শিশুদের Internet নিরাপত্তা শেখানোর ১০টি কুইজ গেম
শিশুদের জন্য নিরাপদ Internet কুইজ গেম একটি চমৎকার উপায় যার মাধ্যমে শিশুদের শিক্ষামূলক কন্টেন্ট ও বিনোদন একসাথে উপস্থাপন করতে পারে। এর মাধ্যমে তাঁরা পড়াশুনার পাশাপাশি শিক্ষামূলক কর্মকান্ড শিখতে পারে। তবে এটি নিরাপদ রাখতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে সবার অবগত থাকা প্রয়োজন।
শিশুদের জন্য Internet কুইজ গেম নিরাপদ রাখার উপায়ঃ
১. নিরাপত্তা সেটিংস ও প্রাইভেসি নিয়ন্ত্রণ
বেশিরভাগ অনলাইন (Online) গেমে নিরাপত্তা এবং প্রাইভেসি সেটিংস থাকে। শিশুদের জন্য উপযুক্ত Internet কুইজ গেম বাছাই করার সময়, নিম্নলিখিত বিষয়গুলো নিশ্চিত করা উচিত:
বয়স-উপযোগী কন্টেন্ট: গেমের কন্টেন্ট যেন শিশুর বয়সের সাথে মানানসই হয়।
ফিল্টার এবং কন্ট্রোল: গেমে কন্টেন্ট ফিল্টারিং ও পারেন্টাল কন্ট্রোল থাকলে শিশুরা ক্ষতিকর তথ্য বা গেম থেকে সুরক্ষিত থাকবে।
ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষণ: অনেক গেম শিশুদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে। GDPR অনুযায়ী তথ্য সংগ্রহের সময় অবশ্যই অভিভাবকদের সম্মতি নিতে হবে।
২. কুইজ গেমে সাইবারবুলিং(Cyberbullying) প্রতিরোধ
অনলাইনে (online) গেম খেলার সময় শিশুরা সাইবারবুলিং-এর শিকার হতে পারে। সাইবারবুলিং (Cyberbullying) কি? এটা কিভাবে হয় শিশুদেরকে বুঝাতে হবে। এটি প্রতিরোধ করতে হলে নিম্নলিখিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি:
সতর্কতা ও শিক্ষা: শিশুদেরকে সাইবারবুলিং সম্পর্কিত তথ্য দিয়ে সচেতন করতে হবে এবং তাদেরকে জানাতে হবে কিভাবে এর প্রতিক্রিয়া জানাতে হয়।
রিপোর্টিং ফিচার: অনেক গেম সাইবারবুলিং রিপোর্ট করার অপশন দেয়। এমন গেমস্ শিশুদের খেলতে দিতে হবে যাতে, এইরকম সমস্যাই পড়লে রিপোর্ট এর অপশন থাকে। সমস্ত গেমে এই সুবিধা থাকা গুরুত্বপূর্ণ।
৩. অতিরিক্ত ইন্টারনেট ব্যবহারের প্রভাব
ইন্টারনেট গেম শিশুরা খেলতে পারে, তবে অতিরিক্ত ব্যবহার শিশুর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর অনেক প্রভাব ফেলতে পারে। যেমন:
চোখের সমস্যা: লম্বা সময় স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখের চাপ বৃদ্ধি এবং নানা রকম শারীরিক সমস্যা হতে পারে।
মানসিক চাপ: অনিয়ন্ত্রিত গেম খেলা শিশুর শারীরিক চাপের সাথে সাথে মানসিক কি থেকেও প্রভাব ফেলে।
সমাজবিমুখতা: দীর্ঘ সময় অনলাইনে গেম খেলার কারণে শিশুরা গেমে আকৃষ্ট হয়, ফলে সমাজের মানুষদের সাথে ঠিক ভাবে কথা বলেনা, তাঁদের সাথে মিশতে চায়না, সামাজিক যোগাযোগ কমিয়ে দেয়।
৪. উপযুক্ত কন্টেন্টের নির্বাচন
নিরাপদ ইন্টারনেট কুইজ গেম নির্বাচন করা অভিভাবকদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ কুইজ গেম নির্বাচন করতে বেশ কিছু বিষয় বিবেচনা করতে হবে, যেমন:
শিক্ষামূলক উপাদান: প্রথমে আমাদের দেখতে হবে গেমটি কি শিক্ষামূলক এবং শিশুদের বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে সাহায্য করে কি না?
কন্টেন্টের নিরাপত্তা: শিশুদের কোন ধরণের কন্টেন্ট দেখতে দেওয়া হচ্ছে, এবং ওই কন্টেন্টগুলা শিক্ষামূলক বা বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে সাহায্য করবে কি না, তা নিরীক্ষণ করতে হবে।
৫. প্যারেন্টাল কন্ট্রোল এবং মনিটরিং
অনেক অনলাইন (online) গেমস্ প্ল্যাটফর্ম প্যারেন্টাল কন্ট্রোল ফিচার প্রদান করে। তাঁদের দেখতে হবে গেমগুলাতে কন্ট্রোল ফিচার আছে কি না।
এটির মাধ্যমে অভিভাবকরা:
- গেম খেলার সময়সীমা নির্ধারণ করে দিতে পারবেন।
- অনলাইনে কী ধরণের গেম তাঁরা খেলছে তা পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন।
- গেম চ্যাট এবং বন্ধু সংযুক্তির ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা আরোপ করতে পারবেন।
৬. নিরাপদ প্ল্যাটফর্মগুলো বেছে নিন
শিশুদের জন্য নিরাপদ Internet কুইজ গেম ফ্লাটফর্ম (Safe Internet Quiz Platform) নির্বাচন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গেমের প্ল্যাটফর্ম (Platform) নির্বাচন করার সময় কিছু বিষয় নিশ্চিত করতে হবে, যেমন:
প্ল্যাটফর্মের রিভিউ: গেমটি কি বিশ্বস্ত? এই গেমটা খেলা যাবে কি না বা ভালো কি না, প্লে স্টোর বা অ্যাপ স্টোরের রিভিউ দেখে ধারণা নেয়া যেতে পারে।
প্রাপ্তবয়স্ক কন্টেন্ট ফিল্টার: গেমে প্রাপ্তবয়স্ক কন্টেন্টের জন্য ফিল্টার এবং কন্ট্রোল (control) ব্যবস্থা থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাহলে খুব সহজে বোঝা যাবে কোনটি শিশুদের জন্য আর কোনটি প্রাপ্ত বয়স্কদের।
নিরাপদ Internet কুইজ গেমের উপকারিতা
মনোযোগ উন্নয়ন: বিভিন্ন ধরণের কুইজ শিশুর মনোযোগ বৃদ্ধি করে এবং চিন্তার বিকাশে সহায়তা করে। এইসব গেম শিশুদের চিন্তাভাবনাকে অনেক বৃদ্ধি করে, পড়াশুনায় আরো দক্ষ করে।
সময় ব্যবস্থাপনা: নির্দিষ্ট সময়ে কুইজ শেষ করার চ্যালেঞ্জ (challenge) শিশুর সময় ব্যবস্থাপনার দক্ষতা তৈরি করে। ফলে তাঁরা ব্রেইনকে কাজে লাগাতে পারে এবং ওই সময়ের মধ্যে শেষ করার একটা মানসিকতা সৃষ্টি হয়।
প্রতিযোগিতামূলক মানসিকতা: কুইজ খেলার মাধ্যমে শিশুরা প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব গড়ে তোলে। কারণ এইসব গেম অনেকে অংশগ্রহণ করে. ফলে তাদের মধ্যে একটা প্রতিযোগিতামূলক মানসিকতা ছোট থেকে শুরু হয়।
অনলাইন নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন:
শিশুর অনলাইন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আজই ব্যবস্থা নিন। তাঁদের ছোট থেকেই সময়ানুবর্তিতা, অধ্যবসায় ও রুটিন মাফিক কাজ করার মানসিকতা তৈরি করুন। আপনার শিশুর সুন্দর ভবিষ্যৎ কামনা করি। আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ।
আরো পড়ুন: স্মার্ট ফোনের কিছু টিপস যা আপনার জেনে রাখা প্রয়োজন