Facebook reels কি? বিস্তারিত জানুন

ফেসবুকের নতুন একটি ফিচার ফেসবুক রিলস। এরই মধ্যে ফেসবুক ইউজারদের মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই ফিচারটি। প্রচুর ফেসবুক ব্যবহারকারী ভিডিও তৈরি করে শেয়ার করতে শুরু করেছেন। এবং দর্শকের সাড়াও পাওয়া যাচ্ছে অনেক। শর্ট ভিডিও কন্টেন্ট শেয়ারের এই ফিচারটি নিয়েই আমাদের আজকের আর্টিকেল।
ফেসবুক রিলস কি?
ফেসবুক রিলস হলো ফেসবুকে Meta এর নতুন সংযোজিত একটি ফিচার। এর মাধ্যমে ৬০ সেকেন্ড ব্যপ্তির শর্ট ভিডিও তৈরি করে শেয়ার করা যায়। সম্প্রতি ১৫০ টি দেশে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের জন্যে উন্মুক্ত করা হয়েছে নতুন এই ফিচারটি। Meta এর কর্ণধার মার্ক জাকারবার্গ ফেসবুক রিলস ফিচার নিয়ে খুবই আশাবাদী। এর ব্যবহাকারীদের জন্যে বিভিন্ন নিত্যনতুন সুবিধা প্রদান করে ফিচারটি আরো আকর্ষণীয় করার পরিকল্পনা হাতে আছে জাকারবার্গ এবং তার কমিটির।
এতদিন কেবল ইন্সটাগ্রামেই রিল ভিডিও এর সুবিধা ছিল। এবার Meta ফেসবুকেও এটি যুক্ত করল। নিউজফিডে স্টোরি, ওয়াচ, রুম অপশনগুলোর পাশাপাশি রিলস অপশনটি পাবেন।
রিলসে ভিডিও তৈরি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। দীর্ঘ ভিডিও দেখার আগ্রহ অনেকেরই থাকেনা। বরং অল্প সময়ে মজার কিছু দেখার দর্শকই বেশি। ফেসবুক রিলস সেই সুযোগই করে দিচ্ছে এর ব্যবহারকারীদের। ছোট ফরম্যাটে দারুন সব ভিডিও এর দেখা মিলছে এই ফিচারে। তাছাড়া যে ধরনের ভিডিও তৈরির ট্রেন্ড একবার চালু হয়ে যাচ্ছে পরবর্তীতে অনেকেই তা অনুসরণ করে আরও মজার কন্টেন্ট নিয়ে হাজির হচ্ছেন।এই ফিচারে টিকটক, লাইকি ইত্যাদির মতো ভিডিও তৈরি করে আপলোড করা যায়। তবে আগে করে রাখা ভিডিওগুলোও শেয়ার দেয়া যায়। আবার ‘ফেসবুক রিলস’ অপশন ব্যবহার করেও ভিডিও তৈরি করতে পারবেন। কোন ভিডিও জনপ্রিয়তা পেলে অর্থাৎ ফলোয়ার্সের পরিমাণ অনেক হলে এর মাধ্যমে ইনকামের সুযোগ রেখেছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।
কি কি সুবিধা আছে ফেসবুক রিলসে?
–ফেসবুক রিলসের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো ইন্সটাগ্রাম রিলসের জন্যে তৈরি করা ভিডিও এখানেও শেয়ার করা যাবে।
– ভিডিও তৈরি করতে আপনাকে কোন নির্দিষ্ট অ্যাপ ইন্সটল করতে হবে না। ফেসবুক অ্যাপ দিয়েই ভিডিও তৈরি এবং আপলোড করা যাবে।
– এন্ড্রয়েড এবং IOS দুই ধরনের ফোনেই এই ফিচার পাওয়া যাচ্ছে।
– ভিডিও ক্রিয়েটররা রিলসে নিজের তৈরি কন্টেন্ট এর পাশাপাশি অন্যের ভিডিও সমন্বয় করেও নতুন ভিডিও বানিয়ে তা আপলোড করতে পারবেন।
– রিলের জন্যে তৈরি ভিডিও ওয়াচ এবং স্টোরি এই ফিচারগুলোতেও শেয়ার করা যাবে।
– ভিডিও ড্রাফট করে রাখার পদ্ধতি আনার পরিকল্পনা রয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের। এর ফলে নতুন কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের অনেকটাই উপকার হবে।
ফেসবুক রিলসের মাধ্যমে আয়ের উপায়
আগে ফেসবুক থেকে কেবল ভিডিও তৈরি করে আয়ের সুযোগ ছিল। তবে তার জন্যে বেশ দীর্ঘ ভিডিও প্রয়োজন হতো। কিন্তু লাইকি বা টিকটকের শর্ট ভিডিও গুলোই বেশি দর্শকদের আকর্ষণ করে। তাই ট্র্বেন্ড অনুসরণ করেই ফেসবুকের এই আয়োজন।
ফেসবুক রিলস থেকে আয়ের জন্যে ব্যানার এবং স্টিকার বিজ্ঞাপন দিয়ে শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেটা কর্তৃপক্ষ। ভিডিও ক্রিয়েটর নিজেই ভিডিওর নিচে কোন কোম্পানির স্টিকার বিজ্ঞাপন প্রচার করে আয় করতে পারবেন। পরীক্ষামূলকভাবে আমেরিকা, কানাডা এবং মেক্সিকোতে মনিটাইজেশন চালু হয়েছে। সফলতা পেলে অন্যান্য দেশেও এক এক করে মনিটাইজেশন চালু করা হবে। পরবর্তীতে ইউটিউব চ্যানেলের মতো সাবস্ক্রিপশন সিস্টেম আনারও পরিকল্পনা আছে মেটার।
এছাড়া ভিডিও ক্রিয়েটররা কোন ব্রান্ডের পণ্যের প্রমোট করেও আয় করতে পারবেন।
এগুলো ছাড়াও ফেসবুক রিলসের মাধ্যমে আয়ের পন্থা নিয়ে মেটার আরও বিস্তর পরিকল্পনা রয়েছে যেগুলো তারা এক এক করে চালু করবেন।
ব্যস্ততার এই যুগে মানুষ সারাদিনই কাজের সমুদ্রে ডুবে থাকে। একটুখানি অবসর পেলে ফেসবুকে ঢু মারে। বিভিন্ন মজার ভিডিও যেমন বিনোদনের মাধ্যম হয় তেমনি ক্লান্তিভাবটাও অনেকটা দূর হয়। কিন্তু দীর্ঘ ভিডিও দেখার আগ্রহ বা সময় কোনটাই থাকেনা অনেকের। অল্প সময়ে দারুন কোন কন্টেন্ট দেখার দর্শকই বেশি। এ কারণে ফেসবুক রিলসের শর্ট ভিডিওগুলো বর্তমানে দারুন উপায় হয়েছে রিফ্রেশমেন্টের জন্যে। ভিডিও ক্রিয়েটররাও হাজির হচ্ছেন তাদের প্রতিভা নিয়ে এবং বিনোদন দিচ্ছেন দর্শকদের।