ও টিউটোরিয়াল:
    চাকরির বাইরে সময়ে আপনি স্কিল ডেভেলপমেন্টের জন্য অনলাইন কোর্সে অংশ নিতে পারেন। ফ্রিল্যান্সিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় স্কিল যেমন ডিজাইন, প্রোগ্রামিং, বা মার্কেটিং শিখতে পারেন।
  2. নেটওয়ার্কিং এবং প্রোফাইল তৈরি:
    ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার জন্য আপনার একটি শক্তিশালী অনলাইন প্রোফাইল তৈরি করুন (যেমন Upwork, Fiverr বা Freelancer)। এই প্রোফাইলের মাধ্যমে আপনি প্রকল্পগুলো খুঁজে নিতে পারবেন।
  3. মিনি প্রজেক্টে অভিজ্ঞতা অর্জন:
    আপনি যখন চাকরি করছেন, তখন ছোট ছোট ফ্রিল্যান্স প্রকল্পে কাজ শুরু করুন। এটি আপনার দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি, কিভাবে একটি প্রজেক্ট সফলভাবে শেষ করতে হয় তা শিখতে সাহায্য করবে।

Legal/Conflict Considerations (যদি চাকরিতে কোনো নীতিমালা থাকে)

  1. চাকরির নীতিমালা:
    অনেক প্রতিষ্ঠানেই কাজের সময়ে পার্ট-টাইম ফ্রিল্যান্সিং করার ওপর নিয়মাবলী থাকতে পারে। চাকরির চুক্তিপত্রে এসব নিয়ম স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকে। তাই চাকরী করার সময় এই নীতিমালাগুলোর প্রতি সচেতন থাকতে হবে।
  2. নিষেধাজ্ঞা বা প্রতিদ্বন্দ্বিতা:
    কিছু কোম্পানি নির্দিষ্ট শর্তে ফ্রিল্যান্সিং করতে অনুমতি দেয়, কিন্তু প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকতে পারে। এই বিষয়গুলো বুঝে চলতে হবে।
  3. গোপনীয়তা বজায় রাখা:
    আপনার প্রতিষ্ঠানের তথ্য বা গোপনীয়তা লঙ্ঘন করা থেকে দূরে থাকুন। চাকরির সময়ে কোন কোম্পানির গোপনীয় তথ্য ব্যবহার করে ফ্রিল্যান্সিং করা আইনগতভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

উপসংহার

দিন শেষে সিদ্ধান্তটা নিতে হয় আপনাকেই আপনি কেমন লাইফস্টাইল চান, কতটা ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত, আর আপনার দক্ষতা কোন পথে বেশি কাজে লাগবে। চাকরি করলে নিয়মিত ইনকাম থাকবে, অফিস কালচারে কাজ করার অভ্যাস গড়ে উঠবে, ছুটি-বোনাসের সুবিধাও পাওয়া যাবে। তবে সেখানে নিয়ম-কানুন, অফিস পলিটিক্স, টাইম বাঁধা এসব মানিয়ে চলতে হয়।

আর ফ্রিল্যান্সিং করলে স্বাধীনতা বেশি, নিজে শেখা ও বাড়ার সুযোগও অনেক, তবে এখানে ধৈর্য, সময় ও কনসিসটেন্সি না থাকলে সফলতা আসতে দেরি হয়। তাই সবার জন্য এক উত্তর নেই নিজের বাস্তবতা বুঝে, সময় দিয়ে চিন্তা করলেই মিলবে সঠিক পথ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!